বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ বালাকোটে এয়ার স্ট্রাইক হামলার পর ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কে চিড় ধরেছিল । কিছুদিন আগে কাশ্মীরে 370 ধারা বিলুপ্ত করণের মাধ্যমে কাশ্মিরিদের যে বিশেষ বিশেষ সুযোগ-সুবিধা বন্ধ করে দেওয়া হয়, তা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল পাকিস্তান । তারপর সীমান্তে বিক্ষিপ্তভাবে গোলাগুলি চলছে । মাত্র কয়দিন আগে ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের বিমান পাকিস্তানের আকাশপথ ব্যবহার করার অনুমতি দেয়নি । এবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিমান পাকিস্তানের আকাশপথ ব্যবহার করতে পারবে না বলে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন পাকিস্তান সরকার ।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় যাওয়ার কথা । পাকিস্তানের আকাশ পথ ব্যবহার করলে একদিকে যেমন জ্বালানি খরচ কমে, অপর দিকে অনেক কম দূরত্ব অতিক্রম করতে হয় । এ কারণে নরেন্দ্র মোদী নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় যাওয়ার আগে ভারত পাকিস্তানের আকাশ পথ ব্যবহার করার জন্য অনুমতি চায় পাকিস্তানের কাছে । প্রথমে পাকিস্তানের তরফে জানানো হয়, তারা আলোচনার পরে এসম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেবে। বুধবার সন্ধেবেলা পাকিস্তানের পক্ষ থেকে অনুমতি না দেবার কথা বলা হয় । পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি সাফ জানিয়ে দেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিমানকে পাক আকাশসীমা ব্যবহারের অনুমতি দেবে না পাকিস্তান। এই বিষয়ে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে”।
পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশির এই মন্তব্যের পর ভারতের বিদেশমন্ত্রক এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছে, “পাকিস্তান সরকারের এই সিদ্ধান্তের আমরা তীব্র নিন্দে করছি। দু’সপ্তাহের মধ্যে দু’বার দেশের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ দুই ব্যক্তির বিমান ওড়ার অনুমতি দিল না তারা। এটা কোনও দেশ করে না।” বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমার জানিয়েছেন, “পাকিস্তানের উচিত নিজেদের সিদ্ধান্ত নিয়ে ভাবা। এ ভাবে অন্য দেশের প্রতি বিরূপ মনোভাব দেখিয়ে তারপর গোটা বিশ্বের সামনে ভালো সাজার চেষ্টা করে কোনও লাভ হবে না তাদের।”
উল্লেখ্য কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বন্ধ করায় পাকিস্তান ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করে । শুধু তাই নয়, ভারতের হাইকমিশনারকে দেশে ফেরত পাঠায় । র আগে ভারতের বায়ুসেনা বালাকোটে জঙ্গি ঘাঁটিতে বোমা ফেলার পর পাকিস্তান ঘোষণা করেছিল, ছ’মাস তাদের আকাশসীমা দিয়ে ভারতের কোনও বিমানকে উড়তে দেওয়া হবে না। তখন বহু বিমানকে ঘুরপথে যেতে হচ্ছিল। ফলে জ্বালানি প্রয়োজন হচ্ছিল বেশি। অনেক বিমান মাঝপথে থেমে নতুন করে জ্বালানি ভরতে হচ্ছিল। পরে আকাশপথে পাকিস্তানের ১১ টি রুটের মধ্যে দু’টি আন্তর্জাতিক বিমানের জন্য খুলে দেওয়া হয়।
নরেন্দ্র মোদীর বিমান উড়ার অনুমতি না দেওয়ায় দু’দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও তলানিতে এসে ঠেকবে এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই । পাআকিস্তানের পক্ষ থেকে বিমান উড়ানের অনুমতি না দেওয়ার কথা ঘোষণা করার পর, পাকিস্তানের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ফাওয়াদ হুসেন টুইট করে বলেন, “প্রধানমন্ত্রী আমাদের বায়ুসীমা ভারতের জন্য পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ার কথা ভাবছেন। মন্ত্রিসভার বৈঠকে তাঁকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, পাকিস্তানের যে সড়কের ওপর দিয়ে ভারতের নানা পণ্য আফগানিস্তানে যায়, তাও বন্ধ করে দেওয়া উচিত। শেষে ফাওয়াদ হুসেন বলেছিলেন, মোদী ব্যাপারটা শুরু করেছেন, আমরা শেষ করব।”
এ