‘লিওনেল মেসি’, নামটি’র সাথে অপরিচিত কাউকে সারা পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয়। খেলাধূলা’র সাথে কোনোকালেই বিশেষ কোনও অন্তরঙ্গতা তৈরি হয়নি এমন মানুষ’ও ফুটবলের ভগবান বলতে একজন’কেই চেনেন, তিনি হলেন লিওনেল মেসি।
শৈশবে বিকলাঙ্গতার শিকার লিওনেল মেসি‘র ন্যায় দ্বিতীয় কেউ আর পৃথিবীতে জন্মাবেনা, একথা নিশ্চিতরূপে বলাই যায়। এমনকি অনেক প্রতিপাদ্যে তাঁকে ভগবান বা এলিয়ান বলেও উল্লেখ করতে দেখা গেছে অনেক সময়। গবেষকদের মতে, মেসি শুধু অভ্যাস বা শিক্ষণের কারনে একজন খেলোয়াড় হয়ে ওঠেন’নি, জন্ম থেকেই তাঁর রক্তে রয়ে গেছে ফুটবল, অনেকটা জিনগত’ও বলা চলে।
৩০ বছর অতিক্রম করা সত্ত্বেও এখনও সমান দক্ষতা, বয়েসের ছাপ কোনওদিন খেলায় দেখা যায়নি তাঁর, আজও ২০ বছরের সদ্য যুবকদের মতই ফিট লিওনেল মেসি। তবে বার্ধক্যের শিকারে যে তাঁকেও পড়তে হবে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। তাহলে কি সেদিন পথে বসবে ভক্তরা? নতুন কেউ কি নিতে পারবে তাঁর জায়গা? না, কখনই না, মেসি মেসি’ই, তাঁর কোনও বিকল্প হতেই পারেনা। তবে সম্প্রতি এ কেমন দাবী করছেন বিজ্ঞানীরা? এও কি সম্ভব?
বিজ্ঞান কি না পারে? যত দিন এগোচ্ছে, আরও বহু নতুন নতুন প্রযুক্তি উন্মোচিত হয়ে যাচ্ছে আমাদের সামনে। আজ থেকে ৫০ বছর আগের পৃথিবীর সাথে আজকের পৃথিবীর আকাশ-পাতাল তফাৎ, আর তার জন্য সর্বপ্রধান ভূমিকা পালন করেছে বিজ্ঞান।
বায়োলজিক্যাল সাইন্সে বর্তমানে সবচেয়ে বেশী আলোচ্য বিষয় হলো ক্লোন। ক্লোন প্রযুক্তির মাধ্যমে জীবসমাজকে দিন দিন এগিয়ে নিয়ে চলেছে বিজ্ঞান। তবে ক্লোনিং এর মাধ্যমে হুবহু একই বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন মানুষ তৈরি’ও কি সম্ভব? বিজ্ঞানীদের উত্তর হলো ‘হ্যাঁ’।
ইউরোপিয়ান জেনোম আরকাইভের প্রধান বিখ্যাত জেনেটিক বিশেষজ্ঞ আরকাদি নাভারো সম্প্রতি বললেন, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে মেসি‘র ক্লোন বানানো সম্ভব, যাকে দেখে লিওনেল মেসি‘র যমজ ভাই বলে মনে হতে পারে।
নাভারো বললেন, “আমরা অবশ্যই মেসির মত হুবহু আরেকজন খেলোয়াড় মেসিকে পেতে পারি। বর্তমানে যে টেকনিক ব্যবহার করা হয় সেটা ব্যবহার করে আমরা তার ক্লোন তৈরি করতে সক্ষম হবো। যেটা দেখতে মনে হবে যেন মেসির জমজ কোনো ভাই।”
তিনি আরও বললেন, “ধরা যাক, আমরা দুই জোড়া মেসি তৈরি করে ফেলতে পারলাম। অর্থাৎ মেসির ক্লোন তৈরি করতে গিয়ে একাধিক মেসির জন্ম দিলাম, তাহলে তাদের মধ্যে একজনকে আমরা টাইম চেম্বারে হিমায়িত করে রেখে দিতে পারবো। তাহলে অন্তত ২০ কিংবা ৩০ বছর পর আবারও আমরা আরেকজন মেসিকে পেতে পারবো। যেটাকে হিমায়িত করে রাখা হবে, তাকে তার সঠিক সময়ে পৃথিবীতে নিয়ে আসা সম্ভব হবে। যদি সব কিছুই পরিকল্পনা মতো সঠিকভাবে এগোয়, তাহলে সেই মেসিও হবে প্রকৃত মেসির মত একই।”
তাহলে কি সত্যিই আরও একজন মেসি‘কে আমরা পেতে পারি, যে স্বভাব এবং গুণে বর্তমান মেসি‘র সমান হবে? তার উত্তরে নাভারো বললেন, “জেনেটিক্সের বিদ্যা এখন অনেক কিছুই সহজবোধ্য করে দিয়েছে। সম্ভাবনা তৈরি করেছে শুধু। মেসির ক্ষেত্রে এটা প্রজোয্য হতে পারে। তবে, সে ক্ষেত্রে যে মেসি তৈরি হবে তিনি মেসির পূর্ণাঙ্গ বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন হতেও পারেন আবার নাও পারেন। অবস্থানগত বিষয় এবং আমাদের চারপাশে যা ঘটছে, তার ভিত্তিতে আমরা শুধু চেষ্টা করে দেখতে পারি।”