বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ করোনা পরিস্থিতিতে একদিকে লকডাউন অন্য দিকে বারবার ভিড় এড়াবার জন্য প্রতিদিন বাজারে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না । ফলে একবারে বেশি পরিমাণে বাজার করে বাড়ির ফ্রিজে রাখতে হচ্ছে । বাজার থেকে কিনে আনা শাকসবজি ফলমূল কিছুদিন ভালো রাখার জন্য ফ্রিজের বিকল্প নেই।কিন্ত একটা কথা মাথায় রাখা উচিত,  সব খাবার ফ্রিজে রেখে খাওয়া নিরাপদ নয়, বরং আপনার পক্ষে ক্ষতিকর হতে পারে ।

আমরা সবাই জানি সবজি, মাছ, মাংস, ডিম, ফলমুল ইত্যাদি ফ্রিজে রাখলে দীর্ঘদিন ভাল থেকে । কিন্তু জানেন কি, এমন কিছু ফলমূল আছে যা ফ্রিজে রাখলে তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায়, স্বাদও বদলে যায়। এমনকি রং পাল্টে যায়। আর ফ্রিজ থেকে সেই খাবার বের করে খেলে অনেক ক্ষেত্রে উপকারের থেকে অপকার হবার সম্ভবনা থাকে । আসুন, জেনে নেওয়া যাক, কোন কোন খাবার ফ্রিজে রাখা ঠিক না।

 কলাঃ অন্যান্য ফলের সাথে পাকা কলা আমরা ব্যবহার করি । একটু লক্ষ্য করলে দেখতে পাবেন পাকা কলা কিছুদিন ফ্রিজে ঠিকঠাক থাকে। কিন্তু কাঁচা কলার ক্ষেত্রে সে কথা খাটে না ।  ফ্রিজ থেকে বের করার পর কাঁচা কলার ওপরের অংশ কালো হয়ে যায়। সেইসঙ্গে বাড়তি ঠান্ডায় রাখলে কলার মধ্যে থাকা পটাসিয়াম কনটেন্টও কমে যায়। কলা উষ্ণ এলাকার ফল। তাই অতিরিক্ত ঠাণ্ডায় তার খোসা কালো হয়ে যেতে থাকে।এই কারনে একেবারেই ফ্রিজে রাখবেন না কাঁচা কলা ।

রসুনঃ বাজার থেকে বেশ কিছুটা রসুন কিনে নিয়ে এলেন । ফ্রিজে বা একটা প্লাস্টিকের ব্যাগে ভাল করে মুড়ে রাখলেন । কিন্তু জানেন কি, রসুন প্লাস্টিকের ব্যাগ বা ফ্রিজে রাখলে তার ওপর ছত্রাক বাসা বাঁধে। এই কারনে ফ্রিজে রসুন রেখে ব্যবহার করলে ক্ষতি হবার সম্ভবনা থাকে । মাথায় রাখবেন রসুন ভালো রাখার সব থেকে সহজ উপায় সাধারণ তাপমাত্রা বা অন্ধকারে রাখা।তবে, রসুনের পেস্ট ১০ থেকে ১৫ দিন ফ্রিজে স্টোর করা যায়। 

রুটিঃ অনেকেই পাউরুটি কিম্বা আটার রুটি ফ্রিজে রেখে দেন । কিন্তু রুটি ফ্রিজে রেখে খাওয়া উচিত নয় । বিশেষ করে রুটির জলীয় অংশ ফ্রিজে রাখলে শুখিয়ে যায় । এই কারনেই ফ্রিজে রুটি ভালো থাকে না। ফ্রিজের ঠাণ্ডায় বিস্বাদ হয়ে যায়। শুকিয়েও যায়।

আলুঃ এখন বাজারে আলুর দাম বেশ চড়া । সরকার চেষ্টা করেও আলুর দামে লাগাম দিতে পারছেন না । যদি মনে করেন আলু কিনে ফ্রিজে দীর্ঘদিন রেখে দেবেন, তাহলে ভুল করবেন । আলুকে শুকনো আর ঠাণ্ডা জায়গায় রাখা যায়। কিন্তু ফ্রিজে রাখলে তার স্টার্চ শর্করায় পরিণত হয়। রংও কালচে হয়ে যায়। ফ্রিজ থেকে আলু বের করে রান্না করলে তার স্বাদ মিষ্টি লাগে।যা শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর ।

কফিঃ  ফ্রিজে কফি রাখলে তা খুব দ্রুত গন্ধ হারিয়ে ফেলে। এমনকী ফ্রিজে থাকা অন্য সব জিনেসের গন্ধ কফির মধ্যে ঢুকে যায়। এমনকী, অত্যাধিক ঠান্ডা কফিকে ড্যাম্প করে দেয়।

টমেটোঃ  অত্যাধিক ঠান্ডায় টমেটোর স্বাভাবিক গুণ নষ্ট হয়ে যায়। সেইসঙ্গে ‘ফাঙ্গাল ইনফেকশন’ হয়। এরপর ওই টমেটো খেলে তা শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক।

মধুঃ ফ্রিজে রাখলে মধুর মধ্যে একটা ‘ক্রিস্টাল’ লুক হয়। যদি, মধু ভালভাবে রাখতে চান, তাহলে কাঁচের শিশিতে ঘরের স্বাভাবিক টেম্পারেচারে রাখুন। এতে মধু ফ্রেসও থাকে এবং অনেকদিন পর্যন্ত স্বাভাবিক গুণ বজায় থাকে। মধু ‘ক্রিস্টাল’-এর আকার ধারণ করলে গুণ নষ্ট হয়ে যায়।

তরমুজঃ ফ্রিজে সাধারণত ফল ভাল থাকে না। ফ্রিজের ঠান্ডায় তরমুজে ‘চিল ইনজুরি’ হয়। এর ফলে তরমুজ তাঁর স্বাদ ও রং হারিয়ে ফেলে। ‘চিল ইনজুরি’-তে ব্যাক্টেরিয়া জন্ম নেয়। আর এই অবস্থায় ওই তরমুজ খাওয়া পেটের পক্ষে অস্বাস্থ্যকর।

পেঁয়াজঃ বেশি ঠান্ডায় পেঁয়াজ নরম হয়ে যায়। অন্য জিনিসের গন্ধও খুব দ্রুত পেঁয়াজ গ্রহণ করে। তাই স্বাভাবিকতাপমাত্রায় পেঁয়াজ রাখাই ভাল। খুব দরকার হলে একদিনের জন্য ফ্রিজে রাখা যেতে পারে।

অলিভ ওয়েলঃ  ফ্রিজে রাখলেই জমে যায়। এর ফলে অলিভ ওয়েলের মধ্যে এমন কিছু কেমিক্যাল রিয়্যাকশন হয়, যা মানুষের শরীরের পক্ষে হানিকর।

Kajal Paul is one of the Co-Founder and writer at BongDunia. He has previously worked with some publishers and also with some organizations. He has completed Graduation on Political Science from Calcutta University and also has experience in News Media Industry.

Leave A Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.