বুধবার সকালের ট্রেনে সকলে হতবাক । ডাউন হাসনাবাদ ট্রেনের ভেন্ডারে একটা বড় ফলের ঝুড়ির উপরের কাগজের আচ্ছাদন সরে যেতেই বেরিয়ে পড়ল একটা মানুষের কাটা মুন্ডু । বারাসাত রেল ষ্টেশনের জিআরপি সেই কাটা মুন্ডু উদ্ধার করে । পরে খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, ওই মুণ্ডটি লালা চৌধুরী নামে একজন ফুচকা বিক্রেতার ।
কাকিনাড়া স্টেশনের কাছে 29 নম্বর রেলগেট সংলগ্ন একটা জঙ্গলে মুণ্ডু হীন বাকি দেহের অবশিষ্ট অংশের হদিস মেলে । খোঁজখবর নিয়ে জানা যায় লালা চৌধুরী তথা সেই ফুচকা বিক্রেতা নৈহাটি স্টেশনে রোজ ফুচকা বিক্রি করতো । লালা চৌধুরীর বাবা দেহটিকে শনাক্ত করেন ।
গত মঙ্গলবার প্রতিদিনের ন্যায় ফুচকা বিক্রির উদ্দেশ্য নিয়ে লালা চৌধুরী নৈহাটি স্টেশনে দিকে রওনা দেয় । কিন্তু সেটাই ছিল তার শেষ যাওয়া । সে আর বাড়ি ফেরেনি । পুলিশের ধারণা বাড়ি ফেরার পথে তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে খুন করা হয় । পুলিশ আরো ধারণা করেছে, যেখানে মুন্ডু এবং যেখানে দেহাংশ পাওয়া গেছে, হত্যা স্থল সেই জায়গায় নয় ।
অন্যদিকে জিআরপি তদন্ত করে মনে করছে, খুনের পর দেহ টি জঙ্গলের কিনারায় ফেলে কাটা মুণ্ডু টি গভীর রাত্রে নিয়ে যাওয়া হয় শিয়ালদা স্টেশনে । সেখান থেকে হাসনাবাদ লোকালে করে নিয়ে যাওয়া হয় হাসনাবাদে । যে ফলের ঝুড়ি তে কাটা মুন্ডু ছিল, প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানতে পারা গেছে সেটি একজন ফল ব্যাবসায়ির । অনেক বাতিল কাগজের সাথে একটি গামছা ও পাওয়া যায় সেই ঝুড়িতে । পুলিশ গামছা টি ফরেনসিক রিপোর্টের জন্য নিয়ে গেছে ।
লালা চৌধুরীর হত্যা রহস্য উন্মোচন করতে গিয়ে পুলিশ দেখে সূত্রগুলি অনেকটা মাকড়সার জালের মত ছড়িয়ে রয়েছে । কে বা কারা এবং কেনইবা লালা চৌধুরীর মতো একজন সাধারন ফুচকা বিক্রেতাকে এমন নৃশংসভাবে হত্যা করতে পারে তার কারণ এখনো পর্যন্ত জানা যায়নি । এখনো পর্যন্ত রহস্যের জট খোলার মত কোন সলিড সুত্র পুলিশের হাতে আসেনি । তবে প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে, এই হত্যাকাণ্ডের সাথে একজন ফল ব্যাবসায়ির যোগ রয়েছে ।
বুধবার ডাউন হাসনাবাদ লোকালে যে ঝুড়িটি পাওয়া যায় সেটি একজন ফল ব্যাবসায়ির । খুব সম্ভবত সে আম বা কাঁঠাল এই ধরনের ফল বিক্রি করে । ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডি সি অজয় ঠাকুর বলেন, “ঝুড়িটি ফল ব্যাবসায়ির সেটা নিশ্চিত । তাই প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে এই ঘটনায় কোনো ফল ওয়ালা জড়িত আছে । সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে” ।