বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এর সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী’র মিত্রতার সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। সম্প্রতি ২২শে সেপ্টেম্বর হাউস্টনে আয়োজিত ‘হাউডি মোদী’ সভায়ও ফের সেই দৃষ্টান্ত নজরে পড়েছিল। প্রিয় বন্ধুকে দেওয়া কথা রাখতে শত ব্যস্ততার মধ্যেও মোদী’র সভায় আসতে দেরি করেননি ট্রাম্প। একসঙ্গে একটানা মন্তব্য রেখেছেন দু’জন, পাশাপাশি দু’জনকে দু’জনের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হতে দেখে মুগ্ধ হয়েছে সভায় উপস্থিত সকলে।
কিন্তু ‘হাউডি মোদী’ সভার ২৪ ঘণ্টা পেরোতে না পেরোতেই সুর পাল্টে গেলো ট্রাম্প-এর। ২৩শে সেপ্টেম্বর (সোমবার) পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এর সঙ্গে বৈঠকে বসে মোদী’র সাথে বন্ধুত্ব ভুলে গেলেন তিনি।
চলতি বছর ২০১৯ এর বিগত ৫ই আগস্ট তারিখে ভারত সরকার কতৃক কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল ঘোষণা করায় ভারতের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মহলে বারংবার অভিযোগ করছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তান। তবে ভারত-পাক দ্বন্দের মধ্যস্থতা করতে চাইছেন না কেউই। তবে এই নিয়ে তৃতীয় বার কাশ্মীর ইস্যুতে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিলেন ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্ট এর এহেন আচরণে ফের একবার অস্বস্তিতে পড়ল নয়াদিল্লি।
সোমবার ইমরানের সঙ্গে বৈঠকে ট্রাম্প বলেন, “আমি পাকিস্তানের উপরে ভরসা করি। আমি চাই কাশ্মীরে সবাই ভালো থাকুন। প্রধানমন্ত্রী মোদি ও প্রধানমন্ত্রী খানের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভালো। ওরা দু’জনেই যদি বলেন যে আমাদের একটা সমস্যা দূর করার আছে, তা হলে আমি সেটা করতে পারি।” পাশাপাশি ট্রাম্পের দাবি, “আমি খুবই ভালো মধ্যস্থতাকারী।”
ইতিপূর্বে ইমরানের পাশে বসে ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, কাশ্মীর ইস্যুতে মোদী’ই তাকে মধ্যস্থ হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। তবে ভারত সরকার তার প্রতিবাদ করায় পরবর্তীতে আর মধ্যস্থতা হতে চাননি ট্রাম্প।
২২শে সেপ্টেম্বর ‘হাউডি মোদী’ সভাতেও সন্ত্রাস নিয়ে পাকিস্তানকে তুলোধোনা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। একইসাথে সেই মঞ্চে মৌলবাদী জঙ্গি’দের বিরুদ্ধে যৌথ লড়াইয়ের কথা বলেন ট্রাম্পও। কিন্তু তার পরদিনই ইমরানের সামনে সুর পাল্টে তিনি বলেন, “কাল ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণাত্মক মন্তব্য করতে শুনলাম। সেটা আশা করিনি।” সভায় দেওয়া বক্তব্যে মোদী যে পাকিস্তানকে ইঙ্গিত করেছিলেন, তা ট্রাম্প জানতেন, তবে ট্রাম্প এর জবাব, “আমি ইরানকেই বেশি ইঙ্গিত করেছি।”
এপ্রসঙ্গে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, এটা অবশ্য প্রত্যাশিতই ছিল। কারণ হিসাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, “পাকিস্তানকে পুরোপুরি ছুড়ে ফেলা ট্রাম্পের পক্ষে সম্ভব নয়। মনে রাখতে হবে ট্রাম্প জানিয়েছেন যে দু’পক্ষ চাইলে তবেই তিনি সালিশি করবেন। ভারত যে রাজি নয় তা তিনি জানেন।”