আমরা জানি সারা বিশ্বের জনসংখ্যার দুই তৃতীয়াংশ হল শ্রমিক শ্রেণী বা খেটে খাওয়া মানুষ। সারা বিশ্বের আর্থিক এবং সামাজিক পোরিকাঠামোর মূলেই রয়েছে এরা। অথচ যুগ যুগ ধরে এরাই বিশ্বের সবচেয়ে বঞ্চিত সম্প্রদায়।না সমাজ না তথাকথিত সমাজের ওপর তলার মানুষরা এদের মানুষ বলে ভেবেছে, না এদের দাবী শুনেছে পূরণ করাতো দূরের কথা। আদিকাল থেকে পীড়িত হতে হতে তারা একসময় হয়ে উঠেছে বিপ্লবী, দাবী পূরণের লক্ষ্যে হাতে তুলে নিয়েছে অস্ত্র, করেছে অন্বেষণ, আন্দোলন, ঝরিয়েছে রক্ত, দিয়েছে প্রাণ। ১৮৮৬ সালে মার্কিন মুলূকে শিকাগোর রাজপথে সেদিন যে শ্রমিক এবং পুলিশের রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম হয়েছিল তাতে পুলিশের গুলিতে নিহত শ্রমিকদের স্বরণে সারা বিশ্ব জুড়ে পালিত হয় ” মে দিবস “।
উনিশ শতকের শেষের দিকে আজকের এই দিনে কর্মদিবস ৮ ঘণ্টায় নামিয়ে আনার দাবিতে পুলিশের গুলিতে যে রক্তপাত হয়েছিল তাই ইতিহাসের পাতায় মে দিবস হিসেবে স্মরণীয় হয়ে আছে। চিরকালই ইতিহাসের পাতায় শ্রমিকদের স্থান খুব কম তাই সেদিনের ঘটনায় মাত্র ১০ জন শ্রমিকের কথা বলা থাকলেও সেদিনের সে স্থানের চাপা পরা ইতিহাস জানে যে সেখানে প্রাণ দিয়েছিল কতো শ্রমিক।
সকাল থেকে সারা বিশ্বজুড়ে এদিন ছিল বাড়তি সতর্কতা। সারা বিশ্বে সমস্ত স্থানের মিছিলকে ঘিরে ফেলা হয়েছে নিরাপত্তারক্ষীতে। ফ্রান্স ও জার্মানিতে রয়েছে বাড়তি সতর্কতা। বার্লিনে মিছিল প্রতিহত করতে নামানো হয়েছে ৫০০০ সেনা। ইন্দোণেশিয়া, জাকার্তা, তুরস্কেও রয়েছে একই চিত্র। ইস্তানবুলে তাকসিমি স্কোয়ারে পুলিশ মোতায়েনের কারণ হল ১৯৭৭ এ প্রায় ৩৪ জন শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ দেয়। ভারতেও শান্তিপূর্ণ ভাবে পালিত হয় মে দিবস।
এত বাঁধা সত্বেও সারা বিশ্বজুড়ে আবেগে, উৎকণ্ঠায়, ভালবাসায় পালিত হচ্ছে সংগ্রামী এবং রক্তক্ষয়ী ” মে দিবস “।