বাংলাদেশের ফিরলেই প্রিয়া সাহার উপর নেমে আসতে পারে আইনি জটিলতা – এমনই জানালেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
বাংলাদেশ একটি ইসলামিক দেশ । এখানকার প্রধান ধর্ম ইসলাম । কিন্তু তা হলেও সংখ্যালঘু হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সকলেই মিলেমিশে শান্তিতে বসবাস করে । বর্তমানে এরকম পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে ওয়াশিংটন ডিসিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী ‘ধর্মীয় স্বাধীনতায় অগ্রগতি’ শীর্ষক এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নিতে যাওয়া প্রিয়া সাহা গত ১৭ জুলাই হোয়াইট হাউজে গিয়ে ডনাল্ড ট্রাম্পকে বলেন, বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা মৌলবাদীদের নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। প্রায় ৩ কোটি ৭০ লাখ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান নিখোঁজ হয়েছেন।
ওই তিন দিনব্যাপী ‘ধর্মীয় স্বাধীনতায় অগ্রগতি’ শীর্ষক সম্মেলনে অংশ নেওয়া বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, “প্রিয়া সাহা যে অভিযোগ করেছেন, তা একেবারেই মিথ্যা। বিশেষ মতলবে এমন উদ্ভট কথা বলেছেন তিনি।”
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের উদ্দেশ্যেই প্রিয়া সাহা এই ধরনের বানোয়াট ও কল্পিত অভিযোগ করেছেন।”
ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে প্রিয়া সাহার করা অভিযোগের তীব্র নিন্দা করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম । ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সামনে মিথ্যা তথ্য তুলে ধরার ভিডিও টি ভাইরাল হবার পরপরই শুক্রবার ফেসবুকে এক পোষ্টে তীব্র ভাষায় নিন্দা করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ।
ফেসবুকে তিনি জানান, “আমি জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থায় একাধিকবার ভরা হাউসে পৃথিবীর সব দেশের এবং বাংলাদেশ ও বাইরের দেশের মানবাধিকার সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়েছি । যেখানে শ্রদ্ধা দাস গুপ্তার মত মানুষরা উপস্থিত ছিলেন । কিন্তু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে দেওয়া প্রিয়ার অভিযোগের মতো কোনো অভিযোগ বা প্রশ্ন কাউকে করতে দেখিনি” ।
মন্ত্রী আরো লেখেন, “ধর্মীয় সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বাংলাদেশ । অনেকেই ব্যক্তিস্বার্থে বা না বুঝে এটার ক্ষতি করে ফেলেন । সবার উচিত এই ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকা” ।
উল্লেখ্য প্রিয়া সাহা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কে বলেন, ” স্যার আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি । সেখানে 37 মিলিয়ন হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান বিলীন হয়ে গেছে । দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন । আমরা বাংলাদেশে থাকতে চাই । সেখানে এখনো 18 মিলিয়ন সংখ্যালঘু মানুষ রয়েছে । আমার অনুরোধ দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন । আমরা আমাদের দেশ ছাড়তে চাই না । শুধু থাকার জন্য সাহায্য করুন” ।
প্রিয়া সাহার বক্তব্যর পর রাজনৈতিক মহলে প্রচুর সমালোচনার ঝড় বয়ে গেছে । মোটামুটি ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, পিয়া সাহা কেন এমন ভুল তথ্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কে দিতে গেলেন, তার কৈফিয়ত দিতে হবে দেশে ফিরলেই । সুতরাং আশা কড়া যাচ্ছে ভদ্র মহিলা দেশের মাটিতে পা রাখার সাথে সাথে তাঁকে বেশ কিছু অপ্রীতিকর প্রশ্নের মুখমুখি হতে হচ্ছে ।