বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ চন্দ্র যান – ২ মিশন পুরোপুরি সফল সেটা বলা যাবে না, কিন্তু চন্দ্র যানের একটা অংশ বিক্রম যে চাঁদের বুকে ল্যান্ড করতে পেরেছে সে বিষয়ে নিশ্চয়তা দিয়েছে ইসরো । আগেই মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসা ভারতের চন্দ্র অভিযানকে বাহবা দিয়েছিল, এবার কুর্নিশ জানাল বিশ্বের অপর এক মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইউরপিয়ান স্পেস এজেন্সি ।
চন্দ্রযান – ২ নিয়ে প্রতিটি ভারতীয়র আবেগ কতখানি মিশে ছিল সেটি পূর্বে বোঝা না গেলেও খুব সামান্য কারনে মিশনটি ১০০ শতাংশ সফল হতে না পারায় সেই আবেগ পুরোপুরি প্রকাশ্যে এল । চাঁদের দক্ষিন মেরুতে এর আগে কেউ পৌছাতে পারেনি, যেটা ভারত পুরোপুরি সফল না হলেও করে দেখিয়েছে । মিশনটি কতখানি কঠিন ছিল আস্তে আস্তে মানুষ বুঝতে পারছে । ইসরোর বিজ্ঞানীরা প্রাথমিকভাবে হতাশ হয়ে পড়লেও তাদের পিছনে প্রতিটি ভারতীয় উৎসাহ দিয়ে গেছে যাতে অদুর ভবিষ্যতে তারা চন্দ্র যান -৩ নিয়ে খুব তাড়াতাড়ি কাজ শুরু করতে পারেন ।
নাসার পরে এবার বিবৃতি দিল ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি । তারা জানিয়েছে, ‘‘চাঁদের দক্ষিণ মেরু অভিযান খুব একটা সহজ ব্যাপার নয়। পরতে পরতে জড়িয়ে রয়েছে বিপদ। চাঁদের অজানা আঁধার দিকের রহস্যের পর্দা মানুষ এখনও খুলতে পারেনি। দুর্গম ওই প্রান্তে চন্দ্রযান যে পৌঁছতে পেরেছে সেটাই ইতিহাস,’’
তাদের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে চাঁদের দক্ষিণ মেরু অভিযানের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিল ইএসএ । তবে শেষ মুহূর্তে সেটা বাতিল হয়ে যায় । ২০২০ সালে ফের চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে যান পাঠাতে পারে ইএসএ ।এদিকে ল্যান্ডার বিক্রমের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পরে তিন দিন কেটে গেছে । ইসরোর কন্ট্রোল রুমে মনিটরে চোখ রেখে এখনও অধীর আশা নিয়ে অপেক্ষার প্রহর গুনে চলেছেন ইসরোর মহাকাশবিজ্ঞানীরা । অরবিটার যে কোনও মুহূর্তে সঙ্কেত পাঠাতে পারে, এমন আশা নিয়ে আছেন তারা । মঙ্গলবার ইসরোর তরফে টুইট করে জানানো হয়, বিক্রমের অবস্থান জানান চেষ্টা করছে অরবিটার । তার অপটিক্যাল ইমেজে সেটা ধরা দিলেই রেডিও যোগাযোগের চেষ্টা চলবে জোরকদমে । বিক্রমকে জাগিয়ে তোলার প্রচেষ্টা শুরু হবে।
#VikramLander has been located by the orbiter of #Chandrayaan2, but no communication with it yet.
All possible efforts are being made to establish communication with lander.#ISRO— ISRO (@isro) September 10, 2019
চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ল্যান্ড করতে হলে কী কী অসুবিধা হতে পারে সেটা জানিয়েছেন ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির বিজ্ঞানীরা । বলা হয়েছে, চাঁদের মাটিতে যে ধুলোর স্তর রয়েছে তার সম্পর্কে খুব বেশি তথ্য মেলেনি । তবে জানা গেছে, সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মি বা অন্য কোনও মহাজাগতিক রশ্মি চাঁদের মাটিতে সরাসরি আছড়ে পড়ার সময় এই সূক্ষাতিসূক্ষ ধূলিকণাগুলিকে আঘাত করে । মহাজাগতির রশ্মির ধাক্কায় এগুলির মধ্যে বিদ্যুৎ তরঙ্গ তৈরি হয়। ফলে একটি বিরাট এলাকা জুড়ে ধুলোর ঝড় শুরু হয় । এর ফলে যে রেডিয়েশন সৃষ্টি হয় সেই রেডিয়েশনের বাধা কাটিয়ে অবতরণ করা সহজ কাজ নয়, যেটা ভারত খুব অল্প বাজেটে করবার প্রয়াস করেছে ।
তারা আরও জানিয়েছে , এই ধুলোর ইলেকট্রোস্ট্যাটিক ফোর্স চন্দ্রযানের ল্যান্ডারের টার্মিনেটরকে বিকল করে দিতে পারে । সেই কারণেই হয়তো ল্যান্ড করার সময় ল্যান্ডার কোনও সঙ্কেত পাঠাতে পারেনি অরবিটারে । ইএসএ-র জ্যোতির্বিদ ইউজিন কারনানের কথায়, ‘‘চাঁদের ধুলো বা লুনার ডাস্টের সঙ্গে মোকাবিলা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। স্পেসক্রাফ্টের বাইরে তো বটেই, ভিতরেও হানা দেয় এই ধুলোর ঝড়। ফলে বেশি সময় টিকে থাকাই মুশকিল হয়।’’