বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ ইউরোপে এমন বেশ কয়েকটি দেশ রয়েছে যেখানে পুরুষের অভাব বেশি । অর্থাৎ সেই দেশগুলিতে মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের সংখ্যা বেশ কম ।তবে ইউরোপিয়ান ছয়টি দেশে মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের শতকরা হার অনেকটাই কম । দেখে নেওয়া যাক কোন কোন ইউরোপিয়ান দেশগুলিতে পুরুষ সংকট চলছে !
ইউরোপে যে দেশগুলিতে মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের সংখ্যা বেশ কম সেই দেশ গুলি হল রাশিয়া, লাটভিয়া, বেলারুশ, লিথুনিয়া, আর্মেনিয়া, ইউক্রেন । সবচেয়ে বেশি সংকট লাটভিয়ায় । পরিসংখ্যান থেকে জানা যাচ্ছে, লাটভিয়ায় প্রতি ১০০ জন পুরুষের তুলনায় নারীর সংখ্যা ১১৮.০।তার পরেই আছে লিথুনিয়া । সেখানে প্রতি ১০০ জন পুরুষের তুলনায় নারীর সংখ্যা ১১৭.২।
আর্মেনিয়ায় প্রতি ১০০ জন পুরুষের তুলনায় নারীর সংখ্যা ১১৫.৫। রাশিয়ায় প্রতি ১০০ জন পুরুষের তুলনায় নারীর সংখ্যা ১১৫.৩। বেলারুশে প্রতি ১০০ জন পুরুষের তুলনায় নারীর সংখ্যা ১১৫.২। ইউক্রেনে প্রতি ১০০ জন পুরুষের তুলনায় নারীর সংখ্যা ১১৫.৮৭। কেন নারী পুরুষের মধ্যে এই বিশাল তফাৎ সৃষ্টি হচ্ছে এই দেশগুলিতে ? সমাজবিজ্ঞানী বাইবা বেলা বলছেন, এইসব দেশগুলোতে মেয়েরা যে বয়সে সংসার গড়ার জন্য তৈরী হয় সেই বয়সে দেখা যায় ছেলেরা হয় মারা যাচ্ছে নয়তো আত্মহত্যা করছে। আর এই আত্মহত্যার সংখ্যা হচ্ছে তাদের স্বাভাবিক মৃত্যুর চারগুণ।
সমীক্ষা করে দেখা গেছে এই দেশগুলিতে পুরুষ এবং মহিলা জন্মের হার মোটামুটি সমান । কিন্তু নারী-পুরুষের ভারসাম্যহীনতা তৈরি হচ্ছে মাঝ বয়সে আসার পর । দেখা গেছে, ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়েসীদের মধ্যে যে‘কজন মেয়ে মারা যাচ্ছে – তার চেয়ে তিনগুণ বেশী মারা যাচ্ছে ছেলেরা। এর অর্থ হচ্ছে, ওই বয়েসীদের মধ্যে গাড়ি দুর্ঘটনা, মাদকাসক্তি, কর্মস্থলে দুর্ঘটনা ইত্যাদির ক্ষেত্রে মেয়েদের চেয়ে ছেলেদের ঝুঁকি বেশী।
সবচেয়ে পুরুষ সংকট তৈরি হয়েছে যে দেশে সেটি লাটভিয়া । বাল্টিক রাষ্ট্র লাটভিয়া সাবেক কমিউনিষ্ট সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে এসে পুঁজিবাদী রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে প্রায় দুই দশক হতে চললো। কিন্তু, পুঁজিবাদি ব্যবস্থায় লাটভিয় নারীরা যতটা এগিয়েছেন, ততোটাই পিছিয়ে পড়ছেন সেখানকার পুরুষরা।
পুরুষদের চেয়ে মেয়েরা লাটভিয়ায় গড়ে এগারো বছর করে বেশী বাঁচছেন। ফলে, তৈরী হয়েছে নারী-পুরুষের মধ্যে এক সামাজিক ভারসাম্যহীনতা। নারী-পুরুষের এই ভারসাম্যহীনতার প্রকৃষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায় লাটভিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে – এখানে শিক্ষার্থীদের মধ্যে পুরুষের চেয়ে নারীর সংখ্যা ৫০% বেশী।