বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্ক: উপকূলের ভয়াল নভেম্বর, এবার আসছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় বুলবুল। উপকূলের মানুষের কাছে নভেম্বর মানে ঘর বাড়ি হারান। নভেম্বর মানে প্রিয়জন হারান। ১৭৯৭ সালে এই নভেম্বর মাসে উপকূলের বিশেষ করে চট্টগ্রাম অঞ্চলে বয়ে যায় এক ঝড়। ঘরবাড়ির সাথে চট্টগ্রাম বন্দরে ডুবে যায় দুটি জাহাজ। ১৯০৪ সালে সোনাদিয়ায় উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া বজ্রঝড়ে মারা যায় অন্তত: ১৪৩ জন। ১৯৭০সালে বাংলাদেশের ইতিহাসের সর্বাপেক্ষা বেশি প্রাণ ও সম্পদ নষ্ট হয়। ১২ নভেম্বরের এই হারিকেনের তীব্রতা নিয়ে বরগুনা, পটুয়াখালী সহ বিভিন্ন চরে প্রায় ৫০০,০০০ মানুষের মৃত্যু হয়। পরের বছরই ১৯৭১ সালে চট্টগ্রামের উপকূলে আঘাত হানে আরেকটি ঝড়। কিছুদিন যেতেই ঐ বছরে নভেম্বরের শেষে ২৮ নভেম্বর সুন্দরবনের উপকূলীয় অঞ্চলে এক ঝড় আঘাত হানে। ছড়ে সমগ্র খুলনার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। ১৯৭৪ সালের নভেম্বর মাসে কক্সবাজারের উপকূলীয় অঞ্চলে বয়ে যায় এক ঝড়। যাতে অন্তত: ২ শতাধিক লোক মারা যায়। ১৯৮৩ সালের ঘন্টায় ১৩৬ কিমি বেগে বায়ুপ্রবাহ নিয়ে আছড়ে মরে একটি ঝড় চট্টগ্রাম, কুতুবদিয়া অঞ্চলে। এ ঝড়ে অন্তত: ৩০০ লোক মারা যায়। ১৯৮৬ সালে উপকূলবর্তী দ্বীপসমূত চট্টগ্রাম, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী অঞ্চলে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড়ে অন্তত: ১৪ জন মারা যায়। ১৯৮৮ সালের নভেম্বর মাসে যশোর, কুষ্টিয়া ফরিদপুরের উপর দিয়ে বয়ে চলে এক ঝড় যাতে অন্তত: ৫৭০৮ জন মারা যায়। ১৯৯৫ সালের কক্সবাজারের পাশ্ববর্তী দ্বীপ সমূহে এক ঝড় আঘাত হানে যাতে প্রায় ৬৫০ জন মারা যায়। ১৯৯৮ সালের খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালীর উপর আঘাত হানে এক ঝড়।
নভেম্বর মানেই উপকূল বাসীর ঘুমহীন রাত্রিযাপন। বর্তমান বৎসরে নভেম্বর আসতেই দেখা মেলে তার প্রমাণ। আবাহাওয়াবিদদের কথায় আজ শনিবার সন্ধ্যা নাগাদ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও খুলনা উপকূলে আঘাত হানতে পারে বুলবুল। উপকূলের আটটি জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, বরগুনা, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, ভোলা ও চাঁদপুর ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। জানা যায় প্রবল এই ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার। যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।