বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ একদিকে গোটা রাজ্য জুড়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ, অন্য দিকে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে বেসরকারি হাসপাতাল এবং নার্সিং হোমগুলি । সেখান করোনা চিকিৎসার পরিষেবা নিতে গেলে যেভাবে হাতে বিল ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে তাতে চিন্তিত স্বাস্থ্য কমিশন । এবার অভিযোগের ভিত্তিতে অতিরিক্ত বিল নিয়ে হস্তক্ষেপ করতে দেখা গেল রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশনকে ।
জানা গেছে, করোনা আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হবার পর কলকাতার দুটি হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে স্বাস্থ্য কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন দু’জন রোগীর পরিজনেরা। অভিযোগ পাবার পর হাসপাতাল দুটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করে স্বাস্থ্য কমিশন । একটি হাসপাতাল থেকে পিপিই-সহ নন মেডিক্যাল খাতে নেওয়া ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা ফিরিয়ে দিতে রাজি হয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ । অপরটির ক্ষেত্রে অভিযোগ নেওয়া হয়েছে । অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলে জানা গেছে ।
প্রথম ঘটনাটি ঘটেছে ঢাকুরিয়ায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে । গত ১৬ মে কোভিড-আক্রান্ত বছর ৮৬-র এক বৃদ্ধ সেখানে ভর্তি হন । ২৬ দিন পরে গত ১১ জুন তাঁর মৃত্যু হয়। বৃদ্ধের চিকিত্সার বিল হয়েছিল প্রায় ছ’লক্ষ টাকা। তার মধ্যে পিপিই-সহ নন-মেডিক্যাল খাতে খরচ ধরা হয় ১ লক্ষ ৮৪ হাজার টাকা। কমিশনের চেয়ারম্যান জানান, প্রতিদিন পিপিই-সহ নন মেডিক্যাল খাতে সাত হাজার টাকা করে খরচ ধরা হয়েছিল। বুধবারের শুনানিতে কমিশন সরকারি নির্ধারিত মূল্যে পিপিই’র খরচ ধরার কথা বলা হলে এক লক্ষ ৪০ হাজার টাকা ফিরিয়ে দিতে রাজি হন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। একই দিনে চিকিত্সায় গাফিলতির অভিযোগে বাঘাযতীনের একটি বেসরকারি হাসপাতালকে ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য কমিশন ।
দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটেছে যোধপুর পার্কের বাসিন্দা ৬০ বছরের বৃদ্ধের সাথে । ওই বৃদ্ধ গত ২৭ জুন জ্বর নিয়ে আনন্দপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। পর দিন নমুনা পরীক্ষায় কোভিড ধরা পড়ে।তাঁর মেয়ে থাকেন সুইডেনে । সেখান থেকে ফোনে জানান, ভর্তির পরে এক সপ্তাহ বৃদ্ধ সুস্থ ছিলেন। কিন্তু প্রবল শ্বাসকষ্টের জন্য ৪ জুলাই তাঁকে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়। এর পর থেকে ভেন্টিলেশনেই রয়েছেন তিনি। প্রায় এক মাসে বিল হয়েছে ১৬ লক্ষ টাকা।
আক্রান্তের মেয়ের বক্তব্য, ”এক দিকে চিকিত্সকেরা বলছেন, বাবার বাঁচার আশা নেই বললেই চলে। আবার দ্বিতীয় ডায়ালিসিস করানো হবে বলেও জানানো হয়েছে। বাবার মেডিক্যাল রিপোর্টও ঠিকমতো পাচ্ছি না।” অভিযোগ পেয়ে বুধবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য জানতে চায় কমিশন। সূত্রের খবর, হাসপাতালের তরফে প্রাথমিক ভাবে জানানো হয়েছে, বৃদ্ধের শারীরিক অবস্থা প্রসঙ্গে তাঁর মেয়ে এবং জামাইকে প্রতিনিয়ত অবহিত করা হয়েছে। রোগীর পরিজনেরা চাইলে বেড হেড টিকিটের প্রেক্ষিতে চিকিত্সা পদ্ধতি নিয়ে যে কারও সঙ্গে পরামর্শ করতে পারেন। কমিশনের চেয়ারম্যান অসীম বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে তাঁদের মনে হয়েছে, অভিযোগ শুনানির জন্য গ্রহণ করা যেতে পারে।