সন্তান মানুষ করার উপায় – প্রত্যেকটি মানুষ বাবা-মা আপনি কখনো আপনার বাবা ময়ের সন্তান ছিলেন। তখন হয়ত মনে হয়েছে আমি যদি কোন দিন বাবা হই তাহলে এ কাজ করতাম। ছেলে বা মেয়েকে মারতাম বা তাদের চাহিদার দ্রব্যাদি সরবরাহ করতাম। আবার যেদিন বাবা হলেন সেদিন কি মনে হচ্ছে আমার সন্তান বখে যাচ্ছে। ঐ বাড়ির ছেলেটা বা মেয়েটা কত ভাল। সন্তান মানুষ করতে গিয়ে আপনি বাবা মা হিসাবে কি ভুল করছেন। দেখুনতো আজকে আপনাদের সামনে আনা ভুলগুলো আপনি করছেন কিনা? করলে নিজেকে পরিবর্তন করুন-
সন্তান মানুষ করার উপায়
প্রশংসা করা: সন্তানের ভাল কাজের প্রশংসা করতে হবে। তার সামনেই তাকে প্রশংসা করতে হবে। তবে খারাপ কাজে প্রশংসা করা বা অতিরিক্ত প্রশংসা আপনার সন্তানকে অহংকারী করে তুলতে পারে।
আদর করা: সন্তানকে প্রয়োজনীয় আদর করতে হবে। বাবা মা হিসাবে আদর করা স্বাভাবিক। কিন্তু অতিরিক্ত আদর করলে ভবিষ্যতে সন্তানকে নিজের আয়ত্তে রাখা কঠিন হবে।
চাপ দেওয়া: সন্তান মানুষ করার উপায় গুলি জানা বাবা এবং মা এর পক্ষে অনিবার্য।সন্তানকে ভাল রেজাল্ট করা বা কোন খাবার বিষয়ে অতিরিক্ত চাপ দেওয়া উচিত নয়। এসব সময়ে অনেক অভিভাবক সন্তানকে রেজাল্ট বা খাবার জন্য গায়ে হাত তুলে থাকেন যার ফলে সন্তানের মধ্যে ভয় তৈরী হয়। এরকম ক্ষেত্রে সন্তান ভালর থেকে খারাপ হওয়ার সম্ভবনা বেশী থাকে।
তুলনা করা: সন্তানকে তুলনা করে প্রতিযোগিতার মধ্যে ফেলায় তার মধ্যে হীনমন্যতার সৃষ্টি হতে পারে। বরং কারুরই সাথে তুলনা করে প্রতিযোগিতাপূর্ণ মনোভাবে ও পরিশ্রমী করে তোলার দিকে নজর রাখা ভাল।
সন্তান সঠিক কাজ করে: আপনার সন্তান যাই করে তা ঠিক এরকম মনোভাব ত্যাগ করতে হবে। সন্তানের বিষয়ে কারুর কাছে খারাপ শুনলে মেনে নিয়ে তা শুধরানোর ব্যবস্থা করতে হবে। বরং আপনি যদি সন্তানের সামনে তার সম্পর্কে বলা লোকের সাথে প্রতিবাদ করেন এর ফলে সন্তান ভালর থেকে মন্দ হবে।
সন্তানকে দিয়ে কোন কাজ করার জন্য ঘুষ দেওয়া: সন্তানকে খাওয়ান, পড়ানো বা কোন কাজ করার জন্য অনেক অভিভাবক ঘুষ দিয়ে থাকেন যা সঠিক নয়। বরং সন্তানকে ভালো মন্দ বুঝাতে হবে যাতে সে স্বেচ্ছায় কাজটি করে।
সন্তান মানুষ করার উপায়
নিজের ভুল স্বীকার করুন: সন্তানকে মানুষ করতে গিয়ে বাবা মা অনেক সময় ভুল করতে পারেন। নিজের ভুল বুঝতে পারলে সন্তানকে বলুন। আপনি সঠিক এভাবে থাকলে আপনার প্রতি সন্তানের খারাপ ধারণা তৈরি হবে।
জানার স্বল্পতা: সন্তান কোন প্রশ্ন করলে আপনি না জানতে পারেন। না জেনে কোন প্রশ্নের উত্তর দিয়ে সন্তানের কাছে ছোট হবেনা। বরং তার কাছ থেকে জানার জন্য সময় নিন।
টিম ওয়ার্ক: আপনার সন্তানকে একাকীত্ব থেকে দূর করার জন্য টিম ওয়ার্ক, গ্রুপ ওয়ার্কের সাথে সম্পৃক্ত করুন। নাহলে একসময় হতাশা তৈরি হবে।
সন্তানের অভিজ্ঞতা শেয়ারিং-সন্তানের কাজ প্রত্যেকটি দিন নতুন শেখে তার শেখা আগ্রহ ভরে শুনুন এবং উৎসাহ দিন। তার বলতে আসা কথা আপনি না শুনলে আপনার সাথে দূরত্ব তৈরি হবে।
সমালোচনা: অন্যের সমালোচনা করা থেকে বিরত থাকুন। বিশেষ করে সন্তানের সামনে কারুরই সমালোচনা করা আপনার সন্তানের জন্য ভালো দিক নয়।
সন্তান মানুষ করার উপায়
শৈশবকে উপভোগ করতে দেওয়া: অতিরিক্ত পড়ার চাপ দিয়ে আপনি সন্তানের রঙিন শৈশব নষ্ট করে দেলে তার বিকাশ সঠিক হবে না। বরং সন্তানকে খেলাধূলার মধ্যে শিখান।
শিক্ষক সম্পকে খারাপ বলা: আপনার সন্তানের সামনে তার শিক্ষকের না পারা বা পক্ষপাতিত্ব থাকলেও বলবেন না। তাতে শিক্ষকের প্রতি তার সম্মান নষ্ট হয় ফলে আপনার সন্তানের শিক্ষা জীবন অগ্রসর হওয়ার সম্ভবনা কম থাকবে।
সন্তানের সঙ্গে বন্ধুত্ব: সন্তানের সঙ্গে সেই অভিভাবক সুলভ সম্পর্ক গড়ে তুলুন যেন তার সমস্যা, ভাল দিক আপনাকে বলতে পারে।
ভয় দেওয়া: সন্তানকে তার বয়স অনুযায়ী কাজে ভয় দেওয়া থেকে বিরত থাকুন বরং সে কোন কাজ না পারলে তাকে উৎসাহ দিন সে পারবে।
পছন্দ প্রাধান্য দেওয়া: সন্তানের পছন্দকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করার দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। তবে সন্তানের চাহিদামাত্র কোন কিছু দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।
ব্যর্থতার কথা নয়: সন্তানকে তার ব্যর্থতার কথা মনে না করিয়ে সফলতার কথা মনে করিয়ে দিন। ব্যর্থতার কথা মনে করালে সে মানসিক ভাবে আরো পিছিয়ে পড়বে।