বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ তাপস পাল মাত্র ২২ বছর বয়সে ‘দাদার কীর্তি’ দিয়ে অভিনয় জগতে পা ফেলেন । অভিনয় প্রতিভা দিয়ে একের পর এক ছবিতে মন জয় করে নেন অসংখ্য মানুষের । পকেটে রয়েছে জাতীয় পুরষ্কার, ফিল্ম পুরষ্কার । শেষ জীবনে রাজনৈতিক জীবনে পদার্পণ । সেখানেও ছিলেন নিজের স্বকীয় মহিমায় উজ্জ্বল । কেমন ছিল প্রয়াত তাপস পালের রাজনৈতিক জীবন !
মঙ্গলবার ভোর ৩টে ৫১ মিনিটে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন অভিনেতা এবং রাজনৈতিক তাপস পাল । মারা যাবার সময় তাঁর বয়স হয়েছিল ৬১ বছর । তাপসপালের মৃত্যুতে বিনোদন জগত, রাজনৈতিক জগতসহ শোকস্তব্ধ অসংখ্য ভক্ত । অভিনয় জগতে একের পর এক হিট ছবি উপহার দিয়েছেন । বলিউডের বিখ্যাত অভিনেত্রী মাধুরী দীক্ষিত তাঁর প্রথম ছবি ‘অবোধ’ -এ অভিনয় করেন তাপস পালের বিপরীতে ।
সরাসরি তাপস পালের রাজনৈতিক আঙ্গিনায় প্রবেশ ২০০১ সালে । বাংলার রাজনীতিতে তখন বাম সরকারের বিরুদ্ধে মানুষের মনের ক্ষোভ পুঞ্জিভুত হচ্ছে ধীরে ধীরে, এমন আবহের মাঝে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে রাজনীতিতে প্রবেশ করে নিজের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করেন তিনি । সেবার তৃনমূলের টিকিতে সাংসদ নির্বাচিত হন তিনি । প্রথম বার আলিপুর আসনে তাকে লড়াই করতে হয়েছিল অপর এক দাপুতে অভিনেতা বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে । সেখান থেকেই তাঁর রাজনৈতিক কেরিয়ার শুরু ।
নিজের দক্ষতার গুণে ধীরে ধীরে নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভরসার পাত্র হিসাবে নিজের পরিচিতি তৈরি করেন তাপস পাল । রাজনৈতিক কেরিয়ারেও সমান জনপ্রিয়তা পেতে থাকেন । বিধানসভার পর লোকসভা । ২০০৯ সালে কৃষ্ণনগর লোকসভা ভোটে প্রার্থী হলেন পোড় খাওয়া রাজনৈতিক এবং প্রভাবশালী সত্যব্রত মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে । সেখানেও জয়ধারা অব্যাহত রাখলেন তাপস পাল ।
২০১৪ সালে ফের একই আসন থেকে আগের প্রতিদন্ধি সত্যব্রতকে হারালেন । কিন্তু রাজনৈতিক কেরিয়ারের এই সময় কিছু বিতর্কের সাথে জড়িয়ে গেলেন আস্টেপিস্টে । রাজনৈতিক কেরিয়ারে কিছুটা দাগ লাগল তাতে । সবচেয়ে বড় বিপদ হানা দিল বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থা রোজভ্যালির সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে । সেখানে সিবিআইয়ের নজরে পড়েন। গ্রেপ্তার হয়ে বন্ধী হন উড়িষ্যার ভুবনেশব্র সিবিআই হেপাজতে । প্রায় দেড় বছর ভুবনেশ্বরে সিবিআই হেফাজতে থাকা কালীন অসুস্থ হয়ে পড়েন তাপস পাল ।
সিবিআই হেপাজত থেকে ২০১৮ সালের প্রথম দিকে ছাড়া পাবার পর রাজনৈতিক কার্যকলাপে তাপস পালকে প্রত্যক্ষভাবে অংশ নিতে আর দেখা যায়নি । তাছাড়া শরীর ভেঙ্গে পরে । কিন্তু একথা অস্বীকার করার জায়গা নেই, অভিনয় জগত হোক, বা রাজনীতি, দুই ক্ষেত্রেই তিনি একেবারে চূড়ান্ত পারফর্মার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে গিয়েছেন।