পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলার অন্তর্গত কালিম্পং একটি অত্যন্ত মনোরম শৈলশহর। এমন একটা সময় ছিল যখন তিব্বত ও ভুটানের রাজা’রা কালিম্পং শাসন করতেন। পরবর্তীকালে ব্রিটিশ আমলে কালিম্পং’কে একটি পর্যটন কেন্দ্র ও শৈলশহর হিসেবে গড়ে তোলা হয়। গ্রীষ্মের প্রচন্ড দাবদাহ থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য ব্রিটিশ আমলে ইংরেজ সাহেবগণ স্বাস্থ্য উদ্ধার বা ছুটি কাটানোর জন্য ভিড় করতেন এই স্থানে। Kalimpong Tourist Places (Kalimpong Tourism)
ভারতের বিভিন্ন ভ্রমণকেন্দ্র’গুলির মধ্যে শৈলশহর এবং পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে উল্লেখযোগ্য জায়গা করে নিয়েছে কালিম্পং।
অতীতে কালিম্পং ছিল ভারত এবং তিব্বতের মধ্যকার বাণিজ্যদ্বার। পরবর্তীকালে ভারত-চীন যুদ্ধের ফলাফল হিসাবে এই বাণিজ্যপথ বন্ধ হয়ে যায়। ‘কালিম্পং’ কথাটি ঠিক কোথা থেকে এসেছে সেটা সঠিকভাবে নির্ণয় করা যায়নি। তবে লেপচা ভাষায় ‘কালিম্পং’ কথাটি’র অর্থ হল ‘যে শৈলশিরায় আমরা খেলা করি’। একসময় এখানে স্থানীয় আদিবাসী’রা গ্রীষ্মকালীন খেলাধূলা’র আসর বসাতো, সেই কারণেই এমন নামকরন করা হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
যাই হোক, পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে কালিম্পং অত্যন্ত মনোরম স্থান। এই স্থানে গরমকালের আবহাওয়া অত্যন্ত মনোরম এবং আরামদায়ক। এখানে দেখতে পাওয়া যায় নানা ধরণের অর্কিড এর সমাহার।
কী কী দেখবেন?
পাহাড়ি নদী তিস্তার তীরে অবস্থিত শৈলশহর কালিম্পং। এখানকার মূল আকর্ষণ হল কাঞ্চনজঙ্ঘা দর্শন। এছাড়াও কালিম্পং-এ আরও কিছু দর্শনীয় স্থান আছে।
কালিম্পং এর মূল আকর্ষণ’গুলির মধ্যে অন্যতম হল কালিম্পং হস্ত শিল্প। একসময় নেপাল থেকে নেপালি তথা লেপচাভাষী’রা পালিয়ে কালিম্পং-এ এসে আশ্রয় নেয়। পরবর্তীকালে তারা বংশ পরম্পরায় এখানেই বসবাস শুরু করে। তাই এখানকার হস্তশিল্পের মধ্যে অধিকাংশ নেপালি ও ভুটানি সংস্কৃতির ছোঁয়া লক্ষ্য করা যায়। বিভিন্ন স্থান থেকে ভ্রমণার্থী’রা এসে এখানকার হস্তশিল্প দেখে মুগ্ধ হয়ে যায়।
এছাড়া কালিম্পং-এ বেশ কিছু খুব সুন্দর সুন্দর বৌদ্ধ মঠ আছে। বৌদ্ধ মঠ’গুলির শান্ত ও গুরুগম্ভীর পরিবেশের পাশাপাশি সুন্দর কারুকার্য করা স্থাপত্য’গুলি খুবই দৃষ্টিনন্দন। এই মঠ’গুলির মধ্যে সবচেয়ে পুরানো হল ‘থোংসা’ মঠ।
কীভাবে পৌঁছবেন? Kalimpong Tourist Places (Kalimpong Tourism)
- বিমানপথঃ কালিম্পং এর নিকটতম বিমানবন্দর’টি হল শিলিগুড়ির বাগডোগরা বিমানবন্দর। বিভিন্ন ভারতীয় শহরগুলির সাথে বাগডোগরা বিমানবন্দর এর যোগাযোগ আছে, দিল্লি, কলকাতা ও গুয়াহাটি থেকে বিমানপথে সরাসরি বাগডোগরা পৌঁছানো যায়। বিমানবন্দর থেকে অটো বা ট্যাক্সি খুবই সহজলভ্য।
- সড়কপথঃ শিলিগুড়ি, গ্যাংটক, কলকাতা ও দার্জিলিংয়ের সাথে সড়কপথে যুক্ত শৈলশহর শিলিগুড়ি। দার্জিলিং, গ্যাংটক ও শিলিগুড়ি থেকে নিয়মিত কালীম্পং পর্যন্ত বাস চলাচল করে।
- রেলপথঃ কালিম্পং এর নিজস্ব রেলওয়ে ষ্টেশন নেই, এর নিকটতম রেলওয়ে ষ্টেশন হল নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন। এটি উত্তরবঙ্গের একটি বৃহৎ রেলওয়ে স্টেশন এবং কলকাতা ও দিল্লি’র সাথে রেলপথে এর সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে। ষ্টেশনের বাইরে থাকা ট্যাক্সি’গুলি আপনাকে গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে সাহায্য করবে।