বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ বর্তমান বিশ্বে নতুন আতঙ্কের নাম করোনা ভাইরাস । প্রথমে চীনে দেখা দিলেও চীন জয় করার পর এবার সে পাড়ি জমিয়েছে ভারতসহ পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও । ইতিমধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ‘গ্লোবাল হেলথ ক্রাইসিস’ বলে অবিহিত করেছে । ভারতেও এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে সতর্কবার্তা জানানো হচ্ছে ।
দেখা গেছে করোনা ভাইরাসের আক্রমণ অনেকটা চুপু চুপি হয় । একবার মানব শরীরে প্রবেশ করলে সেখানেই তারা বৃদ্ধি পেতে থাকে । এরপর আচমকা প্রকাশ পায় এর সংক্রমণের প্রভাব । উপসর্গের প্রথমে দেখা দেয় সর্দি-কাশি. জ্বর । পাশাপাশি শ্বাসকষ্ট বাড়তে থাকে ধীরে ধীরে। শরীরে আস্তে আস্তে হানা দেয় নিউমোনিয়া। আবার এমনও দেখা গেছে, অনেকের দেখা দেয় সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম। এরপর ছড়িয়ে পড়ে গোটা শরীরে । একসাথে আক্রান্ত হয় শরীরের একাধিক অংশ । শরীরের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভেঙ্গে চুরমার করে দেয় । শরীরে রক্ত প্রবাহ কমতে থাকে। কাজ করার শক্তি হারিয়ে ফেলে ফুসফুস, কিডনি এবং সবশেষে মৃত্যু ।
WHO encourages all countries to continue preparedness activities on the novel #coronavirus (2019-nCoV) https://t.co/SBFShxKaKq
— World Health Organization (WHO) (@WHO) January 16, 2020
ইতিমধ্যে চিনের মাটিতে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে শুরু হয়ে গেছে মৃত্যু মিছিল । এর আগে ২০০৯ সালে সোইয়াইন ফ্লুর চীনে মহামারির আকার ধারন করেছিল । মারা গিয়েছিল অসংখ্য মানুষ । এবারের হানাদার করোনা ভাইরাস । এই রহস্য ভাইরাসের আক্রমণের পদ্ধতি ঘুম উড়িয়ে দিয়েছে চিকিৎসক-বিজ্ঞানীদের। এখনও পর্যন্ত এই ভাইরাসের আক্রমণ থেকে নিস্তার পাওয়ার সঠিক উপায় খুঁজে পাওয়া যায়নি । চিন থেকে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইল্যান্ড হয়ে এই ভাইরাসের সংক্রমণের সতর্কতা জারি হয়েছে ভারতেও।
প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে চিনের উহান প্রদেশের সি-ফুড বাজার থেকেই এই ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়েছে । বর্তমানে তাইল্যান্ড ও জাপান থেকেও এই ভাইরাস সংক্রমণের খবর মিলেছে। ভারতও যে এই সংক্রমণের তালিকা থেকে বাদ নয় সে সতর্কতাও জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) । বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এই ভাইরাসকে চিহ্নিত করেছিল 2019-nCoV নামে।
এখনও পর্যন্ত সঠিক রাস্তা নির্বাচন করতে না পারলেও চিনের সিডিসি ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট, ইনস্টিটিউট অব প্যাথোজেন বায়োলজি এবং উহান জিনিইনটান হাসপাতালের বিজ্ঞানীরা এই ভাইরাসটির পাঁচটি জিনোম আলাদা করে পরীক্ষা করছেন। এর থেকেই এই ভাইরাসের ঠিকুজিকুষ্ঠী জানা যাবে বলে মনে করছেন গবেষকরা। তবে যতদিন না এই ভাইরাসের প্রকৃতি জানা যাবে না, ততদিন একে প্রতিরোধ করা সম্ভব নয় ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কিভাবে করোনা ভাইরাস থেকে দূরে থাকা যায় সে বিষয়ে কিছু পরামর্শ দিয়েছে । তারা জানিয়েছে, মৃত পশুপাখির সংস্পর্শে না আসা। যদি দেখা যায়, কেউ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে, তাহলে তার থেকে দূরে থাকা, তাদের সাথে খাবার ভাগ না করে খাওয়া, বা একই সাথে একই বিছানায় না শোয়া । আর সামান্য সর্দি-কাশি-জ্বর হলে অবহেলা না করে আগে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে । যদি বাজার করতে যান, তাহলে খোলা মাছ বা মাংসের বাজারে গেলে হাত-পা ভাল করে ধোয়া মাথায় রাখতে হবে ।