বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ করোনা পরিস্থিতিতে এই মুহূর্তে হঠাৎ করে অসুস্থ হলে চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়া বেশ কিছুটা দুরহ হয়ে দাঁড়িয়েছে । অথচ করোনা সংক্রমণ না হলেও সাধারন শারীরিক অসুস্থতা যে কোন সময় দেখা দিতে পারে । বিশেষ করে অনেকেরই নিম্ন রক্তচাপের সমস্যা আছে। উচ্চ রক্তচাপের মতো এটিও শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকারক।ব্লাড প্রেসার যদি হঠাৎ করে নেমে যায় তাহলে কিছু ঘরোয়া উপায় জানা থাকলে এই সমস্যা থেকে নিরাময় পাওয়া সম্ভব ।
আমাদের মধ্যে যাদের নিম্ন রক্তচাপের সমস্যা আছে তাদের সব সময় একটু সাবধানে থাকতে হয় । নিম্ন রক্তচাপ অর্থাৎ লো ব্লাড প্রেসার তখনই হয়, যখন শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে রক্ত ঠিকমতো পৌঁছতে পারে না। পাশাপাশি দুশ্চিন্তা, ভয় ও স্নায়ুর দুর্বলতা থেকেও এই সমস্যা দেখা দেয়। শরীরে ঠিক মতো রক্ত সরবরাহ না হলে স্ট্রোক, হৃদরোগ ও কিডনি জটিলতার মতো নানা সমস্যা দেখা দেয়।
বিজ্ঞানমতে মানুষের স্বাভাবিক রক্তচাপ হওয়া উচিত ১২০/৮০। যদি কোনও ব্যক্তির রক্তচাপ ৯০/৬০ বা তার কম থাকে, তখন তাকে লো ব্লাড প্রেসার হিসেবে গণ্য করা হয়। রক্ত পরীক্ষা, রেডিওলজিক স্টাডিজ ও কার্ডিয়াক টেস্ট এর মাধ্যমে নিম্ন রক্তচাপের সমস্যাকে নির্ধারণ করে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করলেই এ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। ব্লাড প্রেশার নেমে গেলে অনেকসময় মাথা ঘোরানোর পাশাপাশি শ্বাস প্রশ্বাসের কষ্ট, দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসা, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, অতিরিক্ত ঘাম, অবসাদ, বমি বমি ভাব, ঘুম ঘুম ভাব, কাজকর্মে অনীহা ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়।
আসুন জেনে নিই নিম্ন রক্তচাপ বা ব্লাড প্রেসার নিচে নেমে গেলে ঘরোয়াভাবে কি করতে হবে ?
১) লবণ জলঃ লবণ জল পান করুন। ওয়ার্ল্ড হেল্থ অর্গানাইজেশন এর একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, সুস্থ থাকতে প্রতিদিনের ডায়েটে অবশ্যই ১ চা চামচ পরিমাণ লবণ থাকা প্রয়োজন। এই লবণ শরীরের কার্যকারিতাকে ঠিক রাখতে এবং হাইপোটেনশন প্রতিরোধের ক্ষেত্রে খুবই উপকারী। সুতরাং যখনই নিম্ন রক্তচাপের সমস্যা দেখা দেবে তখনই এক গ্লাস জলে ১ থেকে ২ চা চামচ খাবার লবণ মিশিয়ে পান করুন। এটি রক্তচাপকে স্থিতিশীল রাখতে সহায়তা করবে।
২) তুলসি পাতা : রোজ সকালে ৫-৬টি করে তুলসি পাতা চিবিয়ে খান বা ১ টেবিল চামচ তুলসি পাতার রস খান। এতে থাকা উচ্চমাত্রায় পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম এবং ভিটামিন সি রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। এছাড়াও এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং কোলেস্টেরলের মাত্রাকে কমাতে সাহায্য করে।
৩) কফি : নিম্ন রক্তচাপের সমস্যা দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে এক কাপ কফি পান করুন। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আনতে সাহায্য করবে। তবে কফি অল্প সময়ের জন্যই আপনার রক্তচাপকে স্থিতিশীল করতে সহায়তা করে।
৪) পরিমিত জল : প্রতিদিন তিন থেকে চার লিটার জল পান করুন। এটি শরীরের টক্সিন বের করে শারীরিক কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে এবং শরীরকে সতেজ রাখতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সহায়তা করে।
৫) বাদাম : নিম্ন রক্তচাপ ঠিক রাখতে সারারাত ৮-১০টি বাদাম জলে ভিজিয়ে রেখে দিন। সকালে খোসা ছাড়িয়ে তা আখের গুড়ের সঙ্গে মিশিয়ে খেয়ে নিন। বাদামে থাকা ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড নিম্ন রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
৫) সজনে শাক : সজনে শাকে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় এটি উচ্চ রক্তচাপ কমানোর পাশাপাশি নিম্ন রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও সহায়তা করে। এ কারণে সপ্তাহে অন্তত ২ দিন সজনে শাক খেতে পারেন।
৬) বিটের রস : বিটে থাকে উচ্চমাত্রার নাইট্রেট রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। যারা নিম্ন রক্তচাপে ভুগছেন তারা দিনে অন্তত দুই গ্লাস বিটের রস পান করতে পারেন। এটি রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখতে খুবই কার্যকর। সূত্র : বোল্ড স্কাই