বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সিএনএন-এর প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য । প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, চীনের সংখ্যালঘু উইঘুরে মুসলিম সম্প্রদায়ের কেবল একটি পরিবার নয়, শতশত পরিবার কিংবা দেশটির লক্ষ লক্ষ নাগরিককে তুচ্ছ কারণে অনির্দিষ্টকালের জন্য গোপনে আটকে রাখার কথা । আরও জানা গেছে, চীনা কমিউনিস্ট পার্টির এমন নিয়ম প্রথমবারের মত প্রকাশ করেছে দেশটির কিছু উইঘুরের সোচ্চাররা।
যদিও এমন স্পর্শকাতর বিষয় সচরাচর চীনের বাইরে প্রকাশ পায় না, তবে এটা ছিল তৃতীয়বারের মত চীনা সরকারের স্পর্শকাতর তথ্য ফাঁসের খবর । দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা নেই – এই হিসাবে চিহ্নিত করা মুসলিম উইঘুরে সম্প্রদায়কে তাদের ধর্মীয় ও সংস্কৃতিক মৌলবোধ থেকে বিচ্যুত করতে চীনা সরকারের এই জঘন্য এবং ভয়ংকর কৌশল উঠে এসেছে এ নথিতে। যদিও চীনা সরকার বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করে জানিয়েছে, চলমান চরমপন্থিদের গণবিচ্যুতকরণের জন্য এটি একটি প্রক্রিয়া। যেটি কিনা একটি বিশেষজ্ঞ টিমদ্বারা পরিচালিত হয়।
জানা গেছে, রোজিন্না মমতোহট্টি নামের এক মুসলিম নারী সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, চীনা সরকারের এ নথির বিস্তারিত দেখার পরে বেশ কিছু দিন তিনি কিছু খেতে ও ঘুমাতে পারেনি। কারণ সে দেখেছে যে তার পরিবার চীনা সরকারের নজরদারিতে বন্দি রয়েছে। কিন্তু সে এবং তার পরম আত্মীয়রা চীনের জিনজিয়াংয়ের পশ্চিমাঞ্চলে থাকতেন। তারা কোন রকম পরিচিত মুখ কিংবা চরমপন্থি ছিল না। সম্প্রতি ফাঁস হওয়া দলিল থেকে জানা গেছে , সরকারি স্থানীয় কর্মকর্তাদের কাছে তাদের পুরো পরিবারের কাজকর্ম, ধর্মীয় রীতিনীতি, বিশ্বস্ততা ও কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতার মাত্রাও উল্লেখ রয়েছে। এই নথি থেকে নির্ধারণ করা যায়, কোনও সরকারি বন্দি সেলে রেজার তারের মধ্যে কেউ আটক আছে কিনা।
আরও পড়ুনঃ– চীনে দাঁড়ি, বোরখা কিম্বা ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য মুসলিমদের বন্ধী করা হচ্ছে
মমতোহট্টি জানায়, ৩৪ বছর বয়সী তার বোন পতেমকে পরিবার পরিকল্পনা নীতি লঙ্ঘনের জন্য আটক রাখা হয়েছিল। কারণ জিনজিয়াংয়ের গ্রামাঞ্চলে একজন তিনটি সন্তানের বেশি নিতে পারবে না। কিন্তু পতেম এর ছিল চারটি সন্তান। তিনি সিএনএন কে আরও জানিয়েছেন, আমি কল্পনা করতে পারি না আমার ছোট বোন জেলে থাকতে পারে। সে বলেছে , আমি যখন ফাঁস হওয়া নথিগুলোতে তাদের নাম পড়ছিলাম আমি মেনে নিতে পারছিলাম না। আমি বিধ্বস্ত হয়ে পড়ছিলাম।
এদিকে এই খবরের বিষয়ে ওয়াশিংটনের ডিসি-র ভিকটিমস অফ কমিউনিজম মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের প্রবীণ সহযোগী চীনের অ্যাড্রিয়ান জেনজের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞদের একটি দল বলছে , তারা নিশ্চিত যে এটি চীনের একটি খাঁটি সরকারি দলিল। এতে উইঘুর নাগরিকদের এমন কাজের জন্য আটক করা হয়েছে যা তেমন কোন অপরাধের মত নয়। জেনজ সিএনএনকে আরও বলেন, ফাঁস হওয়া তথ্যগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ । কারণ এটি সরকারের এমন একটি হীন মানসিকতাকে দেখায়, যা এই পৃথিবীর উপর আসন্ন সুপার পাওয়ারকে নিয়ন্ত্রণ করে ।