বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ গ্রাম বাংলায় কচু অতি পরিচিত নাম । আমাদের দেশে নানা ধরনের কচু পাওয়া যায়। পানি কচু, মুখি কচু, কচুর লতি, ওল কচু প্রভৃতি।  পুষ্টি ও গুণাগুণের দিক থেকে কচু এবং কচুর লতি অনেক উপকারী।

কচুর পাতা এবং কচুর লতিতে  পুষ্টির মোটামুটি সব উপাদানই থাকে। কচুতে আয়রন, মিনারেল এবং সব ধরনের ভিটামিন বিভিন্ন পরিমাণে থাকে। কচুর লতির বিভিন্ন উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করা হল ।

আয়রন : অবাক করার মত বিষয় হলেও কচুর লতিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। আয়রন মানব শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। গর্ভস্থ অবস্থা, খেলোয়াড়, বাড়ন্ত শিশু, কেমোথেরাপি পাচ্ছে- এমন রোগীদের জন্য কচুর লতি ভীষণ উপকারী। এতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম। ক্যালসিয়াম হাড় শক্ত করে ও চুলের ভঙ্গুরতা রোধ করে।

ফাইবার : কচুর লতি একটি ফাইবার সমৃদ্ধ সবজি । কচুর লতিতে ডায়াটারি ফাইবার বা আঁশের পরিমাণ খুব বেশি। এই আঁশ খাবার হজমে সাহায্য করে, দীর্ঘ বছরের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, যেকোনো বড় অপারেশনের পর খাবার হজমে উপকারী পথ্য হিসেবে কাজ করে এটি। এছাড়া যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা আছে তাদের জন্য কচুর লতি একটি উপকারী সবজি ।

ভিটামিন : ভিটামিনগত দিক থেকে বিচার করলে দেখা যায় কচুর লতিতে রয়েছে ভিটামিন ‘সি’ । ভিটামিন সি সংক্রামক রোগ থেকে আমাদের দূরে রাখে, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে করে দ্বিগুণ শক্তিশালী। ভিটামিন ‘সি’ চর্মরোগের বিরুদ্ধে কাজ করে।

কোলেস্টেরল বা চর্বি : অনেকের মধ্যেই মোটা হবার প্রবণতা দেখা যায় । এছাড়া কোলেস্টেরলের সমস্যা ত আছেই । কচুর লতিতে থাকে ভিটামিন ‘বি’ । ভিটামিন ‘বি’ হাত, পা, মাথার উপরিভাগে গরম হয়ে যাওয়া, হাত-পায়ে ঝিঁ ঝিঁ ধরা বা অবশ ভাব- এ সমস্যাগুলো দূর করে। মস্তিষ্কে সুষ্ঠুভাবে রক্ত চলাচলের জন্য ভিটামিন ‘বি’ ভীষণ জরুরি। এতে কোলেস্টেরল বা চর্বি হ্রাস করার ক্ষমতা থাকে। তাই ওজন কমানোর জন্য কচুর লতির ভুমিকা অনেক ।

আয়োডিন ও গ্যাসের সমস্যা : কচুর লতিতে থাকে ফাইবার, যা একদিকে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে এবং খাবার হজমের পর বর্জ্য দেহ থেকে সঠিকভাবে বের হতে সাহায্য করে।ফলে  কচুর লতি খেলে অ্যাসিডিটি ও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা থাকে খুব কম। অন্যদিকে কচুর লতি একটি আয়োডিন সমৃদ্ধ খাদ্য । আয়োডিন দাঁত, হাড় ও চুল মজবুত করে।

ডায়াবেটিস : কচুর লতি রক্তে চিনির মাত্রা বাড়ায় না। তাই ডায়াবেটিসের রোগীরা নিঃসংকোচে খেতে পারেন কচুর লতি। তবে অনেকেই চিংড়ি মাছ দিয়ে কচুর লতি খেতে পছন্দ করেন । চিংড়ি মাছে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে কোলেস্টেরল। তাই যারা হৃদরোগী, ডায়াবেটিস ও উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরলজনিত সমস্যায় আক্রান্ত বা উচ্চ রক্তচাপে (হাই ব্লাড প্রেশারের) ভুগছেন তারা চিংড়ি মাছ শুঁটকি মাছ বর্জন করুন। তবে ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল, হাই ব্লাডপ্রেশার নিয়ন্ত্রণে থাকলে অল্প পরিমাণে চিংড়ি মাছ খেতে পারেন কচুর লতিতে।

অন্যান্য উপকারিতাঃ এছাড়াও গরম কালে শরীর থেকে জল বেরিয়ে যায়। কচুর লতির ডাঁটায় প্রচুর জল থাকে। সে কারণে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় কচুর ডাঁটা বা কচুর লতি রাখা যেতে পারে। কচুর লতিতে থাকে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, ফোলেট, থায়োমিন । ফলে কচুর লতি রক্তের কোলেস্টরলের মাত্রা কমায়।কোলন ক্যান্সার ও ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধে কাজ করে।শিশুদের কচুশাক বেশি করে তেল দিয়ে খাওয়ানো ভালো। এতে রাতকানা রোগের আশঙ্কা কমে।

কিভাবে কচুর লতি খাবেন ? 

কচু বা কচুর লতি খেলে অনেক সময় গলা চুলকায় । এর কারন  কচু এবং কচুর লতিতে অক্সলেট রয়েছে। তাই রান্নার পরও কোনো কোনো ক্ষেত্রে গলা খানিকটা চুলকায়। তাই কচুর তরকারি বা কচুর লতি খাওয়ার সময় কিছুটা লেবুর রস মিশিয়ে নিন। অনেক সময় রান্নার শেষে সামান্য তেতুল গোলা জল মিশিয়ে দিতে পারেন ।

Kajal Paul is one of the Co-Founder and writer at BongDunia. He has previously worked with some publishers and also with some organizations. He has completed Graduation on Political Science from Calcutta University and also has experience in News Media Industry.

Leave A Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.