বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ  আমরা যে জল ব্যবহার করি,  তার প্রধান উৎস ভূগর্ভস্থ  জল । কিন্তু প্রতিনিয়ত সচেতনতার অভাবে আমরা এই ভূগর্ভস্থ জলের অপচয় করে আসছি । বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্য আজ জলশূন্য  । বাংলাদেশের মানুষরা জলের প্রধান উৎস হিসেবে ভূগর্ভস্থ জলের উপর নির্ভরশীল । ঢাকা শহর এখন কংক্রিটে ভরে গেছে ভরে গেছে । সমীক্ষা করে দেখা গেছে ঢাকা শহরে যে জল ব্যবহার করা হয় তার 80% আসে মাটির নিচ থেকে । কিন্তু ব্যবহার করার পর এই  জলের বেশিরভাগ অংশ ভূগর্ভে ফেরত যেতে পারে না । কারণ কংক্রিটের পরিমাণ বেশি থাকায় বেশিরভাগ জল পাকা নর্দমা দিয়ে  নদীতে মেশে । যার কারণে প্রতি বছর ঢাকার ভুগভস্থ জলের স্তর প্রায় 3 মিটার নিচে নেমে যাচ্ছে ।

বৃষ্টির পানি মাটিতে রিচার্জ করা যায় কিনা সেটি এরই মধ্যে পরীক্ষা করে দেখেছে “ঢাকা ওয়াসা” । তাঁরা বৃষ্টির পানি ধরে সরাসরি একটি ফিল্টারের মাধ্যমে মাটির ১২৫ মিটার গভীরে সে পানি ঢুকিয়ে গবেষণা করে দেখছে । তাদের বক্তব্য,  ছাদে যদি বৃষ্টির জল সংরক্ষণ করা হয় – ব্যবহার কিংবা রিচার্জের জন্য- তাহলে লাভ হবে দুটো ।  প্রথমত, বর্ষার সময় জলাবদ্ধতা কমে যাবে এবং দ্বিতীয়ত সেই জল ব্যবহার করলে ভূ-গর্ভস্থ জলের উপর চাপ কম পড়বে । তাঁরা আরও জানিয়েছেন,  ঢাকা শহরে মাটির নিচে জল রিচার্জ হওয়ার মতো অবস্থায় নেই। কারণ বৃষ্টির জল  রাস্তায় জমে থাকার পর সুয়েজ লাইন দিয়ে খাল বিল হয়ে নদীতে চলে যাচ্ছে এবং সেথান থেকে সাগরে ।

আজ সচেতন না হলে আগামি দিনে পৃথিবীর অনেক বড় বড় শহরের মতঁ ঢাকা শহর একদিন জল শুন্য হয়ে যেতে পারে । এ কারনে আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়াটার এইড-এর উদ্যোগে এক কনভেনশের আয়োজন করা হয়েছিল ঢাকায় ।  সেই  কনভেনশনে যোগ দিতে এসে শ্রীলংকার বেসরকারি সংস্থা রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং ফোরামের রাজেন্দ্র ডি সিলভা বিবিসি বাংলাকে বলেন, “বৃষ্টির জল সংরক্ষণের কাজ দেশটিতে গত ২৪ বছর যাবত চলছে।  শ্রীলংকায় প্রায় ৪৫ হাজার ছোট-বড় ট্যাংক আছে যেখানে বৃষ্টির জল সংরক্ষণ করা হয় । এছাড়া পুকুর, কুয়া এবং জলাধার পরিষ্কার এবং মানুষ এগুলোকে দুষিত করেনা । বিভিন্ন হাসপাতাল এবং মন্দিরে বৃষ্টির জল  ধরে রাখার জন্য জলের  ট্যাংক স্থাপন করা হয়েছে । এমন কি  ‘শ্রীলংকায় বহু গ্রাম আছে যেখানে জলের অন্য কোন উৎস নেই। সেখানকার মানুষ বৃষ্টির জলের  উপর নির্ভরশীল” ।

সমীক্ষায় দেখা গেছে,  শ্রীলংকায় প্রতি বছর গড়ে ২৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত  হলেও সেখানে সব জায়গায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ সমান নয় । অনেক এলাকা আছে যেখানে অনেক কম বৃষ্টি হয় । এ কারনে শ্রীলঙ্কা অনেক আগে থেকেই সাবধান হয়েছে । এবং তাঁরা  প্রাকৃতিক-ভাবে গড়ে ওঠা পুকুর এবং বড় আকারের জলাধার তৈরি করেছে যেখানে বৃষ্টির জল জমা করতে পারে । এছাড়া তারা অনেকগুলি ব্যবস্থা নিয়েছে বৃষ্টির জল সংরক্ষনের জন্য । বাংলাদেশ হয়ত আগামি দিনে শ্রীলংকার জল সংরক্ষনের মডেল গুলি অনুসরণ করতে পারে ।

Kajal Paul is one of the Co-Founder and writer at BongDunia. He has previously worked with some publishers and also with some organizations. He has completed Graduation on Political Science from Calcutta University and also has experience in News Media Industry.

Leave A Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.