বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ মার্কিন-ইরানের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্ক একেবারে তলানিতে এসে ঠেকেছে । শুক্রবার ভোর রাতে মার্কিন এয়ার স্ট্রাইক হামলায় মৃত্যু হয়েছে ইরানি কুদস সেনাপ্রধান কাসেম সোলেমানির। ধীরে ধীরে তৈরি হচ্ছে যুদ্ধের আবহ । এর প্রতিবাদে শুক্রবারেই জম্বু-কাশ্মীরের কারগিল এলাকায় বেরিয়েছিল প্রতিবাদী মিছিল । আজ শনিবার ভারতের লখনউয়ে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দিয়েছেন শিয়া মৌলবি মৌলানা কালবে জাওয়াদ।
ইরাকের বাগদাদ বিমান বন্দরে ভোররাতে আমেরিকা এয়ার স্ট্রাইক হামলা চালায় । মার্কিন রকেট হামলায় মারা গেছেন ইরানি কুদস সেনাপ্রধান কাসেম সোলেমানির। এই হামলার পরে আমেরিকার বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরান ও ইরাক। গতকালই আন্তর্জাতিক বাজারে ৪ শতাংশ তেলের দাম বেড়েছে । এদিকে ভারতের মুসলিম সম্প্রদায় মার্কিন হামলার নিন্দা করেছে তীব্রভাবে । গতকাল কাশ্মীরে মিছিলের পর আজ শনিবার লখনউয়ে মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছে । জানা গিয়েছে, আগামীকাল লখনউয়ের ছোটা ইমামবাড়া থেকে শুরু হবে এই মিছিল। মৌলানা কালবে জাওয়াদ জানিয়েছেন, আমেরিকার হাতে ইরানের কুদস সেনাপ্রধান কাসেম সোলেমানির হত্যার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি আমরা। শান্তিপূর্ণ মিছিলের মাধ্যমে সেই প্রতিবাদ জানানো হবে। সবাইকে এই মিছিলে অংশগ্রহণের আবেদন জানানো হয়েছে।
বাগদাদে ইরানি দূতাবাসের উপর বেশ কয়েকদিন ধরেই উড়তে দেখা গেছে মার্কিন হেলিকপ্টার ব্ল্যাক হককে । এরপর শুক্রবার হামলার পর ইরান চুপ করে বসে নেই । ভারত থেকে অবশ্য এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শান্তির বার্তা দেওয়া হয়েছে । ভারত থেকে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, ““আমরা লক্ষ করেছি, আমেরিকার আক্রমণে ইরানের এক শীর্ষস্থানীয় নেতা নিহত হয়েছেন। এর ফলে যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে তাতে সারা বিশ্ব উদ্বিগ্ন। শান্তি, স্থিতিশীলতা ও ওই অঞ্চলের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা সবচেয়ে বেশি চিন্তিত। পরিস্থিতি যেন হাতের বাইরে না চলে যায়। আমরা সংযত হওয়ার জন্য আবেদন জানাচ্ছি।”
দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের বিবাদে আশঙ্কিত আন্তর্জাতিক মহল । আশঙ্কা করা হচ্ছে এই বিবাদ তেলের বাজারে বিরাট প্রভাব ফেলতে পারে । ইরান এবং ইরাক দুই দেশই হুশিয়ারি দিয়েছে আমেরিকাকে । ইরানের সেনাবাহিনীর প্রধান আয়াতুল্লাহ আলি খোমেইনি সতর্ক করেছেন আমেরিকাকে। তিনি বলেছেন “যে শত্রুরা সোলেমানির রক্তে নিজেদের হাত নোংরা করল তাদের বিরুদ্ধে নৃশংস বদলা নেওয়া হবে। সোলেমানির কাজ ও পথ চলা থামবে না। সেই কাজ আমরা এগিয়ে নিয়ে যাব।” একই সুরে ইরাকের তদারকি সরকারের প্রধান আদেল আবদেল মাহদিও বলেন, আমেরিকা আমাদের দেশে হানা দিয়েছে। এর ফলে বিধ্বংসী যুদ্ধ শুরু হতে পারে। তাঁর কথায়, “ইরাকের অভ্যন্তরে যেভাবে এক সেনাপ্রধানকে হত্যা করা হয়েছে তা এদেশের সরকার ও জনগণের বিরুদ্ধে আগ্রাসন হিসাবেই গণ্য করা হবে। এর ফলে বড় ধরনের যুদ্ধ বেধে যেতে পারে।”
এদিকে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে অশান্তি চলছে বেশ কয়েক দিন ধরেই । অনেক জায়গায় প্রশাসন বাধ্য হয়েছে ১৪৪ ধারা প্রয়োগ করতে । এমন কি, নাগরিকত্ব আইন বিরোধী মিছিলে লখনউয়ে প্রতিবাদ হচ্ছে বেশ কয়েক দিন ধরে। এই পরিস্থিতিতে লখনউয়ে মার্কিন হামলা এবং ইরানি কুদস সেনাপ্রধান কাসেম সোলেমানির মৃত্যুর প্রতিবাদে মিছিল বেরালে নতুন করে আইন শৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে বলেই ধারণা প্রশাসনিক মহলের।