বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ সম্প্রতি সমীক্ষায় মুখ বা গলার ক্যান্সারের কারন হিসাবে উঠে এসেছে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য । দেখা গেছে, বর্তমানে বিড়ি, সিগারেট বা তামাক জাতীয় দ্রব্য সেবনে ক্যান্সারের কারন তৈরি হলেও সেই কারণকে পিছনে ফেলে এগিয়ে এসেছে “ওরাল সেক্স” । হ্যাঁ, গলায় বা মুখে ক্যান্সারের অন্যতম দায়ী ভাইরাসের নাম হল HPV (হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস), যা ওরাল সেক্সের মাধ্যমে মানব শরীরে সংক্রামিত হয় ।
ক্যান্সার বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছে, বর্তমান আধুনিক যুগে মানুষের যৌন অভ্যাসের ক্ষেত্রে বেশ কিছু পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়েছে । দেখা গেছে অতীতে যৌন অভ্যাসের ক্ষেত্রে “ওরাল সেক্স”র খবু বেশী ভুমিকা না থাকলেও সম্প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ছে এর প্রতি । এই কারণে গলায় বা মুখে ক্যান্সারের অন্যতম দায়ী ভাইরাসল HPV (হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস) ছড়িয়ে পড়ছে ।ক্যান্সার বিশেষজ্ঞদের মতে, মানব শরীরের ভিজে অঞ্চলে এই ভাইরাসের প্রকোপ বেশি দেখা যায়। ফলে “ওরাল সেক্স”র আগ্রহের ফলে নিজেদের অজান্তেই শরীরে সংক্রামিত হবার সম্ভবনা তৈরি হচ্ছে । কারন, নিরাপত্তাহীন যৌনতার জেরে তাই মুখ, পায়ু, যোনি ও গলায় HPV (হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস) সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকে।
গলায় বা মুখে ক্যান্সারে আক্রান্ত হলে কিছু কিছু উপসর্গ দেখা দেয় । বহুদিন ধরে মুখের ঘা না-শুকানো, মুখের কোনও অংশে দীর্ঘ দিন ধরে ব্যথা অনুভব করা, মুখগহ্বরে ও গলার ভিতর সাদা বা লাল ছোপ, ঢোক গিলতে অসুবিধা, গলায় কোনও দলা তৈরি হওয়া, নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ অথবা বিশেষ কোনও কারণ ছাড়াই অতিরিক্ত ওজন হ্রাস পাওয়া-এই সবই মুখ কিংবা গলার ক্যান্সারের উপসর্গ। আর HPV (হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস) খুব দ্রুত শরীরে ছড়িয়ে পড়ে, এমনটাই জানাচ্ছেন গবেষকরা ।
‘বেসিক ইনস্টিংক্ট’ এর বিখ্যাত অভিনেতা মাইকেল ডগলাসের ক্যান্সার ধরা পড়ে । তিনি নিজে জানিয়েছেন, ২০১০ সালে তিনি নিজে ক্যান্সারে আক্রান্ত হন । প্রথমে তাঁর জিভের নিচে আখরোট আকারের টিউমার দেখা দেয় । পরবর্তীকালে সেটি “বায়প্সি” করার পর চতুর্থ ধাপের ক্যান্সার (Stage IV) ধরা পড়ে । এ বিষয়ে তিনি অকপটে বলেছেন, যোনিলেহনের মাধ্যমে যৌন রোগের হাত ধরে তাঁর মুখগহ্বরে বাসা বাঁধে মারাত্মক এইচপিভি, যা যোনির, মুখের ও গলার ক্যান্সারের অন্যতম কারণ।
চিকিৎসকরা “ওরাল সেক্স”র ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছেন । তাঁরা জানাচ্ছেন, এই ধরনের যৌনাভ্যাস করার আগে একটি নিরাপত্তার আড়াল তৈরি করে নিতে হবে । অক্সফর্ড অনলাইন ফার্মেসি’র চিকিত্সক হেলেন ওয়েবারলি জানিয়েছেন, ‘আমরা জানি বেশ কিছু যৌনাঙ্গের ক্যান্সার যেমন ভালভ্যাল, সার্ভিক্যাল, পেনাইল এবং অ্যানাল ক্যান্সারের সঙ্গে ওয়ার্ট অর্থাত্ ক্যান্সারবাহী ওয়ার্ট (আঁচিল) ভাইরাসের যোগসূত্র থাকে। স্বাভাবিক ভাবেই মুখের ক্যান্সারের পিছনেও এই ভাইরাসের অবদান সম্ভব।’