বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্ক: চলতি বছর ২০১৯ এর ৫ই আগস্ট তারিখে ভারত সরকার কতৃক ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ এবং ৩৫এ অনুচ্ছেদ দুটি খারিজ করার পর থেকেই বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি হয় জম্মু ও কাশ্মীর উপত্যকায়। জম্মু ও কাশ্মীর’কে দুটি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করার ফলে ব্যপক ক্ষুব্ধ হয়েছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তান, আর সেকারণে তারা সবরকম ভাবে জম্মু-কাশ্মীর এর শান্তি বিঘ্নিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

এমতাবস্থায় জম্মু ও কাশ্মীরের শান্তি ফিরিয়ে আনা ভারত সরকারের কাছে সবচেয়ে বড়ো চ্যালেঞ্জ। একারণে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল হওয়ার ঘোষণার সময় জম্মু-কাশ্মীর এ কড়া নিরাপত্তার বন্দোবস্থ করেছে ভারতীয় প্রশাসন। আর সেকারণে বর্তমানে বহির্বিশ্বের সাথে জম্মু-কাশ্মীর এর কোনও যোগাযোগ নেই।

এরই মধ্যে সম্প্রতি কিছুদিন আগে কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধী অভিযোগ তুলেছিলেন, “জম্মু-কাশ্মীরের মানুষের গণতন্ত্র বিপন্ন। সেখানকার মানুষ নিপীড়িত। অথচ কেন্দ্রীয় সরকার সেই খবর সামনে আসতে দিচ্ছে না।” তাঁর এই অভিযোগের জেরেই জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক রাহুল গান্ধীকে আমন্ত্রণ জানিয়ে তিনি বলেন, “রাহুল গান্ধী যেন এসে দেখে যান, কাশ্মীরবাসী কেমন আছেন।”

সেই কথা মতো গত ২৪শে আগস্ট, শনিবার বেশ কিছু রাজনৈতিক নেতা’কে সঙ্গে নিয়ে দিল্লী থেকে শ্রীনগর বিমানবন্দর পৌঁছান রাহুল গান্ধী।

কিন্তু জম্মু-কাশ্মীর এর প্রশাসন রাহুল গান্ধীর এই যাত্রায় একদমই খুশী হয়নি। রাহুল গান্ধী জম্মু-কাশ্মীর এ পদার্পণ করার কথা ঘোষণা করলে বিভিন্ন বিরোধী রাজনৈতিক দল’গুলিকে অনুরোধ করে প্রশাসনের তরফ থেকে সম্প্রতি একটি টুইট বার্তায় লেখা হয়, “ভারত-পাক সীমান্তের ওপারের সন্ত্রাসবাদী ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের থেকে জম্মু-কাশ্মীরের মানুষকে নিরাপত্তা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ফেরানোর প্রক্রিয়া চলছে। এ অবস্থায় জম্মু-কাশ্মীরের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ফেরানোর প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটানোর চেষ্টা করা উচিত নয় বিরোধী দলগুলোর প্রবীণ রাজনৈতিক নেতাদের।”

তা স্বত্বেও গত ২৪শে আগস্ট, শনিবার রাহুল গান্ধী শ্রীনগর পৌঁছালে জম্মু-কাশ্মীর এর প্রশাসন অসন্তুষ্ট হয়। বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদেরকে শ্রীনগর বিমানবন্দরের বাইরে বেরোতে দেওয়া তো দূরের কথা, তাঁদেরকে বিমানবন্দর থেকেই দিল্লী ফেরত পাঠানো হয়।

এই ঘটনার পর দিল্লী ফিরে রাহুল গান্ধী জানান, জম্মু-কাশ্মীর এর পরিস্থিতি স্বাভাবিক নেই। জম্মু-কাশ্মীরের প্রশাসনের প্রতি ক্ষোভ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, সেখানকার বাসিন্দাদের সহযোগিতা করার উদ্দেশে আমরা সেখানে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত বিমানবন্দরের বাইরে আমাদের যেতে দেওয়া হলো না। এ থেকেই পরিষ্কার বোঝা যায় সেখানকার পরিস্থিতি।

উত্তরে প্রশাসনের তরফ থেকে বিবৃতি জারি করে বলা হয়, সীমান্তের ওপারের সন্ত্রাস ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হামলার আতঙ্ক থেকে জম্মু-কাশ্মীরের মানুষকে রক্ষা এবং শান্তি বজায় রাখার চেষ্টা করছে সরকার; দুষ্কৃতকারী মোকাবিলায় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এমতাবস্তায় প্রবীণ রাজনৈতিক নেতাদের এমন কিছু করা উচিত নয় যাতে শান্তি বিঘ্নিত হয়।

Atanu Chakraborty is a content and news writer at BongDunia. He has completed his Bachelor Degree on Mass Communication from Rabindra Bharati University. He has worked with mainstream media, in the capacity of a reporter and copywriter.

Leave A Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.