—–লেখক পরিচিতি—–

এন কে মণ্ডল

এন.কে.মণ্ডল একজন ভারতীয় বাঙ্গালী লেখক। তিনি ৫ ই মে ১৯৯৬ সালে মুর্শিদাবাদ জেলার হরিহরপাড়া ব্লকের অধিনস্থ প্রতাপপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।তিনি পেশায় একজন গ্রামীণ চিকিৎসক ও লেখক। তিনি ২০১৯ সালের মার্চ মাসে বাংলার অন্যতম পুরস্কার “সাহিত্য রত্না” উপাধিতে ভূষিত হন।এছাড়া অনেক উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলি হল আনন্দ পথ,ভালোবাসার পরশ ছোঁয়া,আকাশ ছোঁয়া মন,থমথমপুর,রহস্যময় প্রাচীণ বাড়ি ইত্যাদি।

★★প্রেমিক পরিবর্তন- এন.কে.মণ্ডল ★★

 

(প্রথম পর্ব)

এন.কে.মণ্ডল ৫ ই মে ১৯৯৬ সালে মুর্শিদাবাদ জেলার হরিহরপাড়া ব্লকের অধিনস্থ প্রতাপপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ৫ ই মার্চ ২০১৯ সালে সাহিত্য রত্না পুরস্কারে ভূষিত হন। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ গুলি হল আনন্দ পথ,আকাশ ছোঁয়া মন,থমথমপুর,ভালোবাসার পরশ ছোঁয়া,রহস্যময় প্রাচীণ বাড়ি ইত্যাদি।

ওই মামু সোনার পুল যাবেন।

যাব,

ঠিক আছে,চলুন।

মামু আস্তে আস্তে, এখানেই নামব রিকশা থামান।

কত টাকা দিতে হবে।

আজ্ঞে বাবু পঁচিশ টাকা।

ও এই নাও ধরো।

অর্পণ সোনার পুলের সবথেকে ভালো নার্সারিতে প্রবেশ করল। চারিদিক ঘুরেফিরে দেখতে লাগলো।

এই ভাই শুনছেন, এদিকে আসবেন প্লিজ।

হ্যাঁ বলুন,কি বলছেন।

মানে আমি বলছিলাম আপনাদের নার্সারিতে নিল গোলাপের চারা হবে।

হ্যাঁ সাহেব হবে,একটাই হবে তবে ফুল ফুটতে দিন তিনেক সময় লাগবে সদ্য কলি এসেছে।

হ্যাঁ ওতেই হবে, আপনি ওটা প্যাকেট করে দেন।

এই নিন বাবু।

কত টাকা দিতে হবে।

আপনার দুইশো টাকা দিলেই হবে বাবু।

ঠিক আছে, এই নাও।

মামু চলো বাড়ি ফিরব,

বাবুর বুঝি নীল গোলাপ খুব পছন্দ,।

না তা নয়, গোলাপ তো সবার পছন্দ, আর তাছাড়া এটার একটা বিশেষ কাজ আছে, বলা যাবে না।

ও।

মামু এইখানেই থামান , হেটে যাব বাদ বাকি।

আচ্ছা।

কত টাকা দেব,।

গতবারে পঁচিশ টাকা দিয়েছেন, এবার কুড়ি টাকা দিন, তাহলেই হবে।

অর্পণ হেটেই বাড়ি ফিরলো,ছাদেই গাছটি টবসহ রেখে দিলেন,জল সার দিয়ে খুঁচিয়ে দিলো।

রাত্রি নয়টায় দিকে অর্পনের মোবাইলে একটি ফোন আসলো, বার বার রিং হওয়ায় ফোনটা রিসিভ করলো।

হ্যালো।

কই তুমি আজ একটিবার আমার খোঁজ নিলে না, আমি কি করছি,কি খেলাম, কিভাবে আছি।

না মানে তুমিই তো বললে আমায়, যে প্রত্যক দেখায় একটি করে নীল গোলাপ লাগবে। তা না হলে আমায় কথা বলবে না। তাই ফোন দিই নাই।

ও, তাই বলে একবারও ফোন দিবে না।

আসলে ব্যাপার টা হচ্ছে নীল গোলাপ খোঁজার জন্য ছুটে বেরাচ্ছিলাম তাই ব্যাস্ততার মাঝে ফোন দেওয়া হয় নাই। প্লিজ সোনা কিছু মনে করো না।

ঠিক আছে তোমায় পরে ফোন দিই,আম্মু ডাক দিচ্ছে।

ওকে, যাও।

—————————

হ্যাঁ মা বলো, কি বলছিলে।

ঘড়ির দিকে খেয়াল আছে তোর, কয়টা বাজে, খেতে হবে না। কতবার বলছি একটা বিয়ে কর, আমার কথা শুনতেছিস না। আমাকে ঘরের কাজ একা করতে হয়। আমিও তো নাতি নাতনি কে নিয়ে গল্প গুজব করব তাই না।

আচ্ছা ঠিক আছে হইছে,এখন খেতে দাও।আর সময় হলেই বিয়ে করব।তোমায় ভাবতে হবে না অতো।

ভাবতে হয় রে, বাবা হবি যখন তখন বুঝবি।

পরেরদিন কলেজে…….

কি রে দোস্ত ক্লাসে যাবি না। না রে দোস্ত আমার এখন মনটা ভালো নেই।

কেন রে,।

না মানে তোর ভাবির সঙ্গে দেখা করতে হলে নীল গোলাপ লাগবে।

তো গোলাপ গাছ লাগিয়ে ফ্যাল,অসুবিধে কোথায়।

লাগিয়েছি, সে তো এখনো তিন চার দিন লেগে যাবে ফুটতে।

তাহলে আর কি করবি বল।,

এই দোস্ত ক্লাস স্টার্ট হয়ে গেছে আমি গেলাম।

ওকে, যা তাহলে, পরে দেখা হবে। আমি এখন বাড়ি যায়।

যা তাহলে।

দুইদিন পরে………..

ভাইয়া আপনি ইডেন যাবেন,।

যাব

ঠিক আছে, চলেন।

অর্পন রিকশা ওয়ালার ভাড়া মিটিয়ে নদীর ধারে ধারে হেটে আসছে এসেই স্বপ্নার কাছে গিয়ে বলল।

হাই জান, কেমন আছো।

ওই জান টান বলে আমার গোলাপের কথা ভুলে মেরে দিলে হবে না। আগে আমার নীল গোলাপ দাও তারপর আমার সঙ্গে যত খুশি প্রেম করো, বাধা দেব না।

এই নাও তোমার নীল গোলাপ।

গোলাপটি নিয়ে স্বপ্না খুব খুশি, তখন স্বপ্না বলল।

জানো জান তোমার কাছে কোনো দামী গিফট না চেয়ে গোলাপ কেনো চাইছি।

না, সে তো জানি না।

আমি জানি, আমি বললে সবকিছু কিনে দেবে,কিন্তু আমি চাই না। আমাকে একটি করে গোলাপ দেবে আর…. শুধু…….মাত্র…. বেশি করে ভালোবাসা দেবে। আর কিচ্ছু চাই না।

আমি জানি তো, তুমি আমায় কতটা ভালোবাসো, আর এইজন্যই এত খুঁজে খুঁজে নীল গোলাপ নিয়ে আশা।

তুমি কি আমার পাশে এসে একটু আদর করবে।

কেনো, যা হবে বিয়ের পর হবে।

আচ্ছা অর্পণ তুমি এত ভয় পাও কেনো।

না এটা অবৈধ, এটা ঠিক নয়। দেখো স্বপ্না তোমায় ভালোবাসি, আর ভালোবাসি বলেই তোমাকে ব্যাবহার করতে হবে তাঁর কোনো মানে নেই।

ঠিক আছে চলো কোনো রেস্টুরেন্টে যাই, খিদা লেগেছে।

যাবে বলছো চলো।

তারপর রেস্টুরেন্টে গিয়ে খাওয়া দাওয়া সেরে অর্পণ এবং স্বপ্না রিকশায় করে কিছুক্ষণ ঘুরে বাড়ি ফিরলো।এইভাবে তিন মাস চলে গেলো।
যখন দুজনের সুখের সময় তখনই হঠাৎ করে স্বপ্নার মোবাইলে একটা ফোন আসে অভিজিৎ নামে। বারবার ফোন বাজার পর ফোন রিসিভ করে।

হ্যাঁ কি বলছো তাড়াতাড়ি বলো, তোমার মত ছেলেকে সময় দিতে পারব না।

দেখো স্বপ্না তোমাকে বারবার ফোন দিয়েছি ফোন লাগে নি,ম্যাসেজ করেছি, তুমি রিপ্লাই দাও নি। আমি তোমার কাছে সরি চাইছি।তুমি আমায় খমা করে দাও প্লিজ।

স্বপ্না ফোন টা কেটে দিয়ে সুইচ অফ করে দেয় পরেরদিন অর্পণের সঙ্গে সময় কাটিয়ে রিকশায় করে বাড়ি ফিরছে তখন সামনে দাঁড়িয়ে আছে অভিজিৎ। তখন অভিজিৎ রিকশা ওয়ালা কে বলল ভাই তুমি যাও ওর সঙ্গে আমার কথা আছে।

স্বপ্না বলল মামু তুমি চলো।

অভিজিৎ বলল ভাইয়া এই নাও টাকা আর তুমি চলে যাও। আর স্বপ্না প্লিজ তুমি আজ একটা কথা শোনো। তারপর আমাকে যা সাজা দেবে তাই মাথা পেতে নেব।

ঠিক আছে বলো।

আমি তোমায় বারে বারে বলছি, আমার ওই মেয়েটার সঙ্গে কোনো রিলেশন নেই, ও আমার জাস্ট বন্ধু। তুমি কোনো কথা না বলে আমায় ছেড়ে চলে আসলে।

তো তুমি আমাকে ফোন বা দেখা করতে পারতে তো। আমার এখন পথ খোলা নেই অন্যজনের সঙ্গে রিলেশন আছে।

প্লিজ স্বপ্না আমায় এরকমভাবে বলো না।

ঠিক আছে, আমায় একটু ভাবতে দাও।

দুইদিন পর………

অর্পণ কে ফোন দিলো। এবং বলল অর্পণ তুমি আগামীকাল একটু আসতে পারবে, তোমার সঙ্গে কিছু কথা আছে।

হ্যাঁ সে তো যাওয়ায় যায় তবে, এখনো নীল গোলাপ নেই,ফোঁটে নি তো।

লাগবে না, তুমি খালি হাতেই এসো।

অর্পণের একটা বিশাল খটকা লাগলো, কি ব্যাপার, দেখা করলেই গোলাপ চাই তবে কি কাল অন্যকিছু অসুবিধেই পড়ব নাকি। যা হয় হবে। এইবলে পরের দিন বেরিয়ে পড়ল বাজারে নীল গোলাপ কিনে নিয়ে।

হ্যাঁ কি বলবে বলো।,ওহ এক মিনিট গোলাপ নিয়ে এসেছি।

না থাক আজকে লাগবে না।

কেনো

দেখো অর্পণ আমি তোমার সঙ্গে রিলেশনটা আর কন্টিনিউ করতে চাচ্ছি না।

মানে কি, কি বলছো। তোমার মাথা ঠিক আছে তো।

আমি যা বলছি, ঠিকই বলছি।,তুমি আমার থেকে অনেক ভালো মেয়ে পাবে। তুমি অনেক একটা ভালো ছেলে। আমি জানি কোটির মধ্য একজন। তুমি ভালো থেকো।

না মানে তোমার অসুবিধেটা কি বলো, আমার দোষ কোথায়। আমি শুধরে নিচ্ছি।

দেখো অর্পণ তোমার কোনো দোষ নেই, আমি চাচ্ছি না তোমার সঙ্গে আর রিলেশনে জড়াতে।

…………..

অর্পণ একেবারে মুষড়ে পড়লো। টেনশনে লেখাপড়া ছেড়ে দিলো, মদ ড্রাগসে লিপ্ত হয়ে গেলো। এবং এক সপ্তাহ পর জামা প্যান্ট পুরে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে পড়ল অন্য কোথাও চলে যাওয়ার জন্য। বাসে উঠে বসে আছে জানালার ধারে,পাশের সিটে বসে আছে একজন ভদ্রলোক। সে হাউমাউ করে কেঁদে চলেছে।
অর্পণ জিজ্ঞেস করল

হেলো ভাইয়া আপনি কাঁদতেছেন কেন।

ভাই আমাকে আজ বিবি, ছেলে মেয়ে কে ছেড়ে চলে যেতে হচ্ছে বিদেশে পাঁচ বছরের জন্য।সন্তান সংসার ছেড়ে চলে যাওয়া বাবা মার কাছে কতো কষ্টো ভাই রে। আমি আর পারতেছি না ভাই ছেলে মেয়ে কে ছাড়া।

অর্পণের মাথায় খেয়াল হয়ে গেলো আমিও আমার আম্মু কে ছেড়ে চলে যাচ্ছি, তাহলে আমার আম্মুর মন এইরকম ভাবেই কাঁদছে।

তাই অর্পণ তাড়াতাড়ি বাস থেকে নেমে বাড়ি চলে আসলো।তারপর শহরে এসেছে মনটা কে ভালো করতে। এমন সময় অর্পনের পাশে একটি ভ্যানে একজন বৃদ্ধা কে নিয়ে আসলো। এবং অর্পণ এবং বৃদ্ধার ছেলে দুজনে একটি সাধারণ ক্লিনিকে নিয়ে গেলেন ধরে ধরে। ক্লিনিকের ডাক্তার বৃদ্ধার ছেলেটিকে বলল

যে আপনাকে বারবার বলেছি যে আপনি ভালো ডাক্তার দেখান, এখানে হবে না।

বৃদ্ধার ছেলে বলল, ডাক্তার বাবু আমার অতো টাকা নেই তাই পারি না।

ঠিক আছে বসুন, দেখছি কি করা যায়।

……………..
সেখানে অর্পণ লোকটিকে ডেকে বলল

ভাইয়া আপনি আপনার মাকে ভালো ডাক্তার দেখাচ্ছেন না কেন।

লোকটি বলল, ভাইরে ছোট থেকেই লেখাপড়ায় ফাঁকি মেরেছি, ভালো লেখাপড়া করতে পারি নাই আর তাই ভালো চাকরি করতে পারি নাই।সেলসম্যানের চাকরি করি এগারো হাজার টাকা পাই, ওতে টেনেটুনে সংসারটা চলে আর কি।
যদি পড়াটা ভালো করতে পারতাম তাহলে ভালো চাকরি করে সংসার জীবন সুখে কাটত এবং আম্মুকে ভালো ডাক্তার দেখাতে পারতাম।

………
এখানে অর্পণ আরেকটি শিক্ষা পেলো, সে বাড়িতে এসে মন দিয়ে পড়াশুনা করলো, পরিক্ষায় টপার রেজাল্ট হয়ে গেলো। রেজাল্টের পর চাকরি পতিক্ষায় বসে পাশ করে ডি.এম হলেন। এখন অর্পণ একজন জেলা শাষক। আম্মু কে নিয়ে দারুণ সুখে আছে।

কয়েকমাস পরে………রেস্টুরেন্টে একজন চাকুরিজীবী বন্ধুর সঙ্গে রেস্টুরেন্টে। রেস্টুরেন্টে খাওয়ার পর চলে যাচ্ছে এমন সময় একজন সুন্দরী মেয়ে বলল।

এক্সকিউজ মি, আপনার মোবাইল রেখে যাচ্ছেন।

অর্পণ পকেটে হাত দিয়ে দেখে মোবাইল নেই, টেবিল থেকে নিয়ে আসলো।এবং মেয়েটিকে বিশেষ ধন্যবাদ জানাই। এবং বলল।

আপনি কি করেন।

এখন তেমন কিছু করি না।আসলে মেধাবী ও ভালো রেজাল্ট নিয়ে চাকরি করা যায় না।

কেন, কোনো পরিক্ষা দেন নাই।

অনেক দিয়েছি, রেজাল্ট দেখে মুগ্ধ কিন্তু টাকা না দিতে পারায় চাকরি হচ্ছে না।ঘরে মা বা। টিউশনি করে সংসার চালাতে হয়।

ঠিক আছে, আপনি এই কার্ডটি রাখুন আর আগামীকাল ডি.এম অফিসে আসুন।

কার্ডটি নিতেই পড়ে দেখে তিনি এই জেলার ডি.এম।

আপনি ডি.এম.

হ্যাঁ, আগামীকাল আসবেন।

ধন্যবাদ স্যার।

ওকে ভালো থাকুন,আগামীকাল দেখা হচ্ছে তাহলে।বাই।

বাই।

পরেরদিন দশটায় হাজির জেলা শাষকের অফিসে। একজন আধিকারিক কে জিজ্ঞেস করলে বলেন। ডি.এম স্যার এখন আসবেন না। তিনি বারোটার দিকে আসেন।

রিতু (মেয়েটির নাম) বলল স্যার তো আমাকে দশটায় আসতে বলেছেন।
আধিকারিক হেসে বলেন, তিনি একজন ডি.এম, আপনার সঙ্গে কথা হয়েছে, আপনার কি মাথা খারাপ হয়েছে না কি।

রিতু আর কথা বলল না। সাড়ে দশটার দিকে ডি.এম তথা অর্পণ আসলো। এবং অফিসের বেঞ্চে বসে আছে দেখে বলল।

আরে আপনি বসে আছেন।আসুন আসুন। একচুয়ালি আপনার কাজের জন্যই দেরি হয়ে গেলো। আই এম এক্সটিমলি সরি।

না না স্যার এমন করে বলবেন না।

ঠিক আছে আপনার ফাইলগুলি দিন।

এই নিন, আমার সমস্ত রেজাল্ট ওখানেই আছে।

কিছুক্ষণ পরে অর্পন বলল,

আরে আপনাকে যা আইডিয়া করেছিলাম তার থেকেও ভালো রেজাল্ট আছে তো।

ঠিক আছে, আপনার চাকুরি গ্যারান্টি। আগামী পাঁচ তারিখের মধ্য চাকরিতে জয়েন করতে পারবেন অবশ্য আমার অফিসেই।

আপনাকে কি বলে যে ধন্যবাদ দেব বুঝতে পারছি না।

ঠিক আছে। আপনার আগামীকাল জয়নিং লেটার চলে যাবে। আর হ্যাঁ আমাকে অফিসিয়ালি স্যার বললেই হবে, বাদ বাকি ভাইয়া বললেই হবে। ঠিক আছে। ঠিক আছে আসুন।

অনেক অনেক ধন্যবাদ স্যার। আসি তাহলে।

পরেরদিনে কোনো লেটার যায় নি, ফলে রিতুর মন ভেঙ্গে গেলো। কিন্তু দুইদিন পর একটি লেটার গেলো রিতুর বাড়িতে যে আগামীকাল দশ তারিখে আপনার জয়নিং। রিতু সে বিশাল খুশি জয়নিং লেটার পেয়ে। আল্লাহ কে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানালো। ভালো ব্যাক্তির সঙ্গে কখনো আল্লাহ খারাপ ব্যাবহার করে না। তাদের বড় কিছু উপহারই রাখেন।

দশ তারিখে……..

দশ তারিখে নিজে হাতে রসগোল্লা ও নানান খাবার তৈরি করে হাজির সকাল সাত টার দিকে ডি.এম বাংলোয়। দারোয়ান কে নানান ভাবে বুঝিয়ে প্রবেশ করে বাংলোয়। তখন ডি.এম সাহেব পাইচারি করছে ছাদের ওপর ফুল বাগানে। রিতু কে দেখতে পেয়ে অর্পণ বলল আরে আপনি এখানে এত সকালে।

না মানে আজ কে আমার জয়নিং তাই সকালে দেবতা কে দেখতে এলাম।

আরে আপনি কি বলছেন এসব।

অর্পণ নিচে নেমে এসে বাড়ির ভিতরে নিয়ে গেলো এবং বাইরের সোফায় দুজনে বসল। এবং কিছুক্ষণ পর বলল, স্যার আপনার জন্য গতকাল রাত্রি জেগে কিছু খাবার বানিয়েছি যদি খেতেন তবে আমি ধন্য হতাম।

আপনি আমার জন্য খাবার বানিয়েছেন কিন্তু কেন।

আমি আপনাকে খাইয়ে জয়নিং করতে চাই অফিসে। তাই সকাল সকাল আমি খাবার নিয়ে হাজির আপনার বাড়িতে।

এটা বড় বাড়াবাড়ি হয়ে গেছে, এসবের কোনো দরকার ছিলই না।

ঠিক আছে কথা পরে হবে স্যার আগে আপনি খেয়ে নিন।

ঠিক আছে,

ডি.এম স্যার কে খাবার খাইয়ে রিতু বাড়ি আসলো,এবং অতি তাড়াতাড়ি করে অফিসে বেরিয়ে গেলো। আজ রিতুর জীবনে পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আনন্দের দিন। অফিস যেতেই অফিসের কর্মচারিরা ফুল এবং মালা নিয়ে অপেক্ষায় আছে বি.ডি.ও অফিস।কারণ আজ প্রথম কোনো মহিলা বি.ডি.ও অফিসার আসছেন অফিসে। রিতু অর্পনের অধিনস্থ ব্লকের একজন বি.ডি.ও। বা ব্লকের প্রধান আধিকারিক।

প্রথম দিনেই স্থানীয় নানান রাজনৈতিক নেতা ও ও অফিসার মিষ্টি মুখ করান রিতুর। সারাদিন সরকারি কাজ চুলোর ভিতরে গেলো, মেতে উঠলো বি ডি ও অফিস।

পরের দিন রিতু অফিস গিয়ে পর্যবেক্ষক অফিসার কে বললেন যে তিনি গোটা ব্লক টা ঘুরে দেখতে যাবে এবং এলাকার মানুষ কেমন আছে তা খতিয়ে দেখবে। স্বয়ং বি ডি ও বা রিতু ম্যাডাম।

প্রথম গ্রামে প্রবেশ করেই বাড়ি বাড়ি অভিজান চালায় বিশেষ করে বৃদ্ধ মা বাবাদের প্রতি নজর দেন বি ডি ও।

এমন একজন বৃদ্ধের বাড়ি পৌঁছেছে যে সে বৃদ্ধ নানান অসুবিধেয় জর্জরিত। ছেলে বৌমা চাকরি করে ওই ব্লকের সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে।

বৃদ্ধের মুখে এবং স্থানীয়দের অভিযোগ শুনে রিতু ম্যাডাম অফিস ফিরে যায়। এবং সেই দিনই ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে চিঠি যায় যে, বৃদ্ধার ছেলে বৌমাকে আগামীকাল আমার অফিসে দেখা করে। মাস্টার কে নানান বকাবকি করে বি ডি ও।

Kajal Paul is one of the Co-Founder and writer at BongDunia. He has previously worked with some publishers and also with some organizations. He has completed Graduation on Political Science from Calcutta University and also has experience in News Media Industry.

Leave A Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.