বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ মার্কিন-রাশিয়া সম্পর্ক অনেকটা আদায় কাঁচকলায় । দুই শক্তিধর দেশ বরাবরই একে অপরকে টেক্কা দেবার প্রচেষ্টা চালিয়ে যায় । এবার করোনা ভ্যাকসিন তৈরি এবং তাঁর নাম ‘স্পুৎনিক ৫’ রাখার পিছনেও সেই ‘টেক্কা’ দেবার বিষয়টি পরিষ্কার । এই নামকরনের পিছনেও আছে ঐতিহাসিক কারন ।

ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে মহাকাশ গবেষণার লড়াইয়ে স্পুৎনিক-১ পাঠিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে টেক্কা দিয়েছিল রাশিয়া।এবার সেই ঐতিহাসিক সাফল্যের কথা মাথায় রেখেই করোনা ভ্যাকসিন তৈরি করার লড়াইয়ে স্মরণ করা হল সেই স্পুৎনিককে। তাই করোনাভাইরাসের টিকার নামকরণ করার ক্ষেত্রে সেই সাম্ফল্যের কথা মাথায় রেখে নাম দেওয়া হল  ‘স্পুৎনিক ৫’। আর এই নাম থেকেই স্পষ্ট বোঝা যায়, রাশিয়া এখনও ভুলতে পারেনি স্নায়ুযুদ্ধকালের সোভিয়েত যুগকে।

১৯৫৭ সালের ৪ অক্টোবর বিশ্বে মহাকাশে প্রথম পাড়ি দিয়েছিল সোভিয়েত কৃত্রিম উপগ্রহ ‘স্পুৎনিক-১’। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘নাসা’কে টেক্কা দেওয়ার সাফল্যে উদ্বেলিত হয়েছিল মস্কো।সে সময় সোভিয়েত রাশিয়ার সঙ্গে আমেরিকার লড়াইটা ছিল মহাকাশ নিয়ে। আর এবারের লড়াইটা করোনাভাইরাসের টিকা উদ্ভাবন নিয়ে। অতিমারি করোনা ভ্যাকসিন বের করা নিয়েও  বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে রাশিয়া কোভিড-১৯ টিকার অনুমোদন দিয়েছে বলে ঘোষণা করেছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। করোনা ভ্যাকসিনের এ অনুমোদনকে স্পুৎনিকের ওই সাফল্যের সঙ্গে এক করেই দেখছে রাশিয়া।

এদিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট আনুষ্ঠানিকভাবে করোনা ভ্যাকসিনের কথা ঘোষণা করার পরেই বিশ্ব জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে । রাশিয়ান ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডের প্রধান কিরিল ডিমিত্রিয়েভ বলেছেন, এরই মধ্যে বিশ্বের ২০টির বেশি দেশ থেকে ১০০ কোটি ডোজ টিকা সরবরাহের অনুরোধ পেয়েছেন তারা। তবে রাশিয়ান ভ্যাকসিন ঘোষণার পরেই বিতর্কও শুরু হয়েছে । কারন মানুষের ওপর দুই মাসেরও কম সময় পরীক্ষা চালানোর পর চূড়ান্ত পরীক্ষার আগেই অনুমোদন পেয়েছে এই ভ্যাকসিন ।

তবে আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়া করোনা ভ্যাকসিন তৈরির কথা ঘোষণা করার পর এবং মঙ্গলবার রুশ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অনুমোদন দেওয়ার পর এই ভ্যাকসিনের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরুর পথে আর কোনও বাধা নেই। বিশ্ব বাজারে এ টিকা এখন পরিচিতি পাবে বিশ্বের প্রথম সেই স্যাটেলাইটের নামে ‘স্পুৎনিক ৫’ হিসাবে। তবে তৃতীয় ধাপের চূড়ান্ত পরীক্ষার আগেই রাশিয়া তাড়াহুড়ো করে এই টিকা অনুমোদন দেওয়ায় আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে। সত্যিকারের বিজ্ঞান এবং নিরাপত্তার দিকটি উপেক্ষা করে মস্কো জাতীয় মান-মর্যাদাকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে কিনা- সেটিই প্রশ্ন বিজ্ঞানীদের।

Kajal Paul is one of the Co-Founder and writer at BongDunia. He has previously worked with some publishers and also with some organizations. He has completed Graduation on Political Science from Calcutta University and also has experience in News Media Industry.

Leave A Reply