বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্ক: রাণাঘাট ষ্টেশনের ভবঘুরে রানু মণ্ডলের নাম এখন গোটা ভারতবর্ষ জানে। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বড় পর্দার অনেক শিল্পীরও প্রশংসা কুড়িয়েছেন রানু।
মাসখানেক আগে রাণাঘাট ষ্টেশন থেকে রানু মণ্ডলের গানের ভিডিও সামাজিক গণমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন অতীন্দ্র চক্রবর্তী নামক এক যুবক। এরপরই রানু’র গান শুনে মুগ্ধ হয়ে যান নেটপাড়ার অনেকেই। প্রায় ৬০-৬৫ বছর বয়সে অমন মিষ্টি গলার কারণে বহুল পরিমাণে প্রশংসা পেয়েছিলেন রানু। উল্লেখ্য, সে দিনের ভিডিও’তে প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী লতা মঙ্গেশকরের ‘এক প্যায়ার কা নাগমা’ গানটি গেয়েছিলেন রানু।
এরপর রানু’র গানে মুগ্ধ হয়ে যান বড় পর্দার অনেকেই। এমনকি, বলিউডের জনপ্রিয় মিউজিক কম্পোজার হিমেশ রেশমিয়া তাঁকে নিজের সাথে গান করার জন্য অনুরোধ করেন। হিমেশের অনুরোধে দুটি প্লে-ব্যাকে গেয়েছেন রানু।
এদিকে সামাজিক গণমাধ্যমে রানু’র গলায় ‘এক প্যায়ার কা নাগমা’ গানটি শোনার পর অনেকেই তাঁর গলাকে ভারতের প্রখ্যাত অভিজ্ঞ সঙ্গীতশিল্পী লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে তুলনা করছিলেন। হ্যাঁ, অবশ্যই সুন্দর গান করেন রানু মণ্ডল। তাই বলে লতা’র মতো একজন লেজেন্ড এর সঙ্গে তুলনা কতটা যৌক্তিক, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিচ্ছিল মানুষের মধ্যে। এপ্রসঙ্গে কেউ কিছু বলার আগে লতা মঙ্গেশকর নিজেই মুখ খুললেন। রানু’র প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, “যদি আমার নাম এবং কাজের সৌজন্যে কারো ভাল হয়, তবে আমি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করব। কিন্তু, আমি মনে করি কাউকে নকল করা কখনো স্থায়ী এবং নির্ভরযোগ্য সমাধান হতে পারে না।” তিনি আরও পরামর্শ দিয়েছেন, “আসল হও। কাউকে নকল করো না। নিজের স্টাইলে গান গাও, নিজের মনের মত করে গান গাও।”
লতা’র এহেন মন্তব্য অবশ্য মেনে নিতে পারেননি কেউ কেউ। অনেকের মতে, অতো বড় একজন শিল্পী হিসাবে তাঁর উচিত ছিল হিংসা না করে রানু’র পাশে দাড়ানো, তাঁকে উৎসাহ দেওয়া। সম্প্রতি এপ্রসঙ্গে মুখ খুললেন হিমেশ রেশমিয়া।
লতা মঙ্গেশকরের মন্তব্যের প্রসঙ্গে সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে হিমেশ বললেন, “কোন প্রেক্ষিতে লতা মঙ্গেশকর কথাগুলো বলেছেন তা যাচাই করতে হবে। যখন আপনি কাউকে নকল করেন, তখন কাজটা ভালো হয় না। তবে আমি এটাও মনে করি যে কারো থেকে যদি অনুপ্রেরণা নেওয়া যায় তাহলে তা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।”
শুধু হিমেশই নয়। সম্প্রতি রানু মণ্ডল নিজেও লতা’র মন্তব্যের উত্তর দিলেন। বেশ বুদ্ধিমত্তার সাথে তিনি বললেন, “লতাজি’র বয়সের অনুপাতে আমি অনেক ছোট, ভবিষ্যতেও আমি ছোটই থাকবো। ছোট থেকে আমার ওনার গলা ভালো লাগে। ওনার গান শুনেই বড় হয়েছি।” এই ধরণের মন্তব্যের মাধ্যমে রানু লতা মঙ্গেশকর’কে নিজের শ্রদ্ধা জানানোর পর তাঁদের মধ্যেকার সমস্ত বিবাদের ইতি ঘটবে বলে আশা করা যায়।