বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ কলকাতা বন্দরের ১৫০ বছর উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নয়া নামকরণ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নামে করায় বিতর্ক তৈরি হয়েছিল । এবার প্রতিবাদে সরব হয়ে রাস্তায় নামল যাদবপুরের ছাত্রছাত্রীরা । জোরাল দাবী উঠতে শুরু করেছে কলকাতা বন্দরের নাম শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নামে না করে রাজা রাম মোহন রায়ের নামে করানোর ।
১৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে কলকাতা বন্দরের নাম শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নামে করে গেছেন নরেন্দ্র মোদী । বিতর্ক সেখান থেকেই শুরু হয়েছে । এবার রীতিমতো রাস্তায় নেমে শুরু হল প্রতিবাদ । দাবী বন্দরের নাম যদি পরিবর্তন করতেই হয়, তবে সেই নাম হোক রাজা রামমোহন রায়ের নামে।
কলকাতা বন্দরের নাম পরিবর্তনের প্রতিবাদ শুরু হয়েছে সেই যাদবপুরে । বুধবার বিকেলে বিবাদী বাগ থেকে পোর্ট ট্রাস্টের হেড অফিস ফেয়ারলি প্লেস পর্যন্ত কার্যত শ্যামাপ্রসাদ এবং মোদী বিরোধী স্লোগান দিয়ে মিছিল বের হয় । এই প্রতিবাদী মিছিলের মূল উদ্যোক্তা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সৈকত সিট। অর্থাৎ ঘুরে ফিরে আবার খবরের শিরোনামে আসতে চলেছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যাল্যের ছাত্র সৈকত বলেন, ‘১২ জানুয়ারী নেতাজী ইন্ডোর স্টেডিয়ামে কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের ১৫০ বছর উদযাপন উপলক্ষ্যে নরেন্দ্র মোদী যেটা করে গেলেন সেটা আমরা, সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা, একেবারেই হালকা চালে নিচ্ছি না। ২০১৮ সালে ‘মুখ্য বন্দর কর্তৃপক্ষ আইন(Major Port Authority Act, 2018)’ প্রণয়নের মাধ্যমে ইতোমধ্যেই আপনি বন্দরগুলোতে বেসরকারীকরণের দুয়ার ব্যাপকভাবে খুলে দিয়েছেন। এটা বেশীরভাগ মানুষই জানেন না। ফলে দেশের সম্পদকে দেশের মানুষের হাত থেকে এর মধ্যেই আপনি মুনাফাখোর বেনিয়াদের হাতে চুপিচুপি তুলে দেওয়ার যাবতীয় বন্দোবস্ত করে রেখেছেন।’ ছাত্রদের দাবী , কেন্দ্রীয় সরকার বেসরকারিকরন করে বহু মানুষের কাজ হারাবার ব্যবস্থা করে রেখেছে। এখন নাম পরিবর্তন করে আরও খারাপ কাজ করছে। হুঁশিয়ারি, ‘আমরা এটার শেষ দেখে ছাড়বো।’
সৈকত এখানেই থেমে থাকেন নি । তিনি আরও বলেন, ‘কলকাতা বন্দরের নাম নাকি ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বন্দর! কিভাবে একজন হিন্দুত্ববাদী , বিশ্বাসঘাতকের নামে ঐতিহাসিক কলকাতা বন্দর হতে পারে? যে বন্দর ঐতিহাসিক নৌ বিপ্লবের অঙ্গ সেই বন্দর কীভাবে একজন ইংরেজ চাটুকারের নামে হতে পারে? শ্যামাপ্রসাদ বাংলার নবজাগরণের মুখ তো কোনওভাবেই নয়। বাঙালির এবং বাংলার নবজাগরণের মুখ রাজা রামমোহন রায়। তাই আমরা ওনার নামে অর্থাৎ, ‘ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বন্দর’-এর নাম বদলে ‘রামমোহন রায় বন্দর’ রাখার দাবী করছি’ ।
কলকাতা বন্দরের নাম পরিবর্তনের দাবী দিয়ে ফের বাংলায় রাজনৈতিক খেলা শুরু হবার আশঙ্কা করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা । আগামী দিনে যদি অন্য কোন রাজনৈতিক দল প্রতিবাদী ছাত্র ছাত্রীদের পাশে এসে দাঁড়ায় তাহলে এই আন্দোলন বেশ বৃহত্তর আকার নেওয়া অসম্ভব নয় । তবে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল তথা বিজেপির পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত কোন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি ।