লাল শাক একটি অতিপরিচিত শাক । প্রায় সারা বছরই এই শাক পাওয়া যায় । বাড়ির পাশে একটু ফাঁকা জমি থাকলেই খুব সহজে কয়েকটা দানা ছড়িয়ে এই অত্যন্ত উপকারী লাল শাকের বাগান তৈরি করা যায় । আবার বাজারে 2 থেকে 5 টাকা দিয়ে এক আটি লাল শাক যখন তখন কিনতে পাওয়া যায় ।
অথচ এই লালচে গোলাপী লাল শাক খেলে কি কি উপকার পাওয়া যায়, জানতে পারলে তাজ্জব বনে যেতে হবে । লাল শাক হিমোগ্লোবিনে পরিপূর্ণ । আমাদের দেশে অতি পরিচিত যে শাক পাওয়া যায়, তার মধ্যে লাল শাক আমাদের শরীরে সবচেয়ে বেশি রক্ত তৈরি করতে সাহায্য করে ।
সবচেয়ে বড় কথা, খাবার চিবাতে পারে এমন শিশুদের জন্য লাল শাক ভীষণ ভীষণ উপকারী । কারণ শিশুদের বাড়ন্ত শরীরের জন্য দরকার হয় আয়রন, আয়োডিনের মত উপাদান । আর লাল শাক আয়রনের উৎকৃষ্ট উৎস । সুতরাং শিশুদের আস্তে আস্তে পেটের এবং হজম শক্তি বুঝে লাল শাক এর পরিমান বাড়ালে খুব উপকার হয় ।
শুধু বাড়ন্ত শিশু নয়, পূর্ণ বয়স্কদের জন্য লাল শাক অত্যন্ত উপকারী এবং একটি অত্যন্ত উপাদেয় খাদ্য । লাল শাক অ্যানিমিয়া অর্থাৎ যাদের শরীরে রক্তের পরিমাণ কম। নিম্ন রক্তচাপ অর্থাৎ লো ব্লাড প্রেসার, শারীরিক দুর্বলতা, ক্রমশ দৈহিক শক্তি কমে যাওয়া, ডায়াবেটিস রোগী, আর্থ্রাইটিসের সমস্যায় লাল শাক অত্যন্ত উপকারী ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।
গর্ভবতী অবস্থা থেকে শিশুর জন্ম ও মাতৃদুগ্ধ পান পর্যন্ত লাল শাক ভীষণ জরুরী এবং দরকারি খাদ্য । তবে গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে একটু লক্ষ্য রাখতে হবে গ্যাস বা এসিডিটির সমস্যা না হয় ।
এবার প্রশ্ন হল কোন সময় লাল শাক খেলে বেশি উপকার হয় ? যেহেতু লাল শাক থেকে একটা এসিডিটির সমস্যা হতে পারে, সেই জন্য দুপুর বেলায় লাল শাক খাওয়াটা সবচেয়ে ভালো । কারণ দুপুর বেলায় খাদ্য তালিকায় লাল শাক রাখলে সহজে হজম হয় । আর এমনিতেই কথায় আছে শুধু লাল শাক কেন, যে কোন শাকই রাত্রে না খাওয়াই বাঞ্ছনীয় ।
একটু বয়স হয়ে গেলে অথবা মনোপজ হওয়া নারীদের, হার্ট দুর্বল হয়ে আসে । বয়সের পাশাপাশি ত্বক ও চুলে আসে একটা বৈরী ভাব । পাশাপাশি নখ ভঙ্গুর হতে থাকে । এর কারণ হচ্ছে শরীরে আয়রন ও ক্যালসিয়াম এর ঘাটতি । এই অবস্থায় লাল শাক হতে পারে উপকারী বন্ধু । কারণ এই শাক দেহে রক্ত বাড়াবে । পাশাপাশি ত্বক, চুল ও নখের পুষ্টি যোগাবে । সুতরাং বলা যেতেই পারে শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত সকলেরই লাল শাক অত্যন্ত উপকারী ।