বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ করোনাভাইরাস মানুষের মনে এত খানি আতঙ্ক ফেলেছে যে, একটা গোটা জাহাজ কোনো বন্দরে ভিড়তে পারছে না । একে একে চারটি দেশের কাছ থেকে অনুমতি না পেয়ে প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে সমুদ্রে ভাসছে । অথচ জাহাজে রয়েছে ২২৫৭ জন যাত্রী ।
চীনের গুবেই প্রদেশের উহান শহরে করোনাভাইরাস জন্ম নেবার পর দুই মাসের মধ্যেই যেন পৃথিবী জয় করতে বেরিয়েছে । চীনে করোনাভাইরাসের প্রকোপে নেমেছে মৃত্যুর মিছিল । অন্যদিকে অন্য দেশ থেকে আগত কোন মানুষকেই দেশে ঢোকার অনুমতি দেবার আগে অনেকবার ভেবে নিচ্ছে সেই দেশের সরকার । আর এবার করোনাভাইরাসের আতঙ্কে দুই সপ্তাহ ধরে সাগরে ভাসতে থাকা একটি জাহাজকে নিজেদের সমুদ্রবন্দরে নোঙর ফেলতে সরাসরি বারন করে দিয়েছে থাইল্যান্ড।
২২৫৭ জন যাত্রী বোঝাই হল্যান্ড আমেরিকা লাইনের ওয়েস্টারডাম নামের একটি শিপ বর্তমানে কোন দেশেই ভিড়তে পারছে না করোনাভাইরাসের আতঙ্কের কারনে । একপর্যায়ে থাইল্যান্ডের সমুদ্রবন্দরে নোঙর করতে গেলেও থাইল্যান্ড সরকার তাদের বন্দরে এই জাহাজের নোঙর করায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। কারন হিসাবে তাঁরা জানিয়েছে, হল্যান্ড আমেরিকা লাইনের ওয়েস্টারডাম জাহাজটিতে কয়েকজন ব্যক্তি করোনাভাইরাসের আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারে।
গত ১ ফেব্রুয়ারি হংকং ছেড়ে আসে ওয়েস্টারডাম। সোমবার শোনা যাচ্ছিল জাহাজটি থাইল্যান্ডের লায়েম চাবাং বন্দরে নোঙর করবে। কিন্তু মঙ্গলবার সকালে জানা যায়, সেই প্রস্তাবও নাকচ করে দিয়েছে ব্যাংকক কর্তৃপক্ষ। থাইল্যান্ডের প্রত্যাখ্যানের পর জাহাজটিতে আটকে থাকা কয়েকজন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা ধরনের মন্তব্য করছেন। আজ মঙ্গলবার থাইল্যান্ডের জনস্বাস্থ্যমন্ত্রী অনুটিন চার্নভিরাকুল এক ফেসবুক পোস্টে হল্যান্ড আমেরিকা লাইনের ওয়েস্টারডাম জাহাজের বন্দরে ঢোকার নিষেধাজ্ঞার কথা জানান। সেখানে তিনি বলেন, ওই জাহাজকে ব্যাংককের কাছে বন্দরে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। উল্লেখ্য এর আগেও হল্যান্ড আমেরিকা লাইনের ওয়েস্টারডাম জাহাজটি তিনটি দেশের সমুদ্রবন্দরে প্রবেশের চেষ্টা করে। কিন্তু কোনো দেশই অনুমতি দেয়নি। জাপান, ফিলিপাইন ও গুয়াম; তাদের বন্দরে এই জাহাজকে প্রবেশ করতে দেয়নি। ফলে বর্তমানে সমুদ্রে ভেসে থাকা ছাড়া জাহাজ এবং তার যাত্রীদের অন্য কোন উপায় নেই ।
এদিকে, কার্নিভালের ডায়মন্ড প্রিন্সেস নামের একটি প্রমোদতরীকেও জাপান সমুদ্রের বুকে আঁটকে রাখা হয়েছে । উক্ত জাহাজটিতে হল্যান্ড আমেরিকা লাইনের ওয়েস্টারডাম জাহাজের থেকেও বেশী যাত্রী রয়েছে । জাহাজটিতে যাত্রীদের মধ্যে অনেকেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং দিনে দিনে সেটি বেড়েই চলেছে । কিন্তু বন্দরে নামতে না পারায় যথাযথ চিকিৎসার সুযোগ তাঁরা পাচ্ছেন না ।