বেশ কিছুদিন আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কারনে সবার সামনে আসে অসহায় এক আল্লাদীর কথা। যার থাকার জায়গা ছিল না, ছিল না খাবার ব্যবস্থা, ছিল না সরকারের সহায়তা। স্থানীয় সাংবাদিকদের প্রচেষ্টায় আল্লাদীর এ কাহিনী চোখে পড়ে স্থানীয় প্রশাসনের। তারই ধারাবাহিকতায় বাগেরহাটের সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আল্লাদীকে থাকার ব্যবস্থা করে দিলেন। এর আগে একটি বয়স্ক ভাতারও ব্যবস্থা করা হয়েছিল।

কাঠ-মাটির ঘরে থাকতাম। ঠিকমত ঘুমাতে পারতাম না।বৃষ্টি হলে, শরীরে পানি পড়ত। খুব কষ্ট হত। কখনও ভাবতে পারিনি দালানে থাকব। ইউএনও স্যার দালান করে দিয়েছেন। এখন সেখানে একটু শান্তিতে থাকতে পারব। যারা আমাকে শান্তিতে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছে, তোমাদেরও ঠাকুর শান্তিতে রাখবে। এই বলে চুপ করে ছিলেন আল্লাদী রানী পাল। পাশে থাকা আল্লাদীর মেয়ে রাধা রানীর চোখ বেয়ে পানি পড়ছিল, সে যেন আগেব আল্পুত হয়ে পড়েন পরিবারটি।

বাগেরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ তানজিল্লুর রহমানের ব্যক্তিগত অর্থায়নে নির্মিত নিজের ভবনে (একতলা বিশিষ্ট দালান) বসে রবিবার সকালে এসব কথা বলছিলেন সদর উপজেলার পালপাড়া গ্রামের শতবর্ষ বয়সী অসহায় আল্লাদী রানী পাল।

এর আগে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ তানজিল্লুর রহমান ফিতা কেটে আনুষ্ঠানিক ভাবে আল্লাদী রানীর ঘর উদ্বোধন করেন। এসময় বাগেরহাট সদর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রিজিয়া পারভীন, গোটাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ শমসের আলী, স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিনসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। আল্লাদীর মেয়ে রাধা রানী বলেন, আমাদের ঘরের অবস্থা খুব খারাপ ছিল। বৃদ্ধ মাকে নিয়ে থাকতে খুব কষ্ট হত। রোদ, ঝর, বৃষ্টিতে মাঝে মাঝেই মা অসুস্থ্য হয়ে যেত। টিএনও সাহেব আমাদের একটি ঘর করে দিয়েছে। এখন এখানে শান্তিতে থাকতে পারব। এছাড়াও আর্থিক সহযোগিতাও করেছেন যা দিয়ে মাটির টালি তৈরির জন্য একটি ঘরও তৈরি করেছি।

প্রতিবেশী উজ্জল পাল বলেন, চোখের সামনে দেখেছি আল্লাদী অনেক কষ্ট করে বসবাস করত। টিএনও সাহেব তাকে একটি দালান করে দিয়েছেন। তা দেখে আমদের ভাল লাগছে।

এর আগে ৮ মে  আল্লাদীর জীবনযুদ্ধ এ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হলে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ তানজিল্লুর রহমান আল্লাদীর দায়িত্ব নেন। পরে ৯ মে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ তানজিল্লুর রহমান আল্লাদীর বাড়িতে যান, বয়স্ক ভাতার কার্ডসহ নগদ অর্থ প্রদান করেন। তখন আল্লাদীকে একটি ঘর করে দেওয়ার আশ্বাস দেন।

বাগেরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ তানজিল্লুর রহমান বলেন, আল্লাদীকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় আমার বিবেকে নাড়া দেয়। তাৎক্ষনিক আমি আপনাদের সাথে নিয়ে সরেজমিনে আসি। সরেজমিনে এসে আল্লাদী পরিবারের সাথে কথা বলে দেখলাম তার ঘরটি খুবই খারাব ও তার একটি মেয়ে আছে বিয়ে হয়নি সেই চিন্তা থেকে আমার ইচ্ছা হলো তাদের বসাবসের জন্য একটি ঘর তৈরী করে দেয়া। তাদের প্রতি সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

Mr. Shuva is a News and Content Writer at BongDunia. He has worked with various news agencies all over the world and currently, he is having an important role in our content writing team.

Leave A Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.