পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজে ‘মানুষের মাথা লাগবে’ বলে সম্প্রতি ফেইসবুক সহ সর্বত্র গুজব ছড়ানোর পর গত ২০ জুলাই মাসে রাজধানীর রাড্ডায় এক স্কুলে ভর্তির তথ্য জানতে গিয়ে গণপিটুনিতে নিহত হন তাসলিমা বেগম রেনু। তার মৃত্যুর পর সরকার বিভিন্ন পর্যায়ে এ অধরনের অপরাধ থেকে বিরত থাকার জন্য প্রচারনা চালান।
এই মৃত্যুর পর হাই কোর্টে এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের হাই কোর্ট বেঞ্চ রুল দেয়। রুলে বলা হয় রাজধানীর বাড্ডার এক স্কুলে ভর্তির তথ্য জানতে গিয়ে গণপিটুনিতে নিহত তাসলিমা বেগম রেনুর পরিবারকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না।
এ রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইশরাত হাসান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়। জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব, শিক্ষা সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ডিএমপি কমিশনার, বাড্ডা থানার ওসি, সংশ্লিষ্ট স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা বোর্ডের সভাপতিকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
রিটে আদালত আরো বলেন “সেই সঙ্গে গণপিটুনিতে তাসলিমা বেগম রেনুসহ নিহতদের জীবন রক্ষায় বিবাদীদের ব্যর্থতা ও নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং গণপিটুনিতে নিরীহ মানুষের জীবন রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না।“ স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, শিক্ষা সচিব, পুলিশের আইজি, ডিএমপি কমিশনার ও বাড্ডা থানার ওসিকে চার সপ্তাহের মধ্যে ওই রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
তাসলিমা বেগম রেনুকে পিটিয়ে হত্যার সময় ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে সারা দেশে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ভিডিওতে দেখা যায় রড দিয়ে নির্দয়ভাবে তাসলিমাকে পেটাতে দেখা যায় রেনুকে।
পরবর্তীতে রেনুর বোনের ছেলে নাসির উদ্দিন টিটো বাদী হয়ে অজ্ঞাত পরিচয় ৪০০/৫০০ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় এ পর্যন্ত ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে কয়েকজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন।