বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্ক: আসামের এনআরসির পরে পশ্চিম বঙ্গের জাতীয় নাগরিক পঞ্জি নিয়ে সকল স্তরের মানুষ উদ্বীগ্ন। পশ্চিম বঙ্গে ১৯৭১ সালের আগে বসবাসকারীরাও এ নিয়ে শঙ্কিত। কেন্দ্র সরকারের নাগরিক পঞ্জি তৈরি করার বিরোধিতা করছে পশ্চিম বঙ্গ রাজ্য সরকার। তৃণমূল, বামফ্রন্ট এনআরসি এর বিরোধীতা করলেও ভারতের বিজিপি সরকার এনআরসি পক্ষে। ভারতের বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব আবার এনআরসি ঘোষণা করেন। পাশাপাশি পশ্চিবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানাজী প্রতিবাদ করছেন। আজ বৃহস্পতিবার একটি বড় প্রতিবাদ মিছিল করছেন।
বিভিন্ন শ্রেণী পেশার সাথে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে অবস্থানরত লেখক সাহিত্যিকরা এ বিষয়ে উদ্বিগ্ন রয়েছেন। পশ্চিম বঙ্গের বসবাসরত জনগনের একটি বড় অংশ বর্তমান বাংলাদেশ বা পূর্ববঙ্গ থেকে বিভিন্ন সময়ে এসেছে। ১৯৭১ সালের পূর্বে যারা এসেছেন তাদেরও বৈধ নাগরিক্ব প্রমানের নথি যোগাড় করতে হবে। যা যোগাড় করার বেগ লেখক সাহিত্যিকদেরও পোহাতে হবে।
বহু সাধারণ মানুষের সাথে বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব, সাহিত্যিক, রাজনীতিবিদ, গবেষক, নাট্যকারদের জীবন পেশার জন্য জড়ো হন পশ্চিমবঙ্গে। বিভিন্ন ভাবে তারা ভারত সরকারের বিভিন্ন কাজে সহায়তা করতেন। অনেকেই মনে করতে পারেন না তারা কবে ভারতে এসেছেন। কেউ তার বাবা মায়ের হাত ধরে চলে এসেছেন।
পশ্চিমবঙ্গে আসা নিয়ে সাহিত্যিক শীর্ষেন্দ মুখাজি বলেন, “কবে সীমানা পেরিয়েছি, সেটা তো আমার স্মৃতিতে আছে। কোন স্কুলে কতবছর পড়েছি, সেটাও আমার মনে আছে। কিন্তু এসবের যদি কাগজপত্র দিতে বলে, তা তো দিতে পারব না! তাকে কী আমাকে বার করে দেবে? সেটাই বা আমি মানব কেন? আর আসামে তো দেখছি, অনেকে বৈধ কাগজপত্র জমা দেওয়ার পরেও তাদের নাম বাদ দিয়ে দিয়েছে” সাহিত্যিক মিহির সেনগুপ্ত জন্মগ্রহণ করেন বরিশালে। ব্রজমোহন কলেজে পড়াশোনা করে ১৯৬৩ সালে ভারতে চলে আসেন। ৭৩ বছর বয়সে যখন বাড়ির বাইরে যাওয়াই কষ্টের কিভাবে সংগ্রহ করবেন সার্টিফিকেট।
বিশিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করেন ভারতীয় উপমহাদেশে এই সমস্যা দেশভাগের সময় থেকে চলে আসছে। যারা পূর্বপুরুষের ভিটেমাটি ফেলে চলে এসেছেন এখন যদি তাদের ফিরে যেতে হয় কোথায় যাবেন। আর যে জায়গা ফেলে এসেছেন তা তো কেউ দখল নিয়ে বসে এসেছে আর সে দেশ কি তাদের ফিরিয়ে নেবে।
আবার অনেকে কয়েক প্রজন্ম থেকে পশ্চিমবঙ্গে থাকলেও নিজের জন্মনিবন্ধন আছে কিনা জানেন না। এখন বিজেপি সরকারের এই এনআরসি নিয়ে আসেন চিন্তায়। আবার পশ্চিমবঙ্গের অনেকেই মনে করেন বাংলাদেশ থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে এনআরসির বিকল্প নাই।