বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্ক: কাশ্মীর ইস্যুতে লন্ডনে অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনে এই নিয়ে পরপর দুই বার সহিংস বিক্ষোভের ঘটনা ঘটলো।
চলতি বছর ২০১৯ এর বিগত ৫ই আগস্ট তারিখে ভারত সরকার ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ এবং ৩৫এ অনুচ্ছেদ দুটি খারিজ করার কথা ঘোষণা করেন। ভারত সরকারের এই বিবৃতির পর থেকেই জম্মু ও কাশ্মীর দুটি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত হয়েছে। কিন্তু ভারতের এই একতরফা সিদ্ধান্তকে কোনমতেই মেনে নিতে পারেনি প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তান।
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যবর্তী একটি ঐতিহাসিক সমস্যা কাশ্মীর। কিন্তু কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করার বিষয়ে পাকিস্তানের সাথে কোনও প্রকার আলোচনা ছাড়াই ভারত সরকার একতরফা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে পাকিস্তান। এপ্রসঙ্গে ভারত সরকারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মহলে অভিযোগও জানিয়েছিল পাকিস্তান, কিন্তু তাতেও বিশেষ কিছু ফল হয়নি।
কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে দেওয়ার পর থেকে সীমান্তে শান্তি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করে চলেছে ভারত সরকার। কিন্তু ভারত সরকারের সেই কাজে বারে বারে বাঁধা দিয়ে চলেছে পাকিস্তান। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকবার ভারত-পাক নিয়ন্ত্রণরেখায় গুলি বর্ষণ হয়ে গেছে। এছাড়াও, ভারত সরকারকে চাপে ফেলবার আরেকটি কূটনৈতিক পদ্ধতি অবলম্বন করেছে পাক সরকার। কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করার পর পাক সরকার গোটা বিশ্বে গুজব রটিয়ে দেন যে, ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে মুসলিম জাতির ওপর চরম নির্যাতন করে চলেছে ভারত সরকার। একারণে বিশ্ব জুড়ে মুসলিম ধর্মের মানুষেরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন।
ইতিপূর্বে চলতি বছর স্বাধীনতা দিবস (১৫ই আগস্ট) এর দিনেও সহিংস বিক্ষোভ এর ঘটনা দেখা গিয়েছিল লন্ডনে অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনে। এরপর পুনরায় গত মঙ্গলবার (৩শরা সেপ্টেম্বর) হাইকমিশনের সামনে সহিংস প্রতিবাদে মেতে উঠতে দেখা যায় বিক্ষোভকারী’দেরকে।
সংবাদ সূত্র থেকে জানা যায় যে, যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রায় ১০ হাজার ব্রিটিশ পাকিস্তানি একত্রিত হয়ে এই বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করেন। এভাবে চলতে চলতে বিক্ষোভের একপর্যায়ে তারা ভারতীয় হাইকমিশনের জানালার কাচ ভেঙে ফেলেন। এ সময় অত্যন্ত বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশবাহিনী ওই স্থানে উপস্থিত হয় এবং চার জন’কে গ্রেফতার করে। সহিংস এই বিক্ষোভের ঘটনায় লন্ডন পুলিশ চার জনকে আটক করেছে।
উক্ত ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ভারতীয় হাইকমিশন সামাজিক গণমাধ্যমে ভাঙা জানলা’র ছবিসহ এক টুইট বার্তায় লিখেছে, “আজ ৩ সেপ্টেম্বর লন্ডনের ভারতীয় হাইকমিশনে আরও একটি সহিংস বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে। হাইকমিশন চত্বর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভবনের কাচ ভেঙেছে।”
Another violent protest outside the Indian High Commission in London today, 3 September 2019. Damage caused to the premises. @foreignoffice @UKinIndia @MEAIndia @DominicRaab @DrSJaishankar @PMOIndia @tariqahmadbt pic.twitter.com/2sv0Qt1xy8
— India in the UK (@HCI_London) September 3, 2019
উল্লেখ্য, গতকাল ভারতীয় হাইকমিশনে ঘটে যাওয়া সহিংস বিক্ষোভের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন লন্ডনের মেয়র সাদিক খান। উক্ত ঘটনাকে অগ্রণযোগ্য অভিহিত করে তিনি বলেন, “আমি অগ্রহণযোগ্য এমন আচরণের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। এ বিষয় পদক্ষেপ নিতে লন্ডন পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করবো আমি।”