বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ আজ বিশ্ব ব্যাঙ্ক আশঙ্কা করে এক রিপোর্ট প্রকাশ করেছে । সেই রিপোর্টে তারা জানিয়েছে, চলতি আর্থিক বছরে ভারতে বৃদ্ধির হার দাঁড়াতে পারে মাত্র ৬ শতাংশ। অর্থাৎ গত আর্থিক বছরে প্রকৃত বৃদ্ধির হার ৬.৯ শতাংশের তুলনায় আরও মন্দগতিতে এগোবে ভারতীয় অর্থনীতি। তিন দিন আগে আন্তর্জান্তিক অর্থ ভাণ্ডারের নতুন প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিনা জর্জিয়েভা বলেছিলেন, বিশ্বজনীন মন্দার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এর প্রভাব ভারতের মতো দেশে আরও বেশি করে সেই প্রভাব দেখা যেতে পারে। তার কথায় যেন এবার সুর মেলান হল ।

তবে রিপোর্টে আশার কথাও শুনিয়েছে বিশ্ব ব্যাঙ্ক । বিশ্বব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ পাশাপাশি  জানিয়েছে, ধীরে হলেও এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে পারে ভারত। ২০২১ সালে আর্থিক বৃদ্ধির হার হতে পারে ৬.৯ শতাংশ। তারপর ২০২২ সালে তা ৭.২ শতাংশে পৌঁছতে পারে।

উল্লেখ্য,  বিশ্বব্যাঙ্ক শুধু  নয়, দেশের মধ্যকার অর্থনীতি পরিস্থিতি নিয়ে  উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কও। তাদের মতে, এ বছর আর্থিক বৃদ্ধির হার ৬ শতাংশের আশপাশেই থাকবে। আবার আন্তর্জাতিক রেটিং সংস্থা মুডিজ ক’দিন আগে জানিয়েছে যে তাদের হিসাব অনুযায়ী ৫.৯ শতাংশের বেশি হারে ভারতে এ বার বৃদ্ধি হবে না ।

বিশ্ব ব্যাঙ্ক এবং ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের দ্বৈত রিপোর্ট মোদী সরকারকে চাপে ফেলতে বাধ্য সে বিষয়ে সংশয় নেই । বিশেষজ্ঞ মহল মনে করছেন,  এই উদ্বেগ স্বল্প সময়ের মধ্যে কেটে যাওয়ার মতো নয়। কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার বা চিদম্বরমকে গ্রেফতারের মতো ঘটনা দিয়ে অর্থাৎ শাক দিয়ে কতদিন মাছ ঢেকে রাখা যাবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে বিজেপি-র মধ্যেই । সুতরাং সামনে যে রাস্তা আসছে বিজেপি সরকারের জন্য সেটা মোটেই কণ্টক মুক্ত নয় ।

লোকসভা ভোটের আগে,  গোটা দেশকে আচ্ছে দিনের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন মোদী । সেই স্বপ্নের জোরে,  কেন্দ্রে ক্ষমতায় এসেছিলেন নরেন্দ্র মোদী । অথচ  দিল্লির তখতে তাঁর প্রথম মেয়াদে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি বিশেষ হয়েছে বলা যায় না। বৃদ্ধির হার ছিল কম। কৃষি ও পরিষেবা ক্ষেত্রে বৃদ্ধির বহর ছিল মন্দ, যথাক্রমে ২.৯ এবং ৭.৫ শতাংশ। কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগ তৈরি করতেও ব্যর্থ হয়েছে তাঁর সরকার। বরং সাম্প্রতিক কালে এত বেশি বেকারত্ব ভারতে দেখা যায়নি।

রবিবার প্রকাশিত বিশ্ব ব্যাঙ্কের রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, নোটবন্দি ও পণ্য পরিষেবা কর বাস্তবায়নের ফলে ভারতীয় অর্থনীতিতে বড় ধাক্কা লেগেছে। গ্রামীণ অর্থনীতির অবস্থা ভাল নয়, সেই সঙ্গে শহরে বেকারত্বও বেড়েছে। এর ফলে গরিব পরিবারগুলোর সংকট আরও বাড়তে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।

বিশ্ব ব্যাঙ্কের কর্তারা মনে করছেন, বাজারে চাহিদা এক্ষুনি বাড়বে বলেও মনে হচ্ছে না। কারণ, গ্রামের অর্থনৈতিক বৃদ্ধি হচ্ছে না, ব্যাঙ্ক ও এনবিএফসি সংস্থাগুলি থেকে ঋণ নেওয়ার প্রবণতাও কম। তবে আশার কথা হল, সম্প্রতি সরকার কর্পোরেট ট্যাক্স যে ভাবে কমিয়েছে তা শিল্প মহলে ইতিবাচক বার্তা দিয়েছে। এর ফলে লগ্নির পরিমাণ বাড়তে পারে।

Kajal Paul is one of the Co-Founder and writer at BongDunia. He has previously worked with some publishers and also with some organizations. He has completed Graduation on Political Science from Calcutta University and also has experience in News Media Industry.

Leave A Reply