থমথমপুর – এন.কে.মণ্ডল (সপ্তম পর্ব )
এন.কে.মণ্ডলের পরিচিতিঃ- কবি এন.কে.মণ্ডল একজন ভারতীয় বাঙ্গালী কবি ও লেখক। তিনি পশ্চিম্বঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার প্রতাপপুর গ্রামে ৫ ই মে ১৯৯৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন।তিনি রুকুনপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এইচ এস সি পাশ করেন। স্থানীয় হাজী এ.কে. খান কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন /
তাই একটু আধটু হাসি হাসি মনে হচ্ছে।ওদিকে ফাহিম আর স্বপ্না গলায় গলায় বিশাল ভাব, যেন লেগে থাকা কাঠালের আঠা।আর রিয়া সুমনের ব্যাপারটা পরিস্কার নয়।
যাইহোক বেলা তখন বারোটার কাছাকাছি । তাই ফাহিম সবাইকে ফোন দিয়ে চলে আসতে বলল যে বাড়ি ফেরার সময় হয়ে গেছে ।গাড়িতে বাড়ি ফেরার পথে একটা ব্যাপার সবাই লক্ষ করছে যে, সন্তু আর নয়নার মধ্যে যেন একটা নিশ্চুপ ব্যাপার । কেউ কাউকে কথা বলতে দেখা যাচ্ছে না। আবার কেমন যেন মনমরা হয়ে গেছে।স্বপ্না জিজ্ঞেস করতেই বলে, ভালো লাগছে না ।
পরে রিয়া আর স্বপ্না জিজ্ঞেস করে ঘটনা বলে। তারপর নয়নাকে উপদেশ দেয় যে তুই সন্তুকে প্রেম কর। আমার মন বলছে তোদের রিলেশনশিপে যাওয়া দরকার।
নয়না : আমিও চাই কিন্তু ও যদি না চাই তাহলে কি করব।
– ওসব কথা ছাড়। আমরা সন্তুকে বুঝিয়ে ম্যানেজ করব।
-ঠিক আছে তোমরা যা ভালো বোঝ তাই কর আমি।আর কি বলব।
এ ব্যাপারটা স্বপ্না ফাহিম কে রাত্রে জানায়। ফাহিম স্বপ্নাকে আশ্বাস দিয়ে বলে যে, সন্তুকে আমি জানাব যে ও কি ভালোবাসে। যদি ভালোবাসে, তাহলে তো কোনো কথায় নেই।
পরেরদিন সন্তুকে জিজ্ঞেস করলে সে উত্তর দেয় যে, আমিও ভালোবাসতে চাই । কিন্তু আমরা তো একজন ভালো বন্ধু।
-ওখানেই তো গোলমাল।নয়না তোকে ভালবাসতে চাইছে আর তা তুই প্রত্যাখ্যান করছিস। আমরা ছাড়া নয়নাকে কে বেশি চেনে বলতো?
-সেতো জানি।
-তাহলে রাজি তাই তো।
-হ্যাঁ।
-এইতো সব মিটমাট আর কোনো ঝামেলা নেই।
বন্ধুদের সবাইকে জানানো হল যে আজ সন্তু এবং নয়নার লাভ এনিভার্সারি । তাই ওদের উয়িস করবে।সেজন্য পাঁচতাঁরা হোটেলে আয়োজন করেছে নাচ,গান ও রোমান্সে ভরপুর জলসা।সারা রাত্রি ধরে চলল নানান অনুষ্ঠানের কর্মসূচি। পরেরদিন সকালে ওদের আর খুশিতে ধরে যায় না।
ফাহিম রাত্রে ফোন দিলো স্বপ্নাকে । বলল, যে আর আমরা খুবজোর দুই একদিন থাকছি।
এইকথা শোনার পর থেকেই স্বপ্নার মন গেলো ভেঙ্গে।অনেক বুঝিয়ে সুজিয়ে একটু পরিস্থিতি আটকানো গেলো। অবশেষে দেখা বাকি আছে সেটা হল থমথমপুর জমিদার বাড়ি । যেটার জন্য ভ্রমণে আসা ।ঠিক হয়ে গেলো। জমিদার বাড়িতে যাওয়ার পথ জঙ্গল দিয়ে সাজানো।সেখানে তেমন লোকজন যায় না। যা যায় বিদেশি। তাই রাস্তাটি বনে ভরপুর।ফাহিমরা সেগুলি মাড়িয়ে গেলেন। দেখা গেলো যে জমিদার বাড়িটি ভেঙ্গে ভেঙ্গে পড়ছে । কেউ ওর খোঁজ খবর নেয় না। কারণ বাড়িটির মালিক ছিলেন অত্যাচারী জমিদার দর্পনারায়ণ চৌধুরী।একপা একপা করে প্রবেশ করল বাড়িটির ভেতরে।সেখানে দেখা যাচ্ছে নানান কারুকার্য করা জিনিসপত্র ও বাড়ির দেওয়ালগুলি। আর ছোট ছোট ঘর রয়েছে। সেগুলিতে থাকত জমিদার বাড়ির মানুষেরা।অবশেষে পৌছালাম একটি ছোট্ট কালকুঠুরিতে যেখানে অত্যাচার করত গরীব প্রজাদের প্রতি।সেখানে কুয়ো আছে এবং তার পাশেই ফাসির মঞ্চ উপস্থিত।সেখানে তাঁরা ফাসি দিত।
থমথমপুর একটি কালো অধ্যায়। জমিদার বাড়ি পুরোপুরি বাবে পরিদর্শন করে ফিরে আসলো। মাসির বাড়ি থেকে এবার বিদায়ের পালা।স্বপ্নাকে অনেক কস্টের সহিত বিদায় জানিয়ে নিজের গ্রামে ফিরে আসলো।
(সমাপ্ত)