বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্ক: চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে প্রথম অবতরণের স্বপ্ন পূরণ হল না ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ISRO-র! কিন্তু, তাই বলে চন্দ্রাভিযান’কে মোটেই ব্যর্থ বলছেন না কেউই। মনে বিষাদের দাগ থাকলেও, হাসি ফুটেছে ISRO-র বিজ্ঞানীদের মুখে। কারণ, ইতিমধ্যেই চাঁদ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাঠাতে শুরু করেছে ‘চন্দ্রযান-২’। বেঙ্গালুরুর শ্রীহরিকোটায় ইসরোর কেন্দ্রে জমা হওয়া সেই সমস্ত তথ্য চাঁদ নিয়ে বিজ্ঞানীদের গবেষণার পথ সুগম করে দেবে।

চাঁদের মাটি ছোঁয়ার মাত্র ২.১ কিমি উচ্চতায় বিজ্ঞানীদের সাথে যোগাযোগ হারিয়ে ফেলে ‘চন্দ্রযান-২’ এর ল্যান্ডার ‘বিক্রম’। কথা ছিল, চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ভোর হওয়ার আগেই খুলে যাবে ‘বিক্রম’ এর র‌্যাম্প, তার ওপর দিয়ে গড়িয়ে নামবে প্রজ্ঞান। এরপর ভোরের আলো ফুটলে সেই আলোর সাহায্যে জেগে উঠবে ‘প্রজ্ঞান’। সোলার প্যানেল এর সাহায্যে ভোর ৫টা ২৯ থেকে প্রতি মিনিটে ৬০ সেন্টিমিটার করে এগোবে। এরপরেই শুরু হবে পর্যবেক্ষণ।

মূলত, লক্ষ্যের এতো কাছে পৌঁছেও স্বপ্ন পূরণ না হওয়াই মানসিক আঘাত পেয়েছেন ISRO বিজ্ঞানীরা। কিন্তু সেই আঘাতে মলম লাগাচ্ছে ‘চন্দ্রযান-২’ এর অরবিটার। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, পৃথিবী থেকে যে অবস্থায় সেটিকে প্রেরণ করা হয়েছিল, এখনও সেভাবেই চাঁদের কক্ষপথে প্রদক্ষিন করছে সে। বরং আরও একটি সুখবর পেলেন বিজ্ঞানীরা।

চাঁদে পাঠানোর সময় বিজ্ঞানীরা অনুমান করেছিলেন, ‘চন্দ্রযান-২’ এর অরবিটারের আয়ু হবে এক বছর। কিন্তু বর্তমানে চন্দ্রযানে মজুত জ্বালানি বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, প্রায় সাড়ে সাত বছরের জন্য অরবিটার নিয়ে চিন্তা নেই। ফলে, চাঁদ সম্পর্কে যতটুকু তথ্য মিলবে বলে আশা করা হয়েছিল, তার চেয়ে সাতগুণ বেশী তথ্য ISRO-র হাতে আসবে।

ল্যান্ডার ‘বিক্রম’ এবং রভার ‘প্রজ্ঞান’ বিনষ্ট হয়ে গেলেও ‘চন্দ্রযান-২’ এর বাকি ৯৫% এখনও সঠিক ভাবেই নিজেদের কাজ করছে, এমনটাই জানানো হয়েছে ISRO-র তরফ থেকে। পৃথিবীতে তথ্য প্রেরণের জন্য ৮টি অত্যাধুনিক গ্যাজেট রয়েছে অরবিটারে, যেগুলি ইতিমধ্যেই তাদের কাজ শুরু করে দিয়েছে।

সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে, ২,৩৭৯ কিলোগ্রাম ওজনের ‘চন্দ্রযান-২’ বর্তমানে চন্দ্রপৃষ্ঠের ১০০ কিলোমিটার উঁচুতে অবস্থান করছে। এর মধ্যে রয়েছে আধুনিক ইমেজিং আইআর স্পেক্ট্রোমিটার, যার কাজ হবে চাঁদের খনিজ মানচিত্র তৈরি করা। সেইসঙ্গে চন্দ্রপৃষ্ঠে জল রয়েছে কি না, সেটাও নিশ্চিত করা যাবে এর দ্বারা। এ ছাড়া রয়েছে ডুয়েল ফ্রিকোয়েন্সি সিন্থেটিক অ্যাপারচার রাডার, যা চাঁদের মেরু অঞ্চলের মানচিত্র তৈরি করতে সক্ষম, পাশাপাশি উপ-পৃষ্ঠ স্তরে জল-বরফ রয়েছে কি না, তার সন্ধান দেবে।

Atanu Chakraborty is a content and news writer at BongDunia. He has completed his Bachelor Degree on Mass Communication from Rabindra Bharati University. He has worked with mainstream media, in the capacity of a reporter and copywriter.

Leave A Reply