চিঠি গল্প
লেখক এসকেএইচ সৌরভ হালদার
পর্ব ২
রুপায়ন যে গাড়ি করে যাচ্ছিল, সে গাড়িতে কিছু লোক বসেছিল ।লোক গুলো দেখতে ছিল গুন্ডাদের মত, আমি ভাবলাম রুপায়ন ওই নারী পাচারের সাথে এর সাথে যুক্ত নয় তো।সেদিন রুপায়ন বাড়ি থেকে বের হয়ে মেইন রোডের পাশে গাড়িতে করে যাচ্ছিল আমি তখন পিছু নিলাম।
ওই গাড়িটা এক সময় চলতে চলতে হঠাৎ একটা বাজারে থেমে গেল।দেখলাম ওরা বাজারের ভিতরে ঢুকলো । তারপর কী জানি কোথায় নাকি উধাও হয়ে গেল। কারণ বাজারে তখন প্রচণ্ড ভিড় ছিল । এইজন্য ভিড়ের ভেতর কোথায় যেন হারিয়ে গেল।
আমি ক্লান্ত হয়ে গেলাম ওদের পিছু নিতে নিতে এবং আর কোন এক সময় বাড়ি চলে আসলাম। আমি বাড়ি ফেরার পর যখন রূপায়ন বাড়ি ফিরল, তখন ভাবছি ওকে জিজ্ঞেস করবো ।কিন্তু জিজ্ঞেস করলে তাহলে আবার কি মনে করবে ভেবে একটু উপমা দিয়ে জিজ্ঞাসা করি। ও যখন আসলো তখন আমি সোফায় বসে টিভি দেখছিলাম ।ও হাত মুখ ধুয়ে সুপার কাছে আসলো এবং এসে বলল,
-কি খেলা দেখছিস ?
-হুম ।
-কত রান করল ?
-এইতো দুই উইকেটে একশত বিশ ।
এসব কথা বলতে বলতে আমি বললাম, -রুপায়ন ওই যে আমাদের পাশের বাড়ি লীলা থাকে না। ওর মা এসেছিল আমাদের বাড়িতে এমনি ঘুরতে। তাই দুইজন চা খেতে খেতে আমাকে বলছিল, তোর বন্ধু ওই রূপায়ণ কোথায় যায় বলতো ? ওই মেইন রোডে একটা গাড়ী এসে দাঁড়ায় এবং তখন চলে যায় ওই গাড়িতে করে।
রুপায়ন আমার দিকে উদাস হয়ে তাকিয়ে বলল, কথাটি লীলার মার না তোর ?
আসলে আমি বেশিক্ষণ মিথ্যা বলে চুপ করে বসে থাকতে পারেনি। তাই আমি বলে উঠলাম, -হ্যাঁ কথাটি আমার ।
রুপায়ন আরো বললো, তুই আমার আজ পিছু নিয়েছিলে ।
আমি বলে উঠলাম, হ্যাঁ । পিছু নেওয়ার কারণ ছিল । তোর প্রতিদিন চিঠি আসে । চিঠি আসামাত্রই দ্রুত চলে যাস ।কোথায় যেন , কেন যাস? সেটা আমাকে বলিস না। এখনো চিঠি আসে না, আসে শুধু গাড়ি । এখন তুই গাড়ি আসা মাত্রই তুই চলে যাস।
রুপায়ন বললো, তুই আমাকে বিশ্বাস করিস না ?
– দোস্ত সেটা না । এখন যে দিনকাল, আবার দিন নেই সময় নেই শুধু টেলিভিশনে নারীপাচার মদ-গাঁজা ইত্যাদি খবর দেখাচ্ছে।খারাপ লোকেদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এখনো পুলিশ ও তাদের খুঁজে বের করতে পারেনি যারা এসব করছে।ওই লোক গুলো দেখে আমার ঠিক মনে হয়নি। তাই বলছিলাম।
রুপায়ন কোন কথা না বলে উপরে ঘরে চলে গেল এবং এই নিয়ে আমাদের দুজনের মাঝে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হলো।