বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ কিছুদিন আগেই পাকিস্তানের ইসলামাবাদে কোটি টাকা ব্যয়ে হিন্দু নির্মাণের খবর প্রকাশিত হওয়ায় প্রশংশিত হয়েছিল ইমরান প্রশাসন । কিন্তু মন্দির কাজ শুরু করেও বন্ধ করে দিতে বাধ্য হতে হল প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফের জোটসঙ্গী পাকিস্তান মুসলিম লিগ -কায়েদ (পিএমএল-কিউ) এর আপত্তিতে ।
এই মুহূর্তে পাকিস্তানের রাওয়ালপিণ্ডিতে হিন্দু মন্দির থাকলেও ইসলামাবাদে কোন হিন্দু মন্দির ছিল না । পাক সরকার সেখানকার সংখ্যালঘুদের প্রতি কতটা দয়াশীল সেটা প্রমান করার জন্য মাত্র কিছু দিন আগেই ইসলামাবাদে সংখ্যালঘু হিন্দুদের জন্য কোটি টাকা ব্যয় করে হিন্দু মন্দির নির্মাণ করার উদ্যোগী হয় । মন্দিরের ভিত্তির কাজও শুরু হয়ে গিয়েছিল বলে খবর । কিন্তু সেই মন্দির নির্মাণ কাজ এবার বন্ধ করে দেওয়া হল ।
জানা গেছে ইসলামাবাদে হিন্দু মন্দির নির্মাণের আগেই বাধার মুখে পড়ে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফের জোটসঙ্গী পাকিস্তান মুসলিম লিগ -কায়েদ (পিএমএল-কিউ)র কাছ থেকে । তাদের যুক্তি, মন্দির নির্মাণ ইসলামি আদর্শের পরিপন্থী। এর ফলে পাকিস্তানের ক্যাপিটাল ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (সিডিএ) প্রস্তাবিত মন্দিরের নির্মাণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে । মন্দির তৈরির আগে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এই মন্দির তৈরির জন্য ১০ কোটি টাকার অনুদানে ছাড়পত্র দেন। মানবাধিকার সংক্রান্ত পার্লামেন্টারি সেক্রেটারি লালচাঁদ মালহির উপস্থিতিতে পাকিস্তানের রাজধানীতে প্রথম হিন্দু মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনও হয় ।
এবার ইমরান খানের দলের আপত্তিতে মন্দির নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেওয়ায় ফের পাকিস্তানের সংখ্যালঘুদের উপর বৈষম্য নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে । আন্তর্জাতিক মহলে ইতিমধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে মাত্র সপ্তাহ খানেক আগে মন্দির নির্মাণের ঘোষণা এবং ভিত্তিপ্রস্তর নির্মাণের পর বন্ধ করা আসলে ইমরান খানের একটা নাটক ছাড়া আর কিছুই নয় ।
জানা গেছে, এই মন্দির নির্মাণের পথে বাগড়া দেবার নেতৃত্ব দিয়েছেন পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের অ্যাসেম্বলির স্পিকার চৌধুরি পারভেজ ইলাহি। তাঁর দাবি, পাকিস্তান রাষ্ট্র তৈরি হয়েছিল ইসলামের নামেই। তাই সেই রাষ্ট্রের রাজধানীতে একটি নতুন মন্দির নির্মাণ ইসলামের আদর্শের পরিপন্থী। একই সঙ্গে তা রিয়াসত-ই-মদিনারও অপমান বলে দাবি করেছেন চৌধুরি পারভেজ ইলাহি। অথচ এই হিন্দু মন্দির নির্মাণ করার জন্য ২০১৬ সালে পাকিস্তান মুসলিম লিগ (এন) সরকারই ইসলামাবাদে মন্দির তৈরির জমি বরাদ্দ করেছিল।
পাক সরকারের বাঁধার মুখে পড়ে এখন কার্যত হতাশ সেখানকার সংখ্যালঘু হিন্দুরা । এই মন্দিরটি ইসলামাবাদের এইচ-৯ এলাকায় ২০ হাজার বর্গফুট জমির উপর ভগবান কৃষ্ণের নামে করার কথা ছিল । উল্লেখ্য দেশ স্বাধীন হবার পর পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে বেশ কিছু হিন্দু মন্দির ছিল । কিন্তু রক্ষনাবেক্ষন এবং গোঁড়া মুসলিমদের বিরোধিতায় সেগুলির বেশিরভাগ আজ পরিত্যক্ত ।