বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্ক: ইসরায়েল বাহিনীর সাথে ফিলিস্তিন বাসিন্দা’দের নিরন্তর সংগ্রামের কথা বর্তমানে সারা বিশ্ববাসী জানে। ক্রমাগত এই সংগ্রামে ইসরায়েল বাহিনীর হাতে প্রাণ যাচ্ছে বহু ফিলিস্তিনবাসী’র। এরকমই, ফিলিস্তিনের একজন বাসিন্দা ছিলেন বাসসাম আল-সায়েশ, যিনি সম্প্রতি ইসরায়েল বাহিনীর নির্মম অত্যাচারে প্রাণ হারিয়েছেন।
বিগত কিছুদিন আগে ইসরায়েলের এক সেনা কর্মকর্তাকে হত্যার অভিযোগে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর থেকে বাসসাম আল-সায়েশ-এর স্ত্রীকে আটক করা হয়। এরপর নিজের স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে এসে ইসরায়েল বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হন তিনি।
দীর্ঘকাল কারাভোগের পর অত্যাচার, নির্যাতন এবং বিনা চিকিৎসায় গত রবিবার কারাগারে মারা গেছেন বাসসাম আল-সায়েশ। মৃত্যুর পূর্বে কারাগারে বসে নিজের পরিচিত এবং দেশবাসী সকলের জন্য একটি চিঠি লিখে গেছেন তিনি। ৪৭ বছর বয়সী এই ফিলিস্তিনবাসী’র লেখা চিঠি সম্প্রতি বিশ্ববাসীর নজর কেড়েছে। দেশের প্রতি তাঁর অতুলনীয় প্রেম ফুটে উঠেছে এই চিঠিতে। এছাড়া, এই চিঠি ইসরায়েল এর কারাগারের অন্ধকারে মৃত্যুর অপেক্ষায় থাকা অসংখ্য করুণ বন্দীর কথা বলে দেয়।
বাসসাম আল-সায়েশ এর চিঠির ভাষাই বলে দেয়, ইসরায়েলের অন্ধকার কারাপ্রকোষ্ঠে অত্যাচার-নির্যাতনে মৃত্যুর অপেক্ষায় আছে অসংখ্য বন্দি ফিলিস্তিনি। যাদের ভাগ্যে তার মতোই করুণ মৃত্যু অপেক্ষা করছে।
চিঠিতে লেখা আছে,
“আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ
হয়তো তোমাদের বলা এই আমার শেষ কথা, আমি জীবনের শেষ দিনগুলোর একেবারেই শেষ মুহূর্তে, শ্বাস-প্রশ্বাসের অন্তিমকালে। আমার প্রথম কথা- ‘আমি তোমাদের সবাইকে ভালবাসি’।
আমার মাতৃভূমি, আমার দেশের প্রতি শান্তি ও রহমত বর্ষিত হোক। নাবলুসের উপর নাজিল হোক আল্লাহর রহমত। আমার সেসব স্মৃতিসমূহ অমলিন থাকুক যেগুলো মাতৃভূমির সঙ্গে আমার ভালোবাসাকে দৃঢ় করেছে। আমার পরিবার-প্রতিবেশীকে সালাম। আমার মসজিদ-মিহরাব, জামিয়া ও বন্ধুদের উপর প্রশান্তির বৃষ্টি ঝরুক।
যারা সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও আমাকে দুর্দিনে সাহায্য করেনি তাদের কথা বাদই দিলাম, তবে তোমাদের কাছে আমার শেষ ওসিয়ত ও উপদেশ –
‘ইসরায়েলের কারাগারে আমার অসুস্থ বন্দি ভাইদের জুলুম-অত্যাচার ও সীমাহীন ব্যথা-বেদনার অন্ধকার ওই কারাপ্রকোষ্ঠে ফেলে রাখতে দিও না। তোমাদের কাছে আমার আকুল আবেদন- ইসরায়েলের কারাগার থেকে ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্ত করে আমার প্রতি রহম করো তোমরা।’”