বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় কেন্দ্রীয় সরকার পেঁয়াজ রপ্তানির উপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে । আর তার জেরেই প্রতিবেশি বাংলাদেশে পেঁয়াজের ঝাঁজ রীতিমত চোখে জল এনে দিয়েছে । অথচ চলতি বছর বাংলাদেশে গত বছরের চেয়েও প্রায় তিনগুন পদ্মার ইলিশ পাঠাচ্ছে ভারতে । ফলে বাংলাদেশের মানুষের আক্ষেপ, পদ্মার ইলিশ দিলাম, কিন্তু বিনিময়ে পেলাম না পেঁয়াজ !
চলতি বছর অতি বৃষ্টির জেরে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে পেঁয়াজ চাষে । বিশেষ করে ভারতের সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ উৎপাদনকারী রাজ্য মহারাষ্ট্রে এই বছর প্রচুর পেঁয়াজ জমিতেই বিনষ্ট হয়েছে অতিবৃষ্টির কারনে । এদিকে চাহিদা ও যোগানের মধ্যে বিস্তর ফারাক দেখা দেওয়ায় বাজারে চড়তে শুরু করেছে পেঁয়াজের দাম । ফলে কেন্দ্রীয় সরকার পেঁয়াজ রপ্তানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে ।
অন্য দিকে গত বছর বাংলাদেশ ৫০০ টন ইলিশ ভারতে রপ্তানি করলেও চলতি বছর প্রায় দেড় হাজার টন ইলিশ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ।কিন্তু গত বছরের মত এই বছরও ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করায় অস্বাভাবিক হারে পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে । গত বছর পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায়, হাসিনার সরকারও দেশবাসীকে পরামর্শ দেয়, পেঁয়াজ ছাড়া রান্না করার শিখতে পারলে ভাল ! এই বছরেও সেই একই পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে চলেছে ।
সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়, কাকতালীয়ভাবে ঠিক যেদিন বাংলদেশ থেকে ভারতে ইলিশ এল, সেদিনই পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ হয়ে গেল।কিন্ত ঠিক এই ব্যাপারটা আবেগপ্রবন বাংলাদেশীরা মন থেকে মেনে নিতে পারছে না কিছুতেই । বাংলাদেশী জনগণ ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভারতের বিরুদ্ধে নিজেদের ক্ষোভ উগড়ে দিতে শুরু করেছেন। বলা হচ্ছে, ভারতে ইলিশ পাঠানোর কী দরকার ছিল বাংলাদেশের ? যেখানে ভারত এই নিয়ে পর পর দুবছর পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করল ? তা হলে আর সুসম্পর্ক বজায় রাখার প্রশ্ন আসছে কোথা থেকে ?
বাংলাদেশে ইতিমধ্যে খোলা বাজারে পেঁয়াজের দাম কেজি প্রতি ৮০ থেকে ১০০ টাকায় পৌঁছে গিয়েছে। আগামী কয়েকদিনে পেঁয়াজের দাম সেখানে আকাশছোঁয়া হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ভারত রপ্তানি করবে না জেনে বাংলাদেশ ইতিমধ্যে পেঁয়াজ মজুত করতে শুরু করেছে। তাছাড়া বাংলাদেশ জানিয়েছে, পাকিস্তান ও চিন তাঁদের পেঁয়াজ রপ্তানি করতে রাজি। ফলে এই পেঁয়াজ নিয়েই ভারতের সঙ্গে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের দূরত্ব সৃষ্টির সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে।