বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ কারো রূপের প্রশংসা করতে গেলে প্রায়ই শোনা যায় “মাথা ভর্তি কালো চুল”, কিন্তু মাথা ভর্তি চুল হয়ত আছে, তবে সেটি আর কালো থাকছে না, অকালেই পেকে সাদা হয়ে যাচ্ছে । বর্তমান কর্মব্যস্ততার যুগে  চুল পাকা প্রত্যেক মানুষের জন্যই একটি বড়ো সমস্যা। অনেকেরই বিভিন্ন কারণে অল্প বয়সে চুল পাকার সমস্যা দেখা দেয়। কেন এমন হচ্ছে ? গবেষকরা বলছেন, চুল পাকার জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী  উচ্চ মানসিক চাপ ।

বেশ কয়েকটি কারনে আমাদের মাথার চুল পাকে । যার মধ্যে , মাথার ত্বকে পর্যাপ্ত ভিটামিন, মিনারেল বা খনিজের অভাব হলে অকালে চুল পাকে। তাছাড়া হরমোনের বা পরিবেশগত সমস্যায় অকালে চুল পাকে।  তবে সম্প্রতি গবেষণায় উঠে এসেছে, আমাদের মাথার চুল অকালে পেকে সাদা হবার পিছনে সবচেয়ে বেশী দায়ী উচ্চ মানসিক চাপ । চুল পাকার কারন নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে, ইঁদুরের ওপর চালানো এক পরীক্ষায় বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, যেসব স্টেম সেল গায়ের রং এবং চুলের রং নিয়ন্ত্রণ করে তা তীব্র ব্যথার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এভাবে দেখা গেছে, মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যে কালো রঙের ইঁদুরের গায়ের সমস্ত লোম পেকে সাদা হয়ে গেছে।

স্বাভাবিকভাবে দেখা যায়, ত্রিশ বছরের পর থেকে দু একটা করে মাথার চুল পাকতে শুরু করে । তবে চুল পাকা অনেক সময় বংশগতির উপর নির্ভর করে । অনেককেই দেখা যায়, ৪০/৫০ বছর বয়েসেও দিব্বি একমাথা কালো চুল নিয়ে ঘুরে বেরাচ্ছেন । ত্রিশ বছরের পর নারী-পুরুষ যে কারোই চুল সাদা হতে শুরু করতে পারে, কারন, বয়স বাড়ার লক্ষণ হিসেবে চুলের রং পরিবর্তন হয়। তবে মানসিক চাপে যে চুল পেকে সাদা হয়ে যায়, এ কথা অনেকেই জানেন । কিন্তু বিজ্ঞানীরা এতদিন জানতেন না, ঠিক কী কারনে এটি হয় ?

আশার কথা, মানসিক চাপে কীভাবে চুল সাদা হয় বিজ্ঞানীরা এবার সেই রহস্য ভেদ করতে সমর্থ হয়েছেন। ব্রাজিল এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই গবেষণার ফলাফল ধরে সামনের দিনে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চুলের রং বদলে যাওয়া ঠেকানোর ওষুধ আবিষ্কার সহজ হতে পারে। ফলে আগামী দিনে চুল কালো রাখতে কিছুদিন পরপর পরপর আপনাকে কলপ বা অন্য কোন কিত্রিম কিছু ব্যবহার করতে হবে না । 

ব্রাজিলের সাও পাওলো ইউনিভার্সিটি এবং হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস—এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে মেলানোসাইট স্টেম সেল সম্পর্কিত এবং এটি  মানব দেহের একটি অন্যতম উপাদান মেলানিন উৎপাদন করতে পারে  আর আমরা সকলেই কম বেশী জানি যে, শরীরের মেলানিনের মাত্রার হেরফেরের কারণে চুল ও গায়ের রঙের  তারতম্য ঘটে । নেচার সাময়িকীতে প্রকাশিত গবেষণায় হার্ভার্ডের বিজ্ঞানী অধ্যাপক ইয়া-সুয়ে সু জানিয়েছেন, আমরা এখন নিশ্চিত যে মানসিক চাপের কারণে মানুষের চুল অকালে পেকে যেতে পারে এবং সেটা কীভাবে হয়, এখন আমরা তা জানি। তবে, ইঁদুরের উপর পরীক্ষা চালান হলেও, এখনও পর্যন্ত মানব শরীরে পরীক্ষা করার কাজ শুরু করা হয়নি ।

এবিষয়ে হার্ভার্ডের বিজ্ঞানী অধ্যাপক ইয়া-সুয়ে সু আরও জানিয়েছেন,  “নতুন এই আবিষ্কার মানুষের ওপর পরীক্ষা করা শুরুর প্রক্রিয়া আরম্ভ করবে মাত্র। সেই সঙ্গে শরীরের অন্যান্য অংশের চুলও কেন পাকে সেটাও বুঝতে পারছি আমরা। আমি ধারণা করেছিলাম স্ট্রেস বা মানসিক চাপ শরীরের জন্য ক্ষতিকর, কিন্তু আমাদের ফলাফলে আমরা যা দেখেছি তা কল্পনারও বাইরে। অল্প কয়েকদিনের মধ্যে পিগমেন্ট-পুনরুত্পাদনকারী স্টেম সেলগুলো সম্পূর্ণ নিঃশেষ হয়ে যায় এবং এরপর আর আপনার পিগমেন্ট তৈরি হবে না। ফলে ক্ষতিটা স্থায়ী রূপ লাভ করে।” 

Kajal Paul is one of the Co-Founder and writer at BongDunia. He has previously worked with some publishers and also with some organizations. He has completed Graduation on Political Science from Calcutta University and also has experience in News Media Industry.

Leave A Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.