বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্ক: শেষ মুহূর্তে এসে ব্যর্থ হল ISRO-র ‘চন্দ্রযান-২’! আর একারণে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে প্রথম দেশ হিসাবে ভারতের অবতরণ করার স্বপ্ন আপাতত স্বপ্নই থেকে গেলো।
বিগত ৪৭ দিন পূর্বে ভারতের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র ISRO থেকে ‘চন্দ্রযান-২’ পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল পেরিয়ে চাঁদের উদ্দেশ্যে পাড়ি দিয়েছিলো। আর এই সম্পূর্ণ কাজটি সম্পন্ন করতে মোট খরচ হয়েছিল ৪৫০ কোটি টাকা। এতো কম খরচে এবং অল্প সময়ের মধ্যে চাঁদে মহাকাশযান প্রেরণ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ISRO।
‘চন্দ্রযান-২’ কে মহাকাশে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছিল ৪৪ মিটার লম্বা GSLV Mk3 রকেট, যা এখনও পর্যন্ত ভারতের সবচেয়ে শক্তিশালী ও ক্ষমতাবান রকেট। এর মধ্যে একটি অর্বিটার, ‘বিক্রম’ ( যা ISRO-র প্রতিষ্ঠাতা বিজ্ঞানী বিক্রম সারাভাইয়ের নামে নামকরণ করা হয়েছে) নামক একটি ল্যান্ডার এবং ‘প্রজ্ঞান’ নামের একটি মুন রোভার ছিল।
এরপর বিগত ২০শে আগস্ট সকালে চাঁদের কক্ষপথে প্রবেশ করেছিল ‘চন্দ্রযান-২’। চাঁদের কক্ষপথে প্রবেশের পর ১৫ দিন সেখানেই পাক খাওয়ার কথা ছিল ‘চন্দ্রযান-২’ এর।
উৎক্ষেপণের প্রায় দেড় মাস পর, ২শরা সেপ্টেম্বর (সোমবার) অরবিটার থেকে আলাদা হয়েছিল ‘চন্দ্রযান-২’ এর ল্যান্ডার ‘বিক্রম’। এই ল্যান্ডারের মধ্যেই অবস্থিত ছিল রোভার ‘প্রজ্ঞান’। তখনও পর্যন্ত ISRO কতৃপক্ষ এর তরফ থেকে জানানো হয়েছিল, ল্যান্ডার এবং রোভার দুটিই কোনোরকম যান্ত্রিক গোলযোগ ছাড়াই মিশনে আছে।
বিজ্ঞানীদের কথা অনুযায়ী, ৭ই সেপ্টেম্বর ভোর রাতে চাঁদের মাটিতে নামবার জন্য প্রস্তুত ছিল ‘চন্দ্রযান-২’ এর ল্যান্ডার। কথা ছিল, চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ভোর হওয়ার আগেই খুলে ‘বিক্রম’ এর র্যাম্প, তার ওপর দিয়ে গড়িয়ে নামবে প্রজ্ঞান। এরপর ভোরের আলো ফুটলে সেই আলোর সাহায্যে জেগে উঠবে ‘প্রজ্ঞান’। সোলার প্যানেল এর সাহায্যে ভোর ৫টা ২৯ থেকে প্রতি মিনিটে ৬০ সেন্টিমিটার করে এগোবে। এরপরেই শুরু হবে পর্যবেক্ষণ। কিন্তু লক্ষ্যের অনেক কাছে পৌঁছে ব্যর্থ হয়ে গেলো ভারতের ‘চন্দ্রযান-২’।
সূত্রের খবর, চাঁদের মাটিতে অবতরণের ১৩ মিনিট আগেই ‘বিক্রম’ এর সাথে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গিয়েছে ISRO-র বিজ্ঞানীদের। আর এর ফলেই ব্যর্থ হয়ে গেলো বহু বিজ্ঞানীর সম্মিলিত প্রচেষ্টা এবং দেশবাসীর স্বপ্ন। কিন্তু কেন হল এমন? এর উত্তরে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিজের গতিবেগ কমাতে পারেনি চন্দ্রযান’টি। অনুমান করা হচ্ছে, চাঁদের মাটিতে নামবার সময় চন্দ্রযান’টির গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় প্রায় ৬ হাজার কিমি। যেখানে ৭ কিমি গতিবেগে চাঁদের মাটিতে অবতরণ করার কথা ছিল এটির। এর ফলে দ্রুত গতিতে চাঁদের মাটিতে আছড়ে পড়ে ‘চন্দ্রযান-২’।