বাংলাদেশের সব বিভাগেই কিছু না কিছু রেলপথ থাকলেও দেশের বৃহত্তম বিভাগ বরিশালে কোন রেলপথ নাই। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর সরকার বরিশালে রেলপথ নির্মামের সম্ভাব্যতা যাচাই শুরু করেছে। ভাঙ্গা থেকে পায়রা বন্দর পথ এ রেলপথ নির্মানের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। রেললাইনের জন্য নকশা, টেন্ডার ডকুমেন্ট প্রস্তুতির সম্ভাব্যতা যাচাই শুরু করেছে রেলপথ মন্ত্রনালয়।
এই রেলপথ নির্মানের অংশ হিসাবে ভূমি অধিগ্রহণে সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্থদের সাথে গত বুধবার রেলমন্ত্রনালয়ের উর্ধ্বতম কর্মকর্তারা বৈঠক করেছেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের জ্যেষ্ঠ পরামর্শক (সিনিয়র কনসালটেন্ট) আখতারুল ইসলাম খান ও জুনিয়র কনসালটেন্ট আহসান আলী জহিরসহ রেলপথ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
ভাঙ্গা-পায়রা রেলপথ নির্মানের জন্য কাজ করছে ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ডিজাইন । এই ফার্মের আহসান আলী বলেন, “ভাঙা থেকে পায়রা পর্যন্ত ২১২ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করা হবে। যে রেলপথ ৩২৮ ফুট প্রসস্থ জায়গার মাঝখান দিয়ে নির্মিত হবে। প্রথম পর্যায়ে রেলপথটি হবে সিঙ্গেল লেনের। তবে ৩২৮ ফুট বা ১ শত মিটার প্রশস্ত জায়গা থাকায় পরবর্তীতে এখানে ডাবল লেনেরও রেলপথ তৈরি করা যাবে। সে ক্ষেত্রে নতুন করে ভূমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন হবে না।
কনসালটেন্ট ফার্মের আহসান আরো বলেন, ভাঙা থেকে পায়রা পর্যন্ত রেলপথটি বরিশাল, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী ও বরগুনাসহ সাতটি জেলার মধ্য দিয়ে যাবে। এখানে থাকবে ১২টি প্রধান রেল স্টেশান। এর মধ্যে শুধু বরিশাল নগরীসহ জেলায় থাকবে তিনটি। এর মধ্যে একটি বরিশাল এয়ারপোর্ট এলাকায়, একটি বরিশাল নগরীর ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাশিপুর এলাকায় এবং অপরটি বাকেরগঞ্জ উপজেলায়।
প্রসঙ্গত, আহসান আরও জানান, বরিশাল জেলার মধ্যবর্তী স্থান ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া এলাকায় আরও একটি স্টেশন থাকবে। যদিও ১২টি প্রধান স্টেশনের বাইরে আরও কিছু সাব স্টেশনও থাকবে। তবে সাব স্টেশনের সংখ্যা এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়নি। তা ছাড়া পরবর্তীতে প্রধান স্টেশনের সংখ্যা আরও সংযোজন-বিয়োজন হতে পারে
কনসালটেন্ট ফার্মের তথ্য মোতাবেক, ২১২ কিলোমিটারের রেলপথের মধ্যে আড়াইশটি নতুন ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। যেগুলো সবই হবে সিঙ্গেল লেনের। এর মধ্যে বড় অর্থাৎ ১ শত মিটার করে ৮টি ব্রিজ থাকবে। বাকিগুলো ছোট আকারের হবে। রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে ৯ মাস আগে। এর মধ্যেই রেলপথ নির্মাণের সম্ভাব্য ম্যাপ তৈরি করা হয়েছে। ম্যাপ নিয়ে বর্তমানে মাঠ পর্যায়ে কাজ চলছে। রেলপথ নির্মাণে ভূমি অধিগ্রহণে সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে মতবিনিময় করা হচ্ছে।
ভূমি অধিগ্রহণের মত বিনিময়ের অংশ হিসাবে গত বুধবার বরিশাল নগরীর ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের মালেক মাঝির বাড়ির উঠানে বিকালে এক মতবিনিময়সভা হয়। সেখানে সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্তদের ভূমি অধিগ্রহণ সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত এবং সমাধানের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়। এ সময় স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরও উপস্থিত ছিলেন। ভূমি অধিগ্রহণ, মাঠ পর্যায়ে জরিপ ও সব আনুষঙ্গিক কার্যক্রম শেষে দরপত্র আহ্বান করা হবে।