বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্ক: চলতি মাসের প্রথম দিকে, ৫ই আগস্ট ভারত সরকার কতৃক ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ এবং ৩৫এ অনুচ্ছেদ দুটি খারিজ করা হয়। এর ফলস্বরূপ সীমান্তবর্তী জম্মু ও কাশ্মীর দুটি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত হয়।
৫ই আগস্ট ভারতের বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ স্বাক্ষরিত বিবৃতি’টি পাঠ করার পর থেকেই জম্মু-কাশ্মীরে প্রবল উত্তেজনা দেখা দেয়। ভারত সরকার এমন আকস্মিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার আগে জম্মু-কাশ্মীরের রাজনৈতিক নেতাদের সাথে কোনরকম আলোচনা না করায় তাঁরা বিক্ষোভ শুরু করে দেয়। একারণে উপত্যকার অন্যতম বিরোধী নেতা ও সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাহ, ওমর আবদুল্লাহ ও মেহবুবা মুফতি’কে প্রশাসনের তরফ থেকে গৃহবন্দি করে রাখার পর গ্রেফতার করা হয়েছে।
এমতাবস্থায় জম্মু-কাশ্মীরের বর্তমান পরিস্থিতি দেখতে উপত্যকায় যাবেন বলে স্থির করেন ভারতের জাতীয় কংগ্রেস দলের অন্যতম মুখপাত্র রাহুল গান্ধী। ২৪শে আগস্ট, শনিবার তিনি কাশ্মীর পৌঁছানোর কথা ঘোষণা করেছেন। তাঁর সাথে আরও যাচ্ছেন কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ, আনন্দ শর্মা, কেসি বেণুগোপাল, ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির নেতা ডি রাজা, ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির নেতা সীতারাম ইয়েচুরি, দ্রাভিদা মুনেত্রা কাজাগামের তিরুচি সিবা, রাষ্ট্রীয় জনতা দলের মনোজ ঝাঁ, তৃণমূল কংগ্রেসের দীনেশ ত্রিবেদী, জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টির মজিদ মেনন এবং ধর্মনিরপেক্ষ জনতা দলের কুপেন্দ্র রেড্ডি প্রমুখ।
কিন্তু এপ্রসঙ্গে উল্লেখ্য যে, বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাদের কোনোভাবেই জম্মু-কাশ্মীরে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসন। পূর্বে কংগ্রেস নেতা সাংসদ গুলাম নবি আজাদ দুবার কাশ্মীর উপত্যকায় যাওয়ার চেষ্টা করলেও শ্রীনগর বিমানবন্দর থেকে দিল্লি ফিরে আসতে হয় তাঁকে। এছাড়া, সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি এবং সিপিআই সাংসদ ডি রাজাও কাশ্মীরে ঢুকতে গিয়ে ব্যর্থ হন।
ভারতীয় প্রশাসনের তরফ থেকে জম্মু-কাশ্মীরের রাজনৈতিক নেতাদেরকে গ্রেফতার করার পর কিছুদিন আগে রাহুল গান্ধী অভিযোগ তুলেছিলেন, “জম্মু-কাশ্মীরের মানুষের গণতন্ত্র বিপন্ন। সেখানকার মানুষ নিপীড়িত। অথচ কেন্দ্রীয় সরকার সেই খবর সামনে আসতে দিচ্ছে না।” তাঁর এই অভিযোগের জেরেই জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক রাহুল গান্ধীকে আমন্ত্রণ জানিয়ে তিনি বলেন, “রাহুল গান্ধী যেন এসে দেখে যান, কাশ্মীরবাসী কেমন আছেন।”
কিন্তু জম্মু-কাশ্মীর এর প্রশাসন কিন্তু রাহুল গান্ধীর এই যাত্রায় একদমই খুশী নয়। রাহুল গান্ধী সহ বিভিন্ন বিরোধী রাজনৈতিক দল’গুলিকে অনুরোধ করে প্রশাসনের তরফ থেকে সম্প্রতি একটি টুইট বার্তায় লেখা হয়, “ভারত-পাক সীমান্তের ওপারের সন্ত্রাসবাদী ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের থেকে জম্মু-কাশ্মীরের মানুষকে নিরাপত্তা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ফেরানোর প্রক্রিয়া চলছে। এ অবস্থায় জম্মু-কাশ্মীরের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ফেরানোর প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটানোর চেষ্টা করা উচিত নয় বিরোধী দলগুলোর প্রবীণ রাজনৈতিক নেতাদের।”