বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ ধর্ষণ রুখতে কঠোর পদক্ষেপ নিল শেখ হাসিনার বাংলাদেশ সরকার । ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান (রাফি) হত্যা মামলায় অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলাসহ ১৬ জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা এগারোটা নাগাদ রায় শোনান ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মামুনুর রশিদ। রায়ে ১৬ জন অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয় আদালত। নুসরাত জাহান হত্যা মামলায় সোশ্যাল মিডিয়া এবং সংবাদ মাধ্যমগুলির প্রশংসা করে তিনি বলেন, গণমাধ্যমের কারণেই এই ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা দেশবাসী জানতে পারেছে।
আদালত চত্বরে আজ সকাল থেকেই রায় শোনার জন্য যথেষ্ট ভিড় ছিল । নিম্ন চাপের কারনে আকাশ মেঘলা এবং সকাল থেকেই গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে সাধারন জনতা অপেক্ষা করছিল আদালত কি রায় দেয় সেটি দেখার জন্য । বিচারক রায় ঘোষণা করার পরেই অভিযুক্তরা চিত্কার চেঁচামেচি শুরু করে। কেউ কেউ কান্নায় ভেঙে পড়ে। উচ্চ আদালতে আপিল করার কথাও বলেন অনেকে । বিরোধীপক্ষের আইনজীবীদেরও অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে অভিযুক্তরা । আদালত চত্বরে বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে পুলিশ পাহারায় আইনজীবীদের সরিয়ে দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, গত ২৭ই মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা নিজের ডেকে নিয়ে গিয়ে নুসরাতের সঙ্গে অভব্য আচরণ করে । এ ঘটনায় নুসরাতের মা সোনাগাজী থানায় মামলা করলে অধ্যক্ষকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর পর থেকে নির্যাতিতার পরিবারে হুমকি আসা শুরু করে মামলা তুলে নেবার জন্য । মামলা তুলে না নেওয়ায় ৬ই এপ্রিল মাদ্রাসার প্রশাসনিক ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে নুসরাতের হাত-পা বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয় কয়েকজন দুষ্কৃতি।
গত ১০ই এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিত্সাধীন অবস্থায় অগ্নিদগ্ধ নুসরাতের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান (নোমান) সোনাগাজী থানায় মামলা করেন। পরে মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়। গত ২৮ মে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন তদন্ত শেষে মাদ্রাসার অধ্যক্ষসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে ৮৬৯ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র দাখিল করে। মাত্র ৬১ দিনের মধ্যেই ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় বিচার পেলেন নির্যাতিতা ।