বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্ক: ভারত পাকিস্তান সম্পর্ক যে কোনদিন ভাল হবার হয় একথা জোর গলায় বলা চলে । মুখে পাকিস্তান যতই মিষ্টি কথা ব্লুক না কেন, কাশ্মীর নিয়ে তারা কোন সমঝোতায় যাবে না, এটা নিশ্চিত ভাবে বলা যায় । কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত বিরোধী একাধিক পদক্ষেপ ইতিমধ্যেই নিয়েছে পাকিস্তান । ভারতের গোয়েন্দা দপ্তর তাদের রিপোর্টে জানিয়েছে, এ বার জম্মু-কাশ্মীর ও রাজস্থান সীমান্তে নাশকতা চালানোর চেষ্টা করছে পাকিস্তান ।দেখা যাচ্ছে ইতিমধ্যেই এই দুই সীমান্তে প্রচুর পরিমাণ পাক সেনা জড় করা হয়েছে । সবচেয়ে বড় ভয়ের খবর এটাই যে, এমনকী এই কাজের পরিকল্পনার জন্য পুলওয়ামা হামলার মাস্টারমাইন্ড জইশ প্রধান মাসুদ আজহারকে পাকিস্তান গোপনে কারাগার থেকে বের করে এনেছে কোন প্রকার আন্তর্জাতিক নি ষে ধের তোয়াক্কা না করে ।
গোয়েন্দা সূত্রে খবর অনুযায়ী জানা গেছে, শিয়ালকোট-জম্মু সেক্টর ও রাজস্থানে আগামী কিছু দিনের মধ্যে কিছু একটা বড় নাশকতা ঘটাতে চলেছে পাকিস্তান । কারণ তা না হলে, ইতিমধ্যেই সীমান্ত এলাকা বরাবর সেনা মোতায়েন করত না তারা । ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এই রিপোর্ট পাওয়া মাত্র দুই সীমান্তে থাকা ভারতীয় জওয়ানদের ইতিমধ্যেই সতর্ক করে দিয়েছে । সীমান্ত এলাকায় সেনবাহিনিকে যে কোন পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে ।
এ কথা সত্য পাকিস্তানে যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক না কেন, কাশ্মীর নিয়ে বেচাল কিছু করতে গেলে বিপদে পড়তে বাধ্য । কারণ পাকিস্তানের সরকার চালায় মুলত সেনাবাহিনী । সেই কারনেই হয়ত, গত শুক্রবার পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, কাশ্মীরের উপর থেকে কাশ্মীরিদের প্রাপ্য বিশেষ সুযোগ সুবিধা গুলি তুলে নেবার পরিপ্রেক্ষিতে কাশ্মীরের জনগণের জন্য যতটা করা যায়, সেটা করতে পাকিস্তান বদ্ধ পরিকর । পাশাপাশি তিনি এটাও জানাতে ভোলেননি যেজে,ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তার জন্য আন্তর্জাতিক কমিউনিটি দায়ী থাকবে । পাক সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া বিবৃতি দিয়েছেন, এর আগেও কাশ্মীরের জন্য পাকিস্তান রক্ত পাত করেছে, এ বারেও শেষ গুলি, শেষ সেনা ও শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত কাশ্মীরের জন্য লড়াই চালিয়ে যাবেন তারা ।
এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে ভারতীয় গোয়েন্দা বিভাগ জানতে পেরেছে, জঙ্গি গোষ্ঠী জইশ ই মহম্মদ প্রধান মৌলানা মাসুদ আজহারকে গোপনে জেলের বাইরে বের করে আনা হয়েছে । সন্দেহ করা হচ্ছে, মাসুদকেই দায়িত্ব দেওয়া হবে ভারতে আক্রমণ করার পরিকল্পনা তৈরিতে । উল্লেখ করা যেতে পারে, এই মাসুদকেই পুলওয়ামা হামলার পর আন্তর্জাতিক চাপে পড়ে নিজেদের হেফাজতে নিতে বাধ্য হয়েছিল পাক প্রশাসন । ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, কাশ্মীরের উপর থেকে যে স্পেশ্যাল স্ট্যাটাস তুলে নেওয়ায় পাকিস্তানের আইএসাই বদলা নেবার ছক কষছে ভারতের উপর । খুব সম্ভবত তাদের কোন ধারনা ছিল না, ভারত সরকার এভাবে কাশ্মীর থেকে বিশেষ সুযোগ সুবিধাগুলি তুলে নিতে পারে সে বিষয়ে ।
পাশাপাশি বিশেষজ্ঞরা এমনও আশঙ্কা করছে, পাকিস্তানের সীমান্তে সেনা মোতায়েন শুধুমাত্র একটা সাজানো ঘটনা হতে পারে । ভারতীয় সেনাকে অন্যদিকে বিভ্রান্ত করে মাসুদ আজহারকে দিয়ে অন্যভাবেও হামলা চালাতে পারে পাকিস্তান । সরকারের ফোকাস জম্মু-কাশ্মীরের মধ্যেই রেখে দেশের ভিতরেও হামলা চালানোর পরিকল্পনা করতে পারে পাকিস্তান, এমন সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না । ভারতের জাতীয় সুরক্ষা উপদেষ্টা অজিত ডোভালও ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন, প্রায় ২৫০ জন জঙ্গি ভারত পাক সীমানা দিয়ে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে । কিন্তু ভয়ের কারণ নেই । কারণ তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে । এ বিষয়ে কোনও দিকে ফাঁক রাখতে চাইছে না নয়াদিল্লি । ভারতীয় বাহিনি ইসলামাবাদের সব পরিকল্পনা ব্যর্থ করার জন্য সদা প্রস্তুত ।