দক্ষিণবঙ্গে বাইরের আবহাওয়া দেখে যে কেউ ভাবতে পারে, এটা কি সত্যিই আষাঢ় মাস ? একদিকে প্রবল বৃষ্টির তোড়ে উত্তরবঙ্গ ভেসে যাচ্ছে, সরকারিভাবে লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে, রেল লাইনে জল, হাইওয়ের উপর দিয়ে বইছে নদী, জনজীবন জলের কারণে সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত । অপরদিকে দক্ষিণবঙ্গে মানুষ গরমে হাঁসফাঁস করছে । চাষিরা জলের অভাবে চাষের জমির পাশেই দীর্ঘশ্বাস ফেলছে আকাশের দিকে তাকিয়ে কখন বৃষ্টি নামবে এই আশায় ।
এরই মধ্যে আশার কথা শোনালেন আবহাওয়া দপ্তর । আবহাওয়া দপ্তর এর রিপোর্ট অনুযায়ী চলতি মাসের শেষে অর্থাৎ দুই চার দিনের মধ্যেই উত্তর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট একটি গভীর নিম্নচাপের ফলে মৌসুমী বায়ু বৃষ্টি নিয়ে বাংলায় ঢুকার সম্ভাবনা । এই মাসে বাংলায় পাট এবং ধান চাষ করা হয় । যদি পর্যাপ্ত জল না হয়, তাহলে ধান এবং পাট চাষ মার খাবে । ধারণা করা হচ্ছে, এই নিম্নচাপের ফলে বর্ষাকে আবার পুনরায় তাঁর নিজের মহিমায় ফিরে পাওয়া যেতে পারে । এই মৌসুমে মৌসুমী বায়ু বাংলায় ঢুকলেও নিম্নচাপের কারনে সে তার বর্ষা নিয়ে রওনা দেয় পাহাড়ের কোলে । সেখানে তরাই, ডুয়ার্স এর বিস্তীর্ণ এলাকা ঢেলে বৃষ্টি হচ্ছে । বুধবার সকাল পর্যন্ত ৪০৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়ে ১০০ বছরের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে । অথচ পরিসংখ্যান বলছে জুনের এই বৃষ্টিতে প্রায় ৫০-৬০ শতাংশ ঘাটতি রয়েছে এখনও বৃষ্টির । জলীয় হাওয়ার কারণে গরম কমছে না । একটা গুমোট পরিবেশ তৈরি হয়েছে ।
আলিপুর দপ্তর এর এক আধিকারিক সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “ আগের নিম্নচাপের থেকে এটি বেশি শক্তিশালী হবে। তাই ৩০ শে জুন থেকে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে বিক্ষিপ্ত ভাবে হলেও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে । তবে একথা সত্যি নিম্নচাপটি উড়িষ্যা ঘেঁষে পশ্চিমবাংলায় ঢুকবে । ফলে প্রথম বৃষ্টির ফোঁটা ওড়িশা তেই পড়ার সম্ভাবনা বেশি ।