বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ জানুয়ারি মাস থেকেই ভারতে করোনা সংক্রমণ শুরু হয় । তারপর দিল্লির নিজামকাণ্ডের পর ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে গোটা দেশে । সবচেয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিল মুম্বই-এর ধারাভি বস্তিতে করোনা সংক্রামিত হবার সংবাদে । অবশেষে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছ থেকে স্বীকৃতি পাওয়া গেল আপাতত মুম্বইয়ের ঘনবসতিপূর্ণ ধারাবিতে করোনার সংক্রমণকে নিয়ন্ত্রণে আনা গিয়েছে । আর ধারাভির মত জায়গায় করোনা নিয়ন্ত্রন সম্ভব হলে গোটা দেশেও করোনামুক্ত করা সম্ভব ।
এশিয়ার সবচেয়ে বড় বস্তি মুম্বইয়ের ধারাভি বস্তি । সেখানে জনবসতি খুবই ঘন । সেই বস্তিতে যখন করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ল, তখন গোটা দেশ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিল । অনেকেই ধারনা করেছিল, ধারাভির মত বস্তি এলাকায় একবার করোনা সংক্রমণ শুরু হলে গোষ্ঠী সংক্রমণ কিছুতেই ঠেকানো সম্ভব হবে না । অবশেষে ভারত সেই অসম্ভব কাজ করে দেখিয়েছে । ধারাভিতে এখন করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে । এই কারনেই স্বীকৃতি দিয়ে হু জানিয়ে দিল, আগ্রাসী ভূমিকা পালন করলে করোনার সংক্রমণ যে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব , সেটাই মনে করিয়ে দেয় এই ধারাভি ।
গতকাল সাংবাদিক সম্মেলনে হু প্রধান টেড্রস আধানম গেব্রেইয়েসাস (Tedros Adhanom Ghebreyesus) গোটা বিশ্বে বেশ কিছু দেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের জন্য যে ভুমিকা পালন করেছে তার উল্লেখ করেন । বিশেষ করে তিনি ইতালি, স্পেন, সাউথ কোরিয়ার কথা উল্লেখ করেন । পাশাপাশি এশিয়া মহাদেশের সবচেয়ে বড় বস্তি ধারাবির কথাও উল্লেখ করেন । টেড্রস আধানম গেব্রেইয়েসাস জানান, “গত ছয় মাসে বিশ্বব্যাপী করোনারোগীর সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এমন কিছু উদাহরণও পাওয়া গিয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে যেখানে দেখা যাচ্ছে যে করোনার প্রাদুর্ভাব যতটাই ভয়াবহ হোক না কেন, আগ্রাসী ভূমিকা পালন করলে তাকে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।এমনই কিছু উদাহরণ হল, ইতালি, স্পেন, সাউথ কোরিয়া, এমনকি মুম্বইয়ের একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা ধারাবি। টেস্টিং, ট্রেসিং, আইসোলেটিং আর ট্রিটিং-এর মধ্যে দিয়ে ভাইরাসকে দমন করে দেওয়া সম্ভব, সেটাই দেখিয়ে দিয়েছে ধারাবি।”
টেড্রস আধানম গেব্রেইয়েসাসের ধারাভি নিয়ে মন্তব্যের পরে টুইট করেন মহারাষ্ট্র বিধানসভার মন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের ছেলে আদিত্য। তিনি বলেন, “ধারাবির কাছে এটা বিশাল বড়ো একটা স্বীকৃতি। আমরা সবাই মিলে ওখানে ভাইরাসকে তাড়া করেছি। এ রকম ভাবেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।” এই মুহূর্তে ধারাভির করোনা পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রনে আনা গেছে । মে মাসে সেখানে দিনে গড়ে ৫০-এরও বেশি আক্রান্তের খোঁজ মিলেছিল । জুনে সেখানে দৈনিক গড় সংক্রমণ ছিল ১৮ জন। জুলাইয়ে সেটা আরও কমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১২ জনের শরীরে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এর ফলে ধারাবিতে মোট রোগীর সংখ্যা এখন বেড়ে হয়েছে ২,৩৫৯। তবে এর মধ্যে সক্রিয় রোগী রয়েছেন মাত্র ১৬৬ জন।