নরেন্দ্র মোদির ডিজিটাল ইন্ডিয়ার অনুপ্রেরণায় বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি শুরু করলেন ‘দিদিকে বলো ডট কম’ নামে একটি ওয়েবসাইট । শুধু গ্রাম নয়, সারা রাজ্যের যেকোনো কোনায় বসবাসকারী, যেকোনো রাজ্যবাসী তাদের সমস্যার কথা সরাসরি জানাতে পারবেন ‘দিদিকে বলো ডট কম’ এই সাইডে । ‘দিদিকে বলো’ নাম দিয়ে তৃণমূলের প্রধান মমতা ব্যানার্জি জনগণের সাথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনের জন্য জনসংযোগ মুলক কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন ।
শুধু ডাক দিলেই তো হবে না, তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জির এই উদ্যোগের কথা রাজ্যের ছোট-বড়-মাঝারি সমস্ত তৃণমূলের নেতাকর্মীরা মাঠে নেমে পড়েছেন । সবাইকে এই পরিষেবার কথা জানানোর জন্য, কিভাবে সাধারণ মানুষের কাছে মমতা ব্যানার্জির এই ‘দিদিকে বলো’ উদ্যোগ পৌঁছাবে ? সেটি একটি প্রশ্ন ।
কারণ সবাই তো ইন্টারনেট সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নয় । এই কারণে শুধু ‘দিদিকে বলো’ ওয়েবসাইট তৈরি করে মমতা ব্যানার্জি ক্ষান্ত হননি । তিনি একটি টেলিফোন নাম্বার ৯১৩৭০৯১৩৭০ দিয়েছেন । এই নাম্বারে ফোন করে রাজ্যের যেকোনো অধিবাসী নিজেদের সমস্যার কথা, নিজেদের মনের কথা ওয়েবসাইট ছাড়াও মমতা ব্যানার্জিকে সরাসরি জানাতে পারবেন । এই ভাবেই রাজ্যের এবং শহরের প্রতিটি কোনায় কোনায় পৌঁছাতে চলেছেন আমাদের মুখ্যমন্ত্রী ।
2019 সালের লোকসভা নির্বাচনে আশানুরূপ ফল করতে পারেনি তৃণমূল । অপরদিকে রাজ্যের প্রধান বিরোধীদল বিজেপি , তাদের আশাতিরিক্ত ফল করে আগামী বিধানসভা ভোটে শাসকদলের ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছে । যেটা শাসকদলের রক্তচাপ কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়ার পক্ষে যথেষ্ট । এরপরে মাঝে মাঝেই হুমকি দিচ্ছে, “এই অমুক বিধায়ক ভাগিয়ে নিয়ে গেলাম’ ,এই অমুকের নাম লিখে রেখেছি, যখন তখন তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেবে’ এরকম সব খবর ।
এরপরে গোদের উপর বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়ে কাট মানি প্রসঙ্গ । যেখানে রাজ্যের ছোটখাটো নেতা বা বড় ধরনের নেতারাও কোন কাজ করতে পারেনি, সাধারণ মানুষ বীতশ্রদ্ধ হয়ে উঠেছে সেই তৃণমূল নেতাদের উপর । সেই সময় মমতা ব্যানার্জি ‘দিদি কে বল ডট কম’ নামে ওয়েবসাইট খুলে জনগণের সাথে সরাসরি সংযোগ করার ব্যবস্থা করলেন ।
যদিও মুখ্যমন্ত্রীর এই জনসংযোগ মূলক উদ্যোগ ‘দিদিকে বলো ডট কম’ কত খানিক কার্যকারী হবে, তা নিয়ে একটা প্রশ্ন শুরুতেই রয়ে গেছে । প্রথমত, ওয়েবসাইট সহজে খুলছে না । দ্বিতীয়ত, জনসংযোগ মুলক যে নাম্বারটা দেওয়া হয়েছে, সেখানে প্রথম দিনই লক্ষাধিক ফোন গেছে । একজন মানুষের পক্ষে লক্ষাধিক ফোন এটেম করা কিভাবে সম্ভব হবে ? সেটা বলা মুশকিল ।
তবে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জি বলেছেন, “প্রথমে জনগণ তাদের অভাব অভিযোগের কথা সরাসরি সুপ্রিমোর কাছে তুলে ধরবেন । এরপর তিনি সেই অভিযোগ জেলা স্তরে সুরাহার জন্য পাঠাবেন । নতুবা বিবেচনা করে রাজ্য স্তর থেকে সুরহা করবেন” । সব মিলিয়ে এখন ‘দিদিকে বলো’ কার্যকারী করতে এবং জনপ্রিয় করতে, জলে, জঙ্গলে, মাঠে ময়দানে নেমে পড়েছে তৃণমূলের ছোট থেকে বড় সব ধরনের নেতা- কর্মীরা ।