রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প

[West Bengal Health Scheme]

 

Swasthya Sathi (West Bengal Health Scheme) স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প সম্পর্কে‌ বিস্তারিত আলোচনায় পৌঁছানোর আগে আমাদের সকলের যেটি জানা উচিত তা হলো,

স্বাস্থ্য কী?

বেশীরভাগ মানুষই সাধারণত মনে করে থাকেন, স্বাস্থ্য আমাদের শারীরিক গুণাবলীর প্রকাশ মাত্র। কিন্তু তাদের এই ধারণাটি সম্পূর্ণভাবে সঠিক নয়। কারণ স্বাস্থ্য কেবল শারীরিক দোষ-গুণ এর আরেক নাম নয়, শরীরের পাশাপাশি মানসিক অবস্থা’ও স্বাস্থ্যের অন্তর্গত।

এবার কথা হল,

সুস্বাস্থ্য কী?

প্রকৃতপক্ষে একজন মানুষকে তখনই সুস্বাস্থ্যের অধিকারী বলা যেতে পারে যখন দেখা যাবে যে, ব্যক্তি শারীরিক এবং মানসিক ভাবে সম্পূর্ণ প্রকার সুস্থ। এখানে শারীরিক সুস্থতা নিয়ে সকলেই যথেষ্ট পরিমাণে অবগত হলেও মানসিক সুস্থতার বিষয়টি কিন্তু প্রত্যেকের কাছে পরিষ্কার নয়। এক্ষেত্রে আপনাদেরকে বোঝানোর সবচাইতে সহজ মাধ্যম হল, আপনাদের পারিপার্শ্বিক মানুষ-জন। আপনি নিজেই কিঞ্চিত আলাপের মধ্য দিয়ে বুঝে নিতে পারেন আপনার পাশের মানুষটি মানসিকভাবে সুস্থ কিনা, তা সে আপনার যেকোনো আত্মীয়, প্রতিবেশী কিংবা বন্ধু হোকনা কেনো। আবার অনেকসময় এমনও হতে পারে যে, মানসিক অসুস্থতার শিকার আপনি নিজেই।

অল্পেতে প্রচণ্ড পরিমাণে রেগে যাওয়া, যেকোনো বিষয়ে কারণ ছাড়া সন্দেহ করা, উদাসীনতা, হতাশা, এই লক্ষণগুলিই সাধারণত যেকোনো মানুষের মানসিক অসুস্থতা প্রমাণ করে।

স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প কী? (Swasthya Sathi)

পশ্চিমবঙ্গের সকল সাধারণ মানুষের সুস্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রেখে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী কতৃক গৃহীত একটি মেডিক্লেম পলিসি হল ‘স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প’। এটি মূলত কেন্দ্র সরকারের RSBY প্রকল্পের রূপান্তর। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হল, রাজ্যের সাধারণ মানুষের কাছে কম খরচে আধুনিক চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া।

স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের সুবিধা :-

  • ‘স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প’-এর মাধ্যমে প্রত্যেক পরিবার বীমার আওতায় থাকার সুযোগ পাবে।
  • স্বাস্থ্য সাথী পরিবারের নিয়ম অনুযায়ী প্রতি পরিবার ১.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত প্রাথমিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা পাবে।
  • যদি প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত যেকোনো পরিবারের কোনও ব্যক্তি বিশেষ কোনও জটিল রোগে অসুস্থ হয়ে পড়েন, তবে চিকিৎসার জন্য সরকারের তরফ থেকে ৩.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত স্বাস্থ্য সুরক্ষা পাওয়া যাবে।
  • প্রকল্পের আওতায় থাকা ব্যক্তি অসুস্থকালীন বিনামূল্যে ঔষধ, খাবার, পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা গ্রহণ করতে পারবে।
  • রোগীর ভর্তির আগে এবং ছাড়া পাওয়ার পরবর্তী পাঁচ দিনের ঔষধ বিনামূল্যে পাবে এবং সরকার থেকে যাতায়াত খরচা বাবদ অতিরিক্ত ২০০ টাকা পাবে।

স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের জন্য বাধ্যতামূলক নিয়মাবলী :-

  • ‘স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প’ এর সুবিধা নিতে গেলে রোগীর পরিবারে অবশ্যই থাকতে হবে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড। সঠিক পদ্ধতি এবং নিয়মাবলী অবলম্বনের মাধ্যমে সরকারের কাছে আবেদন করলেই পাওয়া যাবে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড।
  • বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা নিতে হলে রোগীকে অবশ্যই কোনও সরকারি হাসপাতালে কিংবা বেসরকারি হাসপাতাল এবং নার্সিং‌ হোম (যেগুলি ‘স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প’ এর আওতাভুক্ত) এ ভর্তি হতে হবে।

এবিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে নীচে দেওয়া লিংক-এ ক্লিক করুন,

https://swasthyasathi.gov.in/ Swasthya Sathi (West Bengal Health Scheme)

স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পে যুক্ত হওয়ার জন্য যোগ্যতা :-

‘স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প’ এর সুবিধা ভোগ করতে হলে ব্যাক্তি’কে অবশ্যই নীচের যেকোনো একটি’র অন্তর্ভুক্ত হতে হবে –

  • নিরাপত্তা কর্মী (গ্রিন ভলান্টিয়ার্স, সিভিল ডিফেন্স ভলান্টিয়ার্স, সিভিক ভলান্টিয়ার্স, ভিলেজ ভলান্টিয়ার্স), হোমগার্ড, আইসিডিএস কর্মী ও সহকারী।
  • শ্রমিক বা দিন-মজুর, পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের স্বনির্ভর গোষ্ঠীভুক্ত, পুরসভা এলাকায় স্বনির্ভর গোষ্ঠীভুক্ত, আশা কর্মী, অনারারি হেলথ ওয়ার্কার্স।
  • স্বামী, স্ত্রী, পিতা-মাতা ও শ্বশুর-শাশুড়ি, আঠেরো বছর পর্যন্ত প্রত্যেক ছেলে-মেয়ে।
  • ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের সকল সদস্য ও তাঁদের পরিবার, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আংশিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী।

কীভাবে আবেদন করবেন?

স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের আওতায় সুবিধা পেতে গেলে রোগীর পরিবারে অবশ্যই থাকতে হবে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড। সঠিক পদ্ধতি ও নিয়মাবলী অবলম্বন করে আবেদন করলে সহজেই পেয়ে যাবেন আপনার স্বাস্থ্য সাথী কার্ড।

এক্ষেত্রে জেলার ব্লকস্তরের বাসিন্দা’দেরকে বিডিও অফিসে এবং শহরের বাসিন্দা’দেরকে পুরসভায় যোগাযোগ করতে হবে।

ব্যক্তি চাইলে ‘স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প’ এর টোল-ফ্রি নম্বর ১৮০০-৩৪৫-৫৩৮৪ এ অথবা উপরে দেওয়া লিংকে গিয়ে বিস্তারিত জানতে পারেন।

কেনো স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত হবেন?

“শরীরে প্রাণ থাকলে তার পাশাপাশি বিভিন্ন রোগ-ব্যাধি’ও থাকবে।”

যত দিন এগোচ্ছে, মানুষের সুবিধার্থে আরও বহু নতুন নতুন আবিষ্কার করে চলেছে বিজ্ঞান। কিন্তু বিজ্ঞানের সকল আবিষ্কার মানুষের স্বাস্থ্যের পক্ষে সুখকর হয়না। উদাহরণ হিসাবে মোবাইল ফোন-এর কথা বলা যাক। যত দিন এগোচ্ছে, মোবাইল এর নেটওয়ার্কিং সিস্টেম 3G থেকে 4G, 4G থেকে 5G এভাবে বেড়েই চলেছে; কিন্তু এর ফলে পরিবেশে যে প্রকার তেজস্ক্রিয় বিকিরণ ঘটছে, তা মানব সমাজ থেকে শুরু করে সকল জীবের শারীরিক ক্ষতি করে চলেছে। এছাড়া এয়ার কন্ডিশনার, রেফ্রিজারেটর, মোটর গাড়ি আরও বহু দৃষ্টান্ত আছে যা দিনের পর দিন জীব সমাজের ক্ষতি করে চলেছে।

একইসাথে অপরদিকে বেড়ে চলেছে চিকিৎসার খরচ, যা সাধারণ মানুষের পক্ষে খুবই দুঃসাধ্য হয়ে পড়ছে। একটি সাধারণ আর্থিকভাবে অসচ্ছল পরিবারে আজ হঠাৎ করে যদি কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ে, তখনই দুশ্চিন্তায় পড়তে হয় পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের’কে।

সুতরাং, এক্ষেত্রে সমাজের সাধারণ মানুষের জন্য খুবই সুখকর ‘স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প’। এই প্রকল্পের মাধ্যমে অনেকটা পরিমাণেই সাহায্য পাচ্ছে রাজ্যের সাধারণ পরিবার’গুলি। Swasthya Sathi (West Bengal Health Scheme)

Atanu Chakraborty is a content and news writer at BongDunia. He has completed his Bachelor Degree on Mass Communication from Rabindra Bharati University. He has worked with mainstream media, in the capacity of a reporter and copywriter.

Leave A Reply