বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্ক: পৃথিবীব্যাপী দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে অ্যামাজনের রেইনফরেস্ট । তথ্য বলছে অ্যামাজনের রেইনফরেস্ট সমস্ত পৃথিবীর কুড়ি শতাংশ অক্সিজেন যোগান দেয় । যার কারণে অ্যামাজনের জঙ্গলকে বলা হয় পৃথিবীর ফুসফুস ।বর্তমানে ধ্বংস করে চলছে এই জঙ্গল । ভয়ঙ্কর দাবানলে প্রতিদিন গড়পড়তা প্রায় 10,000 বর্গ কিলোমিটার বনভূমি আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে, তৈরি হচ্ছে ক্ষতিকর কার্বন-ডাই-অক্সাইড ।
প্রতিবছর আমাজনের জঙ্গলে দাবানলের কারণে বেশকিছু বনভূমি নষ্ট হয় । কিন্তু আবার সেই স্থান ভরাট হয়ে যায় নতুন গাছপালার জন্য । এবারের ঘটনাটা একটু অন্যরকম । অ্যামাজনে রেইনফরেস্টে এত বড় দাবানল এর আগে কখনোই দেখা যায়নি । প্রথমে মনে করা হচ্ছিল প্রাকৃতিক কারণে এই দাবানল সৃষ্টি হয়েছে । কিন্তু উপগ্রহ চিত্র দেখে পরিবেশ বিজ্ঞানীদের মনে সন্দেহের দানা দেখা দিয়েছে । আদৌ কি এটি প্রাকৃতিক কারণে সৃষ্টি হয়েছে ? নাকি কোন মানুষের ষড়যন্ত্র এটা ? পরিবেশ বিজ্ঞানীদের এই সন্দেহের মলে মুলে কারণও আছে । পরিবেশবিজ্ঞানীরা আতঙ্কিত। আতঙ্কিত গোটা বিশ্ব। চোখের সামনে ঝলসে যাচ্ছে পৃথিবীর ফুসফুস। বিশ্বের সব চেয়ে বড় অরণ্য ক্রমেই ক্ষীণ হয়ে আসছে জ্বলতে জ্বলতে।
যড়যন্ত্রের ইঙ্গিত আগেই মিলে থাকলেও, প্রমাণ ছিল না কিছু। এই দাবানল যে প্রাকৃতিক নয়, ইচ্ছাকৃত ভাবে ঘটানো, তার সপক্ষে কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। কিন্তু এবার স্যাটেলাইটের পাঠানো ছবি ভাল করে খুঁটিয়ে দেখে পরিবেশবিজ্ঞানীরা অনেকটাই নিশ্চিত হলেন এই দাবানল শুধুই প্রাকৃতিক নয় মোটেই। মানুষের হাত ছাড়া এত বড় মাপের দাবানল কার্যত অসম্ভব। উপগ্রহ চিত্রগুলি দেখে রীতিমতো শিহরিত পরিবেশ বিজ্ঞানীরা।
পরিবেশবিজ্ঞানীদের দাবি, চাষযোগ্য জমি তৈরির জন্য এবং খনিজ সম্পদের লোভে নির্বিচারে গাছ নষ্ট করার জন্য আগুন লাগানো হয়েছে। তাতেই সম্ভবত এমন দুর্দশার মুখে দাঁড়িয়ে পৃথিবীর ফুসফুস। তথ্য বলছে, ২০০৩ সালেও এক বার এমনই সংকটজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল আমাজনের দক্ষিণ-পূর্ব এলাকায়। সে সময়ে ব্রাজিলের মাতো গ্রোসো এলাকা ছেয়ে গিয়েছিল প্রবল দূষণ, কালো ধোঁয়ায়। এই বারে ঠিক এমন দশা হয়েছে আমাজন থেকে সাড়ে তিন হাজার কিলোমিটার দূরের শহর সাও পাওলো-তে।
২০০৩ সালের সেই বিপর্যয়ের সময়েও স্যাটেলাইট ছবি খতিয়ে দেখা গিয়েছিল, জঙ্গলের গাছ কেটে, শুকনো করে, পরিকল্পিত ভাবে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে তাতে, যা থেকে এমন দাবানল। সেই বার অবশ্য এতটা ঝলসে যাওয়ার আগেই নিয়ন্ত্রণ করা গিয়েছিল আগুন।